আওয়ার ইসলাম: ভারতের কেরালা রাজ্যের মালাপ্পুরমে ফয়সাল(৩২) নামে এক যুবককে হত্যা করার অভিযোগে হিন্দুত্ববাদী বিজেপি ও আরএসএসের আট কর্মী গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আজ (সোমবার) গণমাধ্যমে প্রকাশ, ফয়সাল ওরফে অনিল কুমার ছয় মাস আগে সৌদি আরবে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। সেখানে তিনি গাড়ি চালকের কাজ করতেন। পরবর্তীতে তার স্ত্রী এবং তিন সন্তানও ইসলাম গ্রহণ করেন।
গত ১৯ নভেম্বর তার লাশ একটি নালা থেকে উদ্ধার হয়। তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ। ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার কারণে ফয়সাল তার আত্মীয় এবং প্রতিবেশীদের কাছ থেকে হুমকি পাচ্ছিলেন। এ ব্যাপারে তার আতীয়রা আরএসএস নেতাদের সাহায্য চায় যারা হত্যার ষড়যন্ত্র করে।
এক মাস আগে হত্যার হুমকি পাওয়ার পরে স্থানীয় ইমাম সাহেব তাকে নিরাপত্তার ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়ে সম্প্রদায়ের সাহায্য নেয়ার কথা বলেন। ফয়সাল অবশ্য সেই পরামর্শ নাকচ করে দিয়ে বলেছিলেন, ‘ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার পরে সব কিছু আল্লাহর ওপরই ছেড়ে দিয়েছি। যদি ওরা আমাকে হত্যা করতে চায় তাহলে করতে দিন।’
মালাপুরমের ডিএসপি প্রদীপ কুমার জানান, ওই হত্যার ঘটনায় তার এক আত্মীয়ও জড়িত রয়েছে।
একটি সূত্রে প্রকাশ, ফয়সাল একের পর এক নিজের পরিবারের সদস্যদের ইসলাম ধর্মে পরিবর্তিত করছিলেন। অন্যদেরকেও তিনি ধর্ম পরিবর্তন করাতে পারেন বলে আশঙ্কা ছিল। এ কারণেই হত্যা করা হয়েছে।
স্থানীয়দের মতে, ফয়সালকে শুধু ইসলাম ধর্ম গ্রহণের জন্য নয় বরং অন্যদেরকেও ইসলামে দাওয়াত দেয়ার জন্য হত্যা করা হয়েছে।
মালাপ্পুরমের কোডিনহির বাসিন্দা নিহত ফয়সালকে গত ১৯ নভেম্বর এক নর্দমার মধ্যে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তিনি সৌদি আরবে ৬ বছর ধরে গাড়ি চালকের কাজ করছিলেন। ফয়সাল জানতেন ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার জন্য কিছু মানুষ তাকে হত্যা করতে চাচ্ছে। কিন্তু তিনি বলেছিলেন, ‘আমি আল্লাহর ওপরই ভরসা করি, যদি ওরা আমাকে হত্যা করতে চায় তাহলে করতে দিন।’
পুলিশ বলছে, ফয়সালই শুধু নন, তার পরিবারে এক বছর আগে তার চাচা, তার স্ত্রী এবং কন্যাও ইসলাম গ্রহণ করেছে। ইসলাম গ্রহণের আগে তিনি উচ্চবর্ণের হিন্দু নায়ার সম্প্রদায়ের মানুষ ছিলেন। গত আগস্টে তিনি যখন বাসায় ফেরন তখন তার স্ত্রী প্রিয়া ও তাদের তিন সন্তানকে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত করেন। তিনি তার মা মীনাক্ষিকে ধর্ম পরিবর্তন করাতে চেয়েছিলেন।
ফয়সাল নিহত হওয়ার পরে তার মা মীনাক্ষী দেবী বলেন, ‘আমাদের পরিবারে আগেও কয়েকজন ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। কিন্তু জানি না আমার ছেলেকে কেন নিশানা বানানো হলো।’
ফয়সালের বাবা অনন্তম নায়ার বলেন, ‘ও নিজের ইচ্ছাতেই মুসলিম হয়েছিল। তাকে কেউ জোর করেনি। এটা তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত ছিল কিন্তু তাকে বাঁচতে দেয়া হল না।
সূত্র: পার্স টুডে
এফএফ