হাওলাদার জহিরুল ইসলাম
দেওবন্দ থেকে
তাবলিগ জামাতের বিশ্ব-মারকায হলো দিল্লির 'নিজামুদ্দিন মারকায৷’ এখানের যিনি আমির বা প্রধান হন তাকেই বিশ্ব-তাবলিগের আমির বলা হয়। সে হিসেবে বর্তমানে এই গুরু দায়িত্ব পালন করছেন মাওলানা সা’দ কান্ধলভী৷
বহু দিন থেকেই তার কিছু কিছু বিষয় নিয়ে উলামা-তলাবা, আম জনতার মধ্যে প্রশ্ন দেখা দেয়৷ চরম বিতর্কের মুখে পড়েন মাওলানা সা’দ৷ কিন্তু এতে তিনি মোটেও বিচলিত নন৷ বরং একের পর এক কুরআন-সুন্নাহ, আকাবির-আসলাফের চিন্তা-চেতনাবিরোধী তার বিতর্কিত মন্তব্যের সংখ্যা বেড়েই চলে৷
বিষয়টির সুষ্ঠ সমাধানের জন্য আজহারুল হিন্দ, উপমহাদেশের শ্রেষ্ঠ দীনি বিদ্যাপীঠ, ‘দারুল উলুম দেওবন্দে’ আসতে থাকে একের পর এক চিঠি ও ইস্তেফতা৷
বিষয়টি নিয়ে দারুল উলুমদের উর্ধ্বতন শিক্ষকবৃন্দ বিশেষ আলোচানায় বসেন৷ কী করা যায়, কোন পথে সহজে সমাধানে পৌঁছা যায় সে নিয়ে ভাবেন সবাই৷ সিদ্ধান্ত হয়, যেহেতু তাবলিগ জামাত দীনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছে এবং এর সাথে সম্পৃক্তদের অধিকাংশ আমজনতা সে হিসবে আপোসে সমাধান হওয়াই কাম্য৷ উম্মতের মাঝে যেনো ফাটল না ধরে৷ যেনো বিভ্রান্তি না ছড়ায়৷
দেওবন্দ কর্তৃপক্ষ নিযামুদ্দিনে চিঠি পাঠান৷ নিযামুদ্দিনের প্রতিনিধিদের বিতর্কিত বিষয়গুলোর ব্যাপারে বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করেন৷ কিন্তু…? ফলাফল শূন্য!
শেষ চেষ্টা হিসেবে গত ২ ডিসেম্বর দারুল উলুম দেওবন্দের মুহতামিম মাওলানা আবুল কাসেম নোমানি, নদওয়াতুল উলামা'র প্রিন্সিপাল মাওলানা সাইয়্যিদ সালমান আহমদ নদভী ও দিল্লির আইম্মা পরিষদের চেয়ারম্যান, মুফতি ওয়াজাহাত কাসেমি এক যৌথ বিবৃত প্রদান করেন৷ যা ভারতের জাতীয় দৈনিকগুলো ‘তাবলিগ জামাতের আমির মৌলবি সা’দের 'কুফরি কালিমা' নিয়ে মুসলমানদের মঝে তোলপাড়’ শিরোনামে হাইলাইট করে প্রাকাশ করে৷
ওই বিবৃতিতে মারকায আমির মাওলানা সা’দ কান্ধলভীকে লিখিত আকারে তার বিতর্কিত বিষয়গুলো থেকে ফিরে আসার আহ্বান জানানো হয় এবং এও উল্লেখ করা হয়, যদি এতে তিনি (সা‘দ কান্ধলভী) নিজের অবস্থান থেকে ফিরে না আসেন তাহলে আকাবিরে উালামা যে কোনো কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবে৷
উল্লেখ্য, জাতীয় দৈনিকগুলোতে কুফরি কালিমা বলতে মাওলানা সা’দের একটি মন্তব্যের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছিলো৷ মন্তব্যটি হলে- তিনি বলেন, ‘পুরো দুনিয়ার অবস্থা হলো এই, মক্কা মদীনার পর সম্মান, আজমত, আনুগত্য, অনুসরণযোগ্য যদি কোনো জায়গা থাকে তাহলে সে জায়গা হলো দিল্লির নিযামুদ্দিন মারকায এবং আপনাদের কাছে অনুরোধ থাকবে ছোট বা বড় দীনের যে কোনো মাসআলা কেবল মারকাযেই রিপোর্ট করবেন৷’
ওই বিবৃতি প্রকাশের ৩ দিনের মাথায়ও সন্তোষজনক কোনো জবাব না আসায় দেওবন্দের শীর্ষ আলেমগণ গতকাল সন্ধ্যায় উল্লেখিত বিশেষ নোটিশটি দারুল উলুমের নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে৷ পরে জাতীয় দৈনিকগুলোতেও প্রথম পাতায় ছাপা হয়৷
