ফারুক ফেরদৌস : এটিএন বাংলার হেড অব নিউজ মুন্নী সাহা সম্প্রতি কিছু কওমি মাদরাসায় গিয়ে কোমলমতি ছাত্রদের এলোপাথাড়ি প্রশ্নের বাণে জর্জরিত করে আবার বিতর্ক তৈরি করেছেন। সাংবাদিকতার নামে মুন্নী সাহার তৎপরতা এর আগেও অনেকের বিরক্তির কারণ হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিছু মাদরাসায় ঢুকে ছাত্রদের সাথে মুন্নী সাহার কথোপকথনের অনেকটাই শুদ্ধ সাংবাদিকতার মধ্যে পড়ে না।
এই বিষয়ে মতামত জানতে আওয়ার ইসলামের পক্ষ থেকে ‘ন্যাশনাল মুভমেন্টে’র প্রেসিডেন্ট বিশিষ্ট কবি ও লেখক মুহিব খানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি মুন্নী সাহার তৎপরতাকে ‘দীর্ঘ দিন ধরে চলে আসা ষড়যন্ত্রের অংশ’ মন্তব্য করে বলেন, ‘অনেক দিন ধরেই মাদরাসা শিক্ষার্থী, শিক্ষকসহ আলেমদের সন্ত্রাসী সাব্যস্ত করার অপচেষ্টা চলছিলো। সাম্প্রতিককালে কিছু জঙ্গি তৎপরতার পরে জঙ্গিদের পরিচয় প্রকাশিত হওয়ার পর জনগণের কাছে স্পষ্ট হয়ে গেছে যে আলেম ওলামা ও মাদরাসার ছাত্র শিক্ষকরা জঙ্গিবাদের সাথে জড়িত নয়। এরপর মাদরাসাগুলোর কিছু জঙ্গিবিরোধী কর্মসূচি এটা আরও স্পষ্ট করেছে।’ তিনি বলেন, জনগণকে এক্ষেত্রে ভুল বোঝানো হয়েছিলো। জনগণের ভুল অনেকটাই ভেঙ্গে গেছে। কিন্তু যারা ভুল বুঝিয়েছিলো তারা আগে থেকেই জানতো যে আলেম ওলামা জঙ্গিাবাদের সাথে জড়িত নয়। জেনে বুঝেই এই গোষ্ঠিটি ষড়যন্ত্রমূলকভাবে জনগণকে ভুল বুঝিয়ে আসছিলো। মুহিব খান মনে করেন, তাদের একটা ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হওয়ায় তারা এখন নতুন ধরণের ষড়যন্ত্রের দিকে গেছে। মুন্নী সাহার তৎপরতা মাদরাসা, দ্বীনি শিক্ষা, আলেম ওলামা ছাত্র শিক্ষকদের নতুন করে অযোগ্য ও অপ্রয়োজনীয় সাব্যস্ত করে বিতর্কিত করার নীল নকশার অংশ।
[caption id="attachment_12413" align="alignleft" width="343"] পঞ্চগড়ের তেতুলিয়ার এক মাদরাসার শিশু শ্রেণির ছাত্রের সঙ্গে দেশের ইতিহাস নিয়ে কথা বলছেন মুন্নিসাহা[/caption]
মুন্নী সাহাদের এভাবে মাদরাসায় ঢুকে কোমলমতি ছাত্রদের বিব্রত করাকে অপসাংবাদিকতা আখ্যায়িত করে মুহিব খান বলেন, ‘হেফাজতের আন্দোলনের সময় ২০১৩ সনের ১১ মে একটা টকশোতে আমাকে ডাকা হয়েছিলো । সেখানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরীসহ অনেকেই ছিলেন। সেই টকশোতে আমি এইসব ব্যাপার নিয়ে মাদরাসার পক্ষে জোরালো বক্তব্য রেখেছিলাম। এরপর থেকে আমাকে আর কোনো টকশোতে ডাকা হয় নি।’
‘তারা এসব প্রশ্ন আমাদের কাছে করে পেরে ওঠে না। তাই এইসব প্রশ্ন নিয়ে মাদরাসায় ঢুকে ঢুকে কোমলমতি অনভ্যস্ত ছাত্রদের কাছে জানতে চায়।’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, এগুলো তাদের কে জিজ্ঞাসা করলে এরকম ফলই আসবে। কিছুদিন আগে কিছু স্কুল ছাত্রের ক্ষেত্রেও তাই দেখা গেছে। তারাও স্বাধীনতা দিবস কবে বলতে পারে না। অপারেশন সার্চ লাইট কাকে বলে বলতে পারে না। অথচ তারা রাতদিন এইসব জ্ঞানের চর্চাই করে। তবু তারা এসব ব্যাপারে অজ্ঞ