আওয়ার ইসলাম: বিশ্বের সর্ববৃহৎ ডায়ালাইসিস ইউনিটটি স্থাপিত হতে যাচ্ছে রাজধানীর ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে। দেশের হাজার হাজার কিডনি বিকল রোগীদের স্বল্প খরচে ডায়ালাইসিসের সুযোগ করে দিতে ১শ’ টি মেশিন স্থাপনের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারী মাস থেকেই ডায়ালাইসিস ইউনিটটি চালুর আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
সোমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের এ ডায়ালাইসিস ইউনিটটি শুধু দেশেই নয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় কিডনি ডায়ালাইসিস ইউনিট হবে। কিডনি রোগীরা খুবই কম খরচে এ ডায়ালাইসিস ইউনিটে ডায়ালাইসিস করানোর সুযোগ পাবেন। প্রতি সেশনে ডায়ালাইসিসের জন্য মাত্র ১ হাজার টাকা পরিশোধ করতে হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইতোমধ্যে হাসপাতালে কিডনি ডায়ালাইসিস ইউনিট স্থাপনের কাজ শুরু হয়ে গেছে। জার্মানি থেকে আমদানি করে উন্নতমানের ডায়ালাইসিস মেশিন আনা হচ্ছে।
ডা. চৌধুরী বলেন, আমেরিকান একজন কিডনি বিশেষজ্ঞ আজ হাসপাতালে প্রক্রিয়াধীন ডায়ালাইসিস ইউনিট স্থাপনের কার্যক্রম পরিদর্শন করবেন।
তিনি জানান, বৃহৎ এ হাসপাতালের একজন কিডনি বিশেষজ্ঞকে ৫ লাখ টাকা বেতনে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। প্রশিক্ষিত নার্সদেরকে মাসিক ২০ হাজার টাকা বেতনে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। সর্বোপরি দক্ষ জনবল দিয়ে এ ডায়ালাইসিস ইউনিটটি পরিচালিত হবে বলে তিনি জানান।
কিডনি বিশেষজ্ঞদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, বাংলাদেশে প্রায় দুই কোটি লোক কোনো না কোনো কিডনি রোগে আক্রান্ত। কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতি ঘণ্টায় মারা যাচ্ছেন পাঁচজন লোক। সাধারণত ৭৫ ভাগ কিডনি নষ্ট হওয়ার আগে রোগী বুঝতেই পারেন না যে, তিনি ঘাতক ব্যধিতে আক্রান্ত।
কিডনি যখন বিকল হয়ে যায় তখন বেঁচে থাকার একমাত্র উপায় ডায়ালাইসিস অথবা কিডনি সংযোজন। কিন্তু সরকারি কিম্বা বেসরকারি পর্যায়ে এখনও কিডনি ডায়ালাইসিসের সুবিধা খুবই অপ্রতুল। সরকারি হাসপাতালে তুলনামূলকভাবে খরচ অল্প হলেও মেশিনের সংখ্যা খুবই অপ্রতুল বিধায় শত শত রোগী সিরিয়াল দিয়ে অপেক্ষায় থাকেন।
ফলে অধিকাংশ দরিদ্র রোগী ডায়ালাইসিস করতে না পেরে বিনা চিকিৎসায় মারা যায়। বেসরকারি পর্যায়ে বেশ কিছু ডায়ালাইসিস ইউনিট স্থাপিত হলেও এগুলোতে প্রতিবারের জন্য সর্বনিম্ন আড়াই হাজার থেকে আট দশ হাজার পর্যন্ত খরচ হয়।
ডা. চৌধুরী বলেন, গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে ধনী দরিদ্র নির্বিশেষে তুলনামূলক কম খরচে চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হয়। কিডনি ইউনিটটি চালু হলে তা কিডনি রোগীদের ভোগান্তি লাঘবে সহায়তা করবে বলে তিনি দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এবিআর