যে কারণে এই ফতোয়া
মাওলানা সাআদ কান্দলভী’র প্রশ্নবিদ্ধ কয়েকটি মন্তব্য (দেওবন্দ যার সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছে৷
১৷ হজরত মুসা (আলাইহিস সালাম) নিজ কওম এবং জামাতকে ছেড়ে দিয়ে আল্লাহর সঙ্গে কথা বলতে চলে গিয়েছিলেন৷ যার ফলে বনি ইসরাঈলের ৫ লাখ ৮৮ হাজার মানুষ পথভ্রষ্ট হয়ে গেছে৷ তিনি তো আসল (আমির) ছিলেন৷ তিনিই যিম্মাদার ছিলেন৷ আসল (আমির) কেই উপস্থিত থাকা চাই৷ হারুন (আলাইহিস সালাম) তো ছিলেন তাঁর নায়েব৷
২৷ বর্তমানে মানুষ তওবার ৩ টি শর্ত মনে রেখেছে৷ ৪র্থ শর্ত আজ সবাই ভুলগেছে৷ তা হলো 'খুরুজ' (তাবলিগের কাজে বের হওয়া৷)
৯৯টি হত্যাকারীর যখন এক পাদ্রীর সঙ্গে সাক্ষাত হলো তখন তিনি তাকে নিরাশ করেন৷ পরে এক আলেমের সঙ্গে দেখা হলে তিনি তাকে বলেছিলেন, ওমুক গ্রামের (আলেমের খোঁজে) দিকে বের হয়ে যাও৷ তো সে যখন সে দিকে বের হয়ে গেলো তখন আল্লাহ পাক তার তওবা কবুল করলেন৷ এর থেকে বুঝা যায় তওবা কবুল হওয়ার জন্য 'খুরুজ' শর্ত৷ এ ছাড়া কারো তওবা কবুল হবে না৷ এই শর্তটি মানুষ ভুলে গেছে৷
৩৷ হেদায়েতের জায়গা একমাত্র মসজিদ৷ যে প্রতিষ্ঠানগুলোতে দ্বীনি শিক্ষা দেয়া হয় আল্লাহর কসম সেগুলোর যদি মসজিদের সাথে সম্পর্ক না থাকে তাহলে সেখানেও দ্বীন নেই৷ দ্বীনি শিক্ষা হবে কিন্তু দ্বীন হবে না৷
৪৷ পারিশ্রমিক নিয়ে ধর্মীয় শিক্ষা দেয়া মানে ধর্মের সাথে ঠাট্টা করা৷ যিনা-ব্যভিচারকারীরা কুরাআন শিক্ষা দিয়ে বেতন গ্রহণকারীদের আগে জান্নাতে প্রবেশ করবে৷
৫৷ আমার মতে, ‘ক্যামেরা বিশিষ্ট মোবাইল' পকেটে রেখে নামাজ হয় না৷ তোমরা যতো মুফতির ফতোয়াই সংগ্রহ করোনা কেনো মোবাইল থেকে কুরআন শোনা, কুরআন পড়া-কুরআনকে অপমান করা হয়৷ এতে তোমাদের গোনাহ হবে৷ কোনো সাওয়াব মিলবে না৷
যেসব উলামা এ ব্যাপারে (মোবাইল থেকে কুরআন পড়া, শোনা) বৈধতার ফতোয়া দেয় তারা উলামায়ে সূ, উলামায়ে সূ৷
তাদের অন্তর ও মগজ ইহুদি-খ্রিস্টানদের দ্বারা প্রভাবিত৷ তারা সম্পূর্ণ জাহেল উলামা৷ আমার মতে তাদের অন্তরে আল্লাহর কালামের কোনো মুহাব্বত নেই৷ আমি এ কথা এজন্য বলছি যে, আমার থেকে বড় এক আলেম বলেছে, ‘এতে কোনো সমস্যা নেই৷’ আমি বলেছি, সে আলেমের হৃদয়ে কুরআনের বিন্দু মাত্র ভালোবাসা নেই৷ যদিও তার পুরো বুখারি শরিফ মুখস্ত থাকুক না কেনো৷ বুখারি তো কতো অমুসলিমেরও মুখস্ত থাকে৷
৬৷ প্রত্যেক মুসলমানের ওপর কুরআনকে বুঝে পড়া ওয়াজিব, ওয়াজিব, ওয়াজিব৷ যে ব্যক্তি এ ওয়াজিব ত্যাগ করবে তার ‘ওয়াজিব তরকে’র গোনাহ হবে৷
৭৷ আশ্চর্য! আমাকে জিজ্ঞেস করা হয় ‘আপনার এসলাহি সম্পর্ক কার সাথে?’ তারা কেনো এটা বলে না, আমার সম্পর্ক এই কাজের সাথে, দাওয়াত (ও তাবলিগে)-এর সাথে! আমি ওই ব্যক্তিদের নিয়ে বড়ই চিন্তিত যারা বলে, তাবলিগের ‘ছয় নম্বর’ পুরো দ্বীন নয়!
ওপরের বিষয়গুলো ছাড়াও এমন আরো কিছু বয়ান হস্তগত হয়েছে যার থেকে স্পষ্ট বুঝা যায়, দাওয়াত ও তাবলিগের বিশদ 'মাফহুমের' মধ্যে কেবল বর্তমান তাবলিগ জামাতের নেযামই অন্তর্ভুক্ত৷ তিনি এই বিশেষ পদ্ধতিকেই সুন্নত ও আম্বিয়া, সাহবাদের দাওয়াতি পদ্ধতি মনে করেন এবং এই পদ্ধতিকে হুবহু নবী ও সাহাবাদের দাওয়াতি কাজের মেসদাক বলে বর্ণনা করেন৷
অথচ জুমহুর উম্মতের ঐক্যমত্য হলো, দাওয়াত একটি ব্যাপক বিষয়৷ ইসলামে দাওয়াত ও তাবলিগের(নির্দিষ্ট) বিশেষ কোনো পদ্ধতি অত্যাবশ্যক করে দেয়া হয় নি যে ওই বিশেষ পদ্ধতি অনুসরণ না করা হলে সুন্নত ত্যাগ করার গোনাহ হবে৷
বিভন্ন যুগে দাওয়াতের বিভিন্ন পদ্ধতি ছিলো৷ কোনো যুগেই একটি পদ্ধতি লাযেম করা হয়নি৷ আম্বিয়ায়ে কেরাম, সাহাবা, তাবেয়ীন, তাবে তাবেয়ীন, আইম্মায়ে মুজতাহিদিন, ফুকাহা, সুলাহা, নিকট অতীতে আমাদের আকাবিরে দেওবন্দ দাওয়াত ও তাবলিগের বিভিন্ন পদ্ধতি অনুসরণ করেছেন৷
সংক্ষিপ্ততার কারণে অল্প কিছু বিষয় আলোচনা করা হলো৷ এর বাইরেও তার অনেক বিষয় আমাদের কাছে পৌঁছেছে৷ যেগুলো সংখ্যাগরিষ্ঠ উলামাদের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি মতাদর্শ বহন করে৷ আর সেগুলো যে পুরোই ভ্রান্ত এতে কোনো সন্দেহ নেই৷
ফতোয়া প্রকাশের আগে দেওবন্দের পক্ষ থেকে কয়েকবার চিঠির মাধ্যমে 'বাঙলাওয়ালী মসজিদে'র প্রতিনিধিদের প্রশ্নবিদ্ধ বিষয়গুলো নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে৷ কিন্তু আজও পর্যন্ত সে সব চিঠির কোনো জবাব আসেনি৷
নোটিশে বলা হয়, তাবলিগি জামাত একটি মুবারক জামাত৷ যা জুমহুরে উম্মত ও আকাবিরদের অমুসৃত পথ-পদ্ধতি থেকে সরে গিয়ে সংরক্ষিত থাকতে পারবে না৷ আম্বিয়া (আলাইহিস সালাম) দের শানে বেয়াদবি, চিন্তার পদস্খলন, তাফসির বির রায়, আহাদিস ও আসারে'র মনগড়া ব্যাখ্যার সাথে হকপন্থী উলামায়ে কেরাম কোনোভাবেই একমত হতে পারেন না এবং এ বিষয়ে তারা চুপও থাকতে পারেন না৷
কেননা, ওই ধরনের ধ্যান-ধারণা পরবর্তীতে একটি ভিন্ন মতাদর্শ প্রতিষ্ঠা করে পুরো জামাতকে হক ও সত্য থেকে দূরে ঠেলে দেবে৷ এ জন্য সার্বিক বিবেচনায় উম্মতে মুসলিমা বিশেষত তাবলিগি বন্ধুদের এ বিষয়টি জানানো আমাদের দায়িত্ব বলে মনে করি যে, মাওলানা সা’দ নিজের স্বল্প জ্ঞানের ফলে জুমহুর আকাবিরে উম্মতের পথ থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন৷ যা স্পষ্ট পথভ্রষ্টতা৷
এ জন্য এ সব বিষয়ে নিরব থাকা যাচ্ছে না৷ কেনোনা, এগুলো যদিও এক ব্যক্তির মতাদর্শ বা চিন্তা-চেতনা কিন্তু খুব দ্রুত এগুলো আম-মুসলমানদের মাঝে বিস্তার লাভ করছে৷
জামাতের মধ্যে, গুরুত্বপূর্ণ, প্রভাব বিস্তারকারী, মুতাদিল মেজাজের যিম্মাদারদেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই যে, আকাবির কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত এই জামাতকে পূর্ববর্তী আকাবিরে উম্মতের মতাদর্শ ও পথ-পদ্ধতির ওপর প্রতিষ্ঠিত রাখার চেষ্টা করুন৷
এবং মাওলানা সাআদ সাহেবের যে ভ্রান্ত চিন্তা-ফিকির, ধ্যান-ধারাণা সাধারণ মুসলমানদের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে সেগুলোর পূর্ণ সংশোধনের চেষ্টা করুন৷ যদি এ ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত না নেয়া হয় তাহলে অদূর ভবিষ্যতে তাবলিগের সাথে সম্পৃক্তি উম্মতের একটি অংশ পথভ্রষ্ট হয়ে একটি ভ্রান্ত ফেরকার রুপ লাভ করবে৷
আমাদের প্রার্থনা হলো, রাব্বুল আলামিন যেনো তাবলিগজামাতের হেফাজত করেন৷ সঙ্গে সঙ্গে আকাবিরের পথে একনিষ্ঠভাবে জারি ও প্রবহমান রাখেন৷ আমিন৷ সুম্মা আমিন৷
বি. দ্র. আগেও এধরনের অগ্রহণযোগ্য কথাবার্তা তাবলিগজামাতের কিছু লোকের থেকে প্রকাশ পেয়েছিলো৷ সেকালে উলামায়ে দেওবন্দ, যেমন হজরত শাইখুল ইসলাম মাওলানা হুসাইন আহমদ মাদানি রহ. ও অন্যান্যরা তাদের সতর্ক করেন৷
তারা থেমে গেছেন৷ কিন্তু এখন স্বয়ং দায়িত্বশীলই এধরনের, বরং এরচেও বড়ধরনের কথাবার্তা (যেমনি উপরোল্লিখিত আলোচনায় স্পষ্ট) বয়ানে উল্লেখ করছেন, তাকে সতর্কও করানো হচ্ছে, কিন্তু তিনি ভ্রুক্ষেপই করছেন না৷ ফলে সাধারণকে এধরনের ফেৎনা থেকে রক্ষা করতে এই সিদ্ধান্ত ও ফতোয়ার সত্যায়ন করা হলো৷
প্রকাশিত ফতোয়ায় স্বাক্ষর করেন দেওবন্দের শীর্ষ আলেমগণ…
১৷ মুফতি হাবিবুর রহমান খায়রাবাদি৷ মুফতিয়ে আজম, দারুল উলুম দেওবন্দ৷
২৷ মাওলানা আবুল কাসেম নোমানি৷ মুহতামিম, দারুল উলুম দেওবন্দ৷
৩৷ মুফতি সাঈদ আহমদ পালনপুরী৷ সদরুল মুদাররিসীন দারুল উলুম দেওবন্দ৷
৪৷ মাওলানা আবদুল খালেক সাম্ভলী৷ নায়েবে মুহতামিম দারুল উলুম দেওবন্দ৷
৫৷ মাওলানা আবদুল খালেক মাদরাজী, নায়েবে মুহতামিম দারুল উলুম দেওবন্দ৷
৬৷ মাওলানা নেয়ামত উল্লাহ আজমি৷ সিনিয়র মুহাদ্দিস, দারুল উলুম দেওবন্দ৷
৭৷ মাওলানা হাবিবুর রহমান আজমি৷ সিনিয়র মুহাদ্দিস, দারুল উলুম দেওবন্দ৷
৮৷ মুফতি জাইনুল ইসলাম৷ দারুল ইফতা৷ দারুল উলুম দেওবন্দ৷
৯৷ মুফতি আসাদুল্লাহ৷ দারুল ইফতা৷ দারুল উলুম দেওবন্দ৷
১০৷ মুফতি নোমান সিতাপুরী৷ দারুল ইফতা৷ দারুল উলুম দেওবন্দ৷
১১৷ সাইয়্যিদ কারী উসমান৷ ১২৷ মুফতি ওকার৷ ১৩৷ মুফতি মুসআব৷ ১৩৷ মুফতি মাহমুদ হাসান বুলন্দ শহরি৷
আরআর