আওয়ার ইসলাম: দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে একটি দৃষ্টিনন্দন ভাস্কর্য স্থাপন করা হচ্ছে। ভাস্কর্যটি নির্মাণ করছেন ভাস্কর মৃণাল হক।
ভাস্কর্যটিতে দেখা যাচ্ছে একজন নারী দাঁড়িয়ে আছেন। তার ডান হাতে তলোয়ার বাম হাতে দাঁড়িপাল্লা। তলোয়ারটি নিচের দিকে নামানো। দাঁড়িপাল্লা উপরে ধারণ করে আছেন।
সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল সৈয়দ আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘ভাস্কর্যটির কাজ সম্পন্ন করতে আরো কয়েক দিন লাগবে। কাজ শেষ হলে প্রধান বিচারপতি এটির উদ্বোধন করবেন বলে আশা করছি।’
মৃণাল হক বলেন, ‘সারা বিশ্বেই এটি বিচার বিভাগের প্রতীক। তবে অন্যান্য দেশে স্থাপিত ভাস্করর সাথে আমাদের দেশের ভাস্কর্যের একটু পার্থক্য রয়েছে। অন্যান্য দেশে ভাস্কর্যের গায়ে স্কার্ফ পরা থাকলেও এখানে শাড়ি পরানো হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য দেশে পায়ের নিচে সাপ থাকলেও এখানে এটি বাদ দেয়া হয়েছে।
এই ভাস্কর্য কী বার্তা দিচ্ছে
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী গোলাম সরওয়ার পায়েল বলেন, ‘এই ধরনের একটি ভাস্কর্য ইংল্যান্ডের ওল্ড বেইলি ক্রিমিনাল কোর্ট ভাবনের সামনে স্থাপিত রয়েছে। এটি হলো গ্রিকদের ন্যায় বিচারের দেবী।’
উইকিপিডিয়া থেকে জানা যায়, রোমানদের কাছে এটি ন্যায় বিচারের দেবী। গ্রিক মিথ অনুযায়ী গ্রিক ন্যায় বিচারের দেবীর অনুরূপ। দেবীর চোখ বাধা রয়েছে। এর অর্থ হলো-একজন বিচারক পক্ষপাতিত্ব করবেন না। তার কাছে সবাই সমান। দেবীর বাম হাতে দাঁড়িপাল্লা আছে। এর অর্থ হলো- একজন বিচারক সবার মাঝে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করবেন। দেবীর ডান হাতে রয়েছে তলোয়ার। এর অর্থ হলো-অন্যায় কারীকে একজন বিচারক দণ্ড প্রদান করবেন।
গত ১২ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের এক সভায় কোনো ব্যাক্তি, প্রতিষ্ঠান বা রাজনৈতিক দলকে দাঁড়িপাল্লা ব্যবহার করতে না দিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গত ১৪ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনকে চিঠি পাঠায় সুপ্রিম কোর্ট।
সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন স্বাক্ষরিত ওই চিঠিটিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের প্রতিষ্ঠাকাল হতে দাঁড়িপাল্লা ন্যায় বিচারের প্রতীক হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের মনোগ্রামে ব্যবহার করা হয়। ফলে দাঁড়িপাল্লা অন্য কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা রাজনৈতিক সংগঠনের প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা অনাকাঙ্খিত ও অনভিপ্রেত। দাঁড়িপাল্লা ন্যায় বিচার তথা সুপ্রীম কোর্টের প্রতীক হিসেবে ব্যবহার হওয়ার পাশাপাশি যদি কোন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান রা রাজনৈতিক সংগঠনের প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা হয় তাহলে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে।’
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর দলীয় প্রতীক হলো দাঁড়িপাল্লা। তবে হাইকোর্টের এক রায়ে দলটির নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে।
সূত্র: ঢাকাটাইমস