আওয়ার ইসলাম: ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের চেয়ারম্যান ড. মাওলানা ঈসা শাহেদী বলেছেন, বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষাসনদের স্বীকৃতি আমরা চাইলে সরকার দেবে। আর সরকার স্বীকৃতি দিতে গেলে কিছু নীতিমালা অবশ্যই প্রয়োগ করবে। তখন সেই নীতিমালার আলোকে আমাদের চলতে হবে। আমার কাছে মনে হচ্ছে, সরকার এবং সরকারের পেছনে আন্তর্জাতিক যে মহল রয়েছে, তারা স্বীকৃতি যেভাবেই হোক দিতে চাচ্ছেন। তারা মনে করছে, এর মাধ্যমে কওমিদের আয়ত্বে আনতে পারলে তারা আর ছুটতে পারবে না। তার মানে বিষয়টি অনেক জটিল।
তিনি বলেন, এই সময়ে আমরা আলিয়া মাদরাসার প্রতি একটু নজর দিতে পারি। আলিয়া মাদরাসা সরকারের হাতে ন্যস্ত হওয়ার পর বর্তমানে এর অবস্থা কী? সরকার আলিয়া মাদরাসাকে যেকোনো সময় স্কুল-কলেজে রূপান্তর করতে চাইলে বাধা দেয়ার কাউকে পাওয়া যায় না। তেমনিভাবে সরকার চাচ্ছে কওমি মাদরাসাকেও নিয়ন্ত্রণে আনতে। ফলে যেভাবেই হোক যেকোনো শর্তে তারা স্বীকৃতি দিতে রাজি। তাই যারা কওমি মাদরাসা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করেন, তাদের কওমি শিক্ষার্থী এবং সংশ্লিষ্ট সকলের সামনে অতীত ইতিহাস তুলে ধরতে হবে। অন্যথায় শিক্ষার্থীরা মনে করবে আমাদের হুজুররা অনর্থক এই স্বীকৃতির বিরোধিতা করছেন। তাই লেখালেখি, বক্তৃতার মাধ্যমে এই বিষয়টা নিজেদের মাঝে স্পষ্ট করে তুলতে হবে।
মাওলানা ঈসা শাহেদী বলেন, জাতীয় শিক্ষানীতি এবং শিক্ষাআইন পড়ে দেখেছি অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সবার জন্য প্রাইমারি শিক্ষা বাধ্যতামূলক। সেখানে জেনারেল ছয়টি বিষয়েও শিক্ষা বাধ্যতামূলক। সেই শিক্ষা প্রথমে নিতে হবে। তারপর মাদরাসা ইত্যাদিতে ভর্তি হতে পারবে। দ্বিতীয়ত- সরকারি শিক্ষা সিলেবাসের বাইরে কোনো বই পড়ানো হলে জেল-জরিমানা দেয়া হবে। এমনিভাবে অনুমোদন ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা করলেও জেল-জরিমানা হবে। তার মানে এই শিক্ষানীতি পাশ হলে সরকার আইন করে কওমি মাদরাসা বন্ধ করে দেবে। তাই প্রথমে শিক্ষানীতি নিয়ে আন্দোলন করা উচিত। বাইরের শত্রুদের চিহ্ণিত করে সামনে এগুতে হবে। এদিকে, আমাদের ছেলেদের কেউ কেউ যদি সরকারি সনদের জন্য পাগল হয়ে যায়, তাদের জন্য আলিয়া খোলা আছে, সেখানে যেতে পারে। প্রয়োজনে কওমি মাদরাসার সংখ্যা কমিয়ে হলেও এর স্বাতন্ত্র্যবোধ বজায় রাখতে হবে। আলিয়ার মতো কওমিকে সরকারের হাতে তুলে দেয়া যাবে না।
সূত্র : রাহমানী পয়গামের কওমি সনদের স্বীকৃতি বিষয়ক গোলটেবিলের আলোচনা থেকে
এইচএ