শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


সরকারি চাকুরির ক্ষেত্রে দেওবন্দের সনদের মূল্যায়ন নেই : দেওবন্দের মাওলানা সালমান বিজনুরী

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

biznuriআওয়ার ইসলাম: গত প্রায় দুই মাস ধরে বাংলাদেশের কওমি অঙ্গনে প্রধান আলোচ্যবিষয় কওমি শিক্ষাসনদের স্বীকৃতি। গত এক দশক ধরে বিষয়টি আলোচনায় থাকলেও মাস দুয়েক আগে একটি অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কওমি সনদের স্বীকৃতির বিষয়টি নিয়ে কথা বললে এটি আলোচনার শীর্ষে উঠে আসে। এরপরের ঘটনাবহুল সময়ে অনেক সম্মেলন ও বৈঠক হয়ে গেলেও স্বীকৃতির বিষয়ে একটি ঐক্যমত্যে আসা সম্ভব হয়নি এখনো।

স্বীকৃতি নিয়ে দেশের পরিস্থিতি যখন এই,  বিষয়টি নিয়ে আওয়ার ইসলাম কথা বলেছে উপমহাদেশে ইসলামি শিক্ষার সূতিকাগার ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দের কয়েকজন প্রবীণ, অভিজ্ঞ, ওলামায়ে কেরামের অভিভাবকতুল্য শিক্ষকের সাথে। ধারবাহিকভাবে কয়েকটি পর্বে আমরা তাদের মতামত পাঠকের সামনে তুলে ধরবো। আওয়ার ইসলামের পক্ষ থেকে কথা বলেছেন, দারুল উলুম দেওবন্দের শিক্ষার্থী হাওলাদার জহিরুল ইসলাম।

পরিকল্পনা ও সম্পাদনা, মাওলানা সাইফুল ইসলাম রিয়াদ

দারুল উলুম দেওবন্দের আরবি সাহিত্য ও ফিকহের শিক্ষক মাওলানা সালমান বিজনুরী নকশাবন্দি আওয়ার ইসলাম  প্রতিনিধিকে কওমি সনদের স্বীকৃতি প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে প্রথমেই দারুল উলুম দেওবন্দের কিছু বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করেন,

১৷ দারুল উলুম প্রতিষ্ঠা কাল থেকেই আপোসহীন৷ নিজ নীতি ও আদর্শের ওপর চলে আসছে৷

২৷ দারুল উলুম কারো চোখ রাঙানির ভয় করে না৷ আবার কারো লোভ-লালসায়ও পা দেয় না৷

৩৷ দারুল উলুমের ব্যক্তিগত বিষয়ে সরকারের সামান্যতম কর্তৃত্ব নেই৷ বার বার চেষ্টা করেও সরকার কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করতে ব্যর্থ হয়েছে৷

৪৷ দারুল উলুম দেওবন্দ উসূলে হাশতেগানা'র পূর্ণ অনুসরণ করে৷

৫৷ দারুল উলুম দেওবন্দ সরকার থেকে এক পয়সার সহযোগিতাও গ্রহণ করে না৷ নেসাবে তালিমে(শিক্ষা সিলেবাসে) পরিবর্তন আনার শর্তে গত বছর ভারত সরকার কর্তৃক প্রদত্ত ১০০ কোটি টাকার বরাদ্দ দারুল উলুম ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে৷ আমাদের সাথে সরকারের কোনো দুশমনি নেই৷ আমরা নিজেদের স্বকীয়তা বজায় রাখতেই সরকার থেকে দূরে থাকি৷

বিজনুরী বলেন, বাংলাদেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি অনুযায়ী যদি সংখ্যাগরিষ্ঠ নির্ভরযোগ্য আলমগণ সরকারি সনদের ব্যাপারে একমত হন তাহলে তারা ভেবে চিন্তেই এঁগোবেন বলে মনে করি৷ এ বিষয়ে যে এখতেলাফের কথা শুনেছি প্রথমে তার সুরাহা হওয়া উচিত৷ বড়দের পরস্পরের মধ্যে সম্পর্কটা আরো মজবুত হওয়া জরুরী৷ ছোটখাটো বিষয়ে এখতেলাফ থাকলে তা আপোষে মিটিয়ে নেয়া দরকার। সরকারি স্বীকৃতি বড় স্পর্শকাতর বিষয়৷ প্রয়োজনে সরকারের সাথেও খোলামেলা আলোচনা হতে পারে৷ সরকারের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ মনোভাব সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকা দরকার৷

আমার জানা মতে, দারুল উলুম থেকে প্রদত্ত সনদের একটা সরকারি মান রয়েছে৷ এই মানটা কোন স্তরের? সরকারি চাকুরি বা অন্যান্য ক্ষেত্রে এর কী ধরণের মূল্যায়ন রয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে মাওলানা সালমান বিজনুরী বলেন, ‘ভারত সরকার দারুল উলুমের সনদকে কলেজের ইন্টার(HSC)এর সম মান দিয়েছে৷ আর সরকারি চাকুরি বা অন্যান্য সুবিধার ক্ষেত্রে দারুল উলুমের সনদের কোনো মূল্যায়ন আছে বলে আমার জানা নেই৷ সরকারি ওই 'মান' কেবল ভারতের তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সুনির্দিষ্ট কয়েকটি সাবজেক্ট নিয়ে পড়ার সুযোগ করে দেয়৷ এর বাইরে এ মানে'র কোনো প্রভাব নেই৷ আমার তো মনে হয় নামে মাত্র ওই সরকারি মান থাকার চেয়ে না থাকাই ভালো৷’

এফএফ


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