মুহাম্মাদ লুতফেরাব্বী
আজ ৬ অক্টোবর। আরব রিপাবলিক মিসরের ৪৩ তম স্বাধীনতা দিবস। ১৯৭৩ সনের এই দিনে মিসর ও সিরিয়ার যৌথ বাহিনী দখলদার ইজরাঈলী বাহিনীর উপর অতর্কিত হামলা চালায় এবং বিপুল সাফল্য অর্জন করে। সেই থেকে এই দিনটি মিসরের স্বাধীনতা দিবস হিসাবে পালিত হয়ে আসছে।
উল্লেখ্য, ১৯৬৭ সালে ‘নাকসা’ বা আরব বিপর্যয়ের পর ইজরাঈল মিসরের সিনাই ও সুয়েজ খালের একাংশ এবং সিরিয়ার জুলান অঞ্চল দখল করে নেয়। এগুলো উদ্ধারের বিভিন্ন উদ্যোগ কয়েক দফা আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রে ব্যর্থ হওয়ার পর মিসর ও সিরিয়ার সামরিক বাহিনী যুদ্ধের মাধ্যমে তা ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয়। সে মতে ১৯৭৩ এর ৬ অক্টোবর ১০ রমজান দুপুর ২ টা বাজে এক সাথে সুয়েজ খাল ও জুলান হ্রদ সীমানায় বিমান হামলা করে। মিসরের পক্ষে ২০০ যুদ্ধ বিমান প্রথম হামলায় অংশ নেয়। পাশাপাশি পদাতিক বাহিনীও সুয়েজ খাল অতিক্রম করে ওপাশের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। মিসরের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট হোসনী মোবারক এই যুদ্ধে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছিলেন।
ইসরাইলি বাহিনী এই অতর্কিত হামলায় বিপর্যস্ত হয়ে সম্মুখ হামলার পরিবর্তে কূটনৈতিক ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নেয়। মিত্ররাষ্ট্র আমেরিকা - জাতিসংঘ ও আরব লীগের মধ্যস্থতায় দু'দেশের মাঝে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যা ইতিহাসে ‘ক্যাম ডেভিড চুক্তি’ নামে পরিচিত।
৬ অক্টোবর সাম্প্রতিক আরব ও ইসলামী ইতিহাসের এক স্বর্ণালী অধ্যায়। পাশাপাশি সাম্রাজ্যবাদের কূট ষড়যন্ত্রের গ্লানীময় উপাখ্যান। সিনাই ফিরে এলেও জুলান আজো ইজরাঈলের দখলে। তারচেয়েও বড় কথা, আরব শাসকদের সেদিনের নির্লিপ্ততা ও আপন স্বার্থচিন্তা ক্ষুদ্র ইজরাঈলকে পরাশক্তির রূপ দিয়েছে। যার প্রতিফল ভোগ করছে পবিত্র আকসা সহ পুরা মুসলিম উম্মাহ।
লেখক: এমফিল গবেষক, আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয়. মিসর
এফএফ