মুফতী আব্দুল্লাহ বিন রফিক:
সব মায়েদের কমবেশি এই মাসআলার প্রয়োজন হয়। অনেকেই দ্বিধা-দ্বন্দে ভোগেন, উযু ভাঙবে কি ভাঙবে না! তাই জীবনঘনিষ্ট এই জিজ্ঞাসা নিয়ে আজ কথা বলবো। ইসলামী আইন ও ফিকাহ শাস্ত্র মতে দুধ খাওয়ালে নারীদের অজু ভাঙে না।
কারণ এটি অজু ভঙ্গের কার্য ও কারণের আওতাভূক্ত নয়।অযূ নষ্ট হওয়ার যে কারণগুলো ইসলামি আইন ও ফিকাহ শাস্ত্রে উল্লেখ আছে তা হলো,
১.পেশাব-পায়খানা করা বা বায়ু নির্গত হওয়া। ২.শরীর থেকে রক্ত,পুঁজ বা পানি জাতীয় নাপাক কিছু বের হয়ে গড়িয়ে পড়া। ৩.চিৎ,কাত বা হেলান দিয়ে ঘুম যাওয়া। ৪. মুখ ভরে বমি করা। ৫. নামাজে শব্দ করে হাসা। ৬. পাগল, মাতাল ও বেহুশ হওয়া।
এর ভেতরে শিশুকে মায়ের বুকের দুধ খাওয়ালে অজু ভাঙবে তা বলা হয়নি। তাহলে অজু ভাঙবে কেন?
অবশ্য কেউ বলতে পারেন, শরীর থেকে রক্ত পুঁজ বা এ জাতীয় কিছু বের হলে তো অজু ভেঙে যায়। দুধও তো রক্ত ও পুঁজের মতোই। তাই দুধ খাওয়ালেও অজু নষ্ট হওয়ার কথা। এখানে আমাদের মনে রাখতে হবে, ফিকহ বা মাসআলার গ্রন্থগুলোতে বলা হয়েছে, শরীরের থেকে রক্ত বা পুঁজ জাতীয় নাপাক কিছু বের হয়ে গড়িয়ে পড়লে অজু ভেঙে যাবে।
মায়ের বুকের দুধ কি রক্ত বা পুঁজের মতো নাপাক? আদৗ না। দুধ শিশুর জন্য এক পবিত্র আহার্য। শিশুর পক্ষে তা আল্লাহর এক অপার নেয়ামত ও অসীম করুণা ছাড়া আর কী-ই বা বলা যেতে পারে! সুতরাং ফুকাহায়ে কিরামের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলো, শিশুকে মায়ের বুকের দুধ খাওয়ালে অজু ভাঙবে না। তাই নারীদের এ বিষয়ে চিন্তিত হওয়ার তেমন কোনো কারণ নেই।
সূত্র: ফিকাহ বিশ্বকোষ ১৭/১১১