মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী
সহকারী সম্পাদক, দৈনিক ইনকিলাব
১৯৬৮ সালে মাওলানা আতহার আলী রহ. প্রথম বাংলাদেশে বেফাক গঠনের উদ্যোগ নেন। ইউসুফ বিন নুরী রহ.কে দাওয়াত করে এনে জামিয়া ইমদাদিয়া কিশোরগঞ্জে এ সকল বিষয়ের অবতারণা করেন।
স্বাধীনতার পর ১৯৭৮ সালে দেশের অধিকাংশ শীর্ষওলামায়ে কেরামের সম্মিলিত উদ্যোগে গঠিত হয় বেফাকুল মাদারিস। এই বেফাকের শিক্ষাসনদের সরকারি স্বীকৃতি বিএনপি সরকার দিতে চাইল, কিন্তু বাধা দিল জামায়াত। জামায়াত বেগম জিয়াকে বুঝিয়েছিল রাজনৈতিকভাবে আমরা আছি, হুজুরদের কী প্রয়োজন?
তখন শাইখুল হাদীস রহ. বিরাট আন্দোলন করলেন। এখন দেখার বিষয় হলো, শাইখুল হাদীস আন্দোলন করলেন কেন? আর এখন তার ছেলেরা না করেন কেন? অন্য আরেকটি প্রশ্ন হলো, রাতের আঁধারে যদি কেউ স্বীকৃতি নেয় তখন আমরা কী করব?
আমি মনে করি- স্বীকৃতি হলো তিন প্রকার। এক. মাদরাসাটি অবৈধ নয়। এটি সরকার ভাঙবে না। আইনগত বৈধতার স্বীকৃতি। এটি আমরা চাই এবং এর জন্য আমরা মরতে প্রস্তুত।
দুই. সনদের স্বীকৃতি শাইখুল হাদীস ও সমস্ত উলামায়ে কেরামের ফর্মূলার আলোকে। এতে কারো নিষেধ নাই। আর তা হলো- আমরা দাওরার যে সনদ অর্জন করছি তাকে আপনারা (সরকার) বলে দেন, এটি ইসলামিক এমএ’র সমমান। এটি অর্জনের জন্য একাডেমিক কাউন্সিল করা যেতে পারে। প্রয়োজনে এমএ’র যে পরীক্ষা হবে, সেই সিলেবাস বা ফরম আমাদের দেয়া হোক, এই পরীক্ষায় আমাদের ছাত্ররা পাশ করতে পারলেই কেবল তারা এমএ’র সমমান হবে। অন্যথায় নয়। এর জন্য প্রয়োজনে টেস্ট পরীক্ষা দিয়ে আমাদের ছাত্ররা অংশ নিবে।
তিন. ‘কর্তৃপক্ষ’র কাছ থেকে নেয়া স্বীকৃতি। এই স্বীকৃতি আমরা চাই না। এতে কওমি মাদরাসার স্বকীয়তা পরিপূর্ণভাবে সরকারের হাতে চলে যাওয়ার ব্যবস্থা। আমরা যে বলি দেওবন্দের আদলে স্বীকৃতি চাই, এটার ব্যাখ্যা প্রয়োজন। কারণ দেওবন্দের সনদ সব জায়গায় স্বীকৃত না। তাছাড়া দেওবন্দের সনদ দিয়ে ‘এমএ’তে ভর্তি হওয়া যায়। তার মানে ওই সনদের মান হলো ‘বিএ’। আর আমরা চাচ্ছি এমএ’র মান। তাই দেওবন্দের মতো চাই শুধু বললেই হবে না। এর ব্যাখ্যা দিতে হবে। এখন সরকার এবং বিশ্বপলিসি যদি আমাদের স্বীকৃতি দিয়েই দিতে চায়, তাহলে আমাদের বসে থাকলে হবে না। না হয় ট্রেন মিস করতে হবে। তাই আমরা নেব কি না, এ বিষয়ে আলাদা গোলটেবিল হতে পারে। আলোচনা প্রয়োজন। পরস্পরে মতবিনিময় করেই আমাদেরকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
সম্প্রতি জামিয়া রাহমানিয়ায় মাসিক রাহমানী পয়গাম আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে’র কথোপকথনে মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী গুরুত্বপূর্ণ এ মতামত পেশ করেন।
এইচএ