আওয়ার ইসলাম : প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা স্কুল থাকবে। তবে প্রতিটি স্কুলেই যেন তারা ভর্তি হতে পারে, তা নিশ্চিত করার তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেছেন, সরকার এরই মধ্যে এই নির্দেশনা পৌঁছে দিয়েছে।
আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবসে প্রতিবন্ধী মেলার উদ্বোধন করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। সাত দিনের এই মেলা হচ্ছে মিরপুর ১৪ নম্বরের প্রতিবন্ধী উন্নয়ন কেন্দ্রে। তবে প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠান করেন ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে। তিনি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ওই অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। পরে সেখান থেকেই প্রতিবন্ধীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সব ক্ষেত্রে তাদের জন্য বিশেষ স্কুল করা যাবে না, সাধারণ ছেলেমেয়েদের সঙ্গে যেন তারা পড়তে পারে, সেই ব্যবস্থা সব স্কুলে থাকতে হবে। অন্তত সরকারি স্কুলে তো অবশ্যই।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যদি প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা স্কুল করি, তাহলে কিন্তু তারা সুস্থ হবে না। তারা প্রতিবন্ধীই থেকে যাবে। কিন্তু সুস্থ ছেলেমেয়েদের সঙ্গে যখন তারা মিশতে থাকবে তখন আস্তে আস্তে তারাও সুস্থ হয়ে যাবে।’
যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন স্কুলে নিজের পরিদর্শনের অভিজ্ঞতাও জানান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘আমি দেখেছি, এমন প্রতিবন্ধী যে একেবারে হুইল চেয়ারে বসা, বা শোয়া অবস্থায় আছে। স্কুলের বাচ্চারাই তাদেরকে সাহায্য করছে, ঢেলে স্কুলে নিয়ে যাচ্ছে। অনেকেই আছে কিছু শুনতে পারে না, দেখতে পারে না, বুঝতেও পারে না। কিন্তু তাদেরকেও স্কুলে নিয়ে যাচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্কুলের বাচ্চারা এই বাচ্চাদের ঠেলে নিয়ে যাচ্ছে, কেউ হুইল চেয়ার ঠেলে নিয়ে যাচ্ছে আবার তাদেরকে বের করে আনছে। সব রকম সাহায্য ক্লাসফ্রেন্ডরা তারাই করছে। এতে একটা সম্পর্ক ভালো হচ্ছে। আবার যাদের আস্তে আস্তে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা আছে তারা তারা সুস্থ হচ্ছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘সব ক্ষেত্রেই এভাবে চিন্তা করতে হবে। সব জায়গায় আলাদা স্কুল করা উচিত না। আলাদা স্কুল করলে সামান্য প্রতিবন্ধীরা আরও বেশি প্রতিবন্ধীদেরকে দেখে দেখে আরও প্রতিবন্ধী হবে। সুস্থ হওয়ার সুযোগ থাকবে না।’
কেউ উচ্ছা করে প্রতিবন্ধী হয় না জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে হবে, আন্তরিক হতে হবে, তাদেরকে সহযোগিতা করতে হবে। তাদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে।’
তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা স্কুলও থাকবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সেটা করে দিচ্ছি। তবে সাধারণভাবে আমরা নির্দেশ দিয়েছি, প্রতিবন্ধীরাও সাধারণ স্কুলে ভর্তি হতে পারবে। সে সুযোগটাও তাদের জন্য রাখতে হবে। সব ছাত্র-অভিভাবক সবাইকেই আন্তরিক থাকতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ছোটবেলায় আদর্শলিপিতে পড়েছি, কানাকে কানা বলিও না, খোঁড়াকে খোঁড়া বলিও না। সেই শিক্ষাটা এখন দেয়া হয় না। কিন্তু আমি মনে করি প্রত্যেকটা সুস্থ বাচ্চাকে চিন্তা করতে হবে বিষয়টা।’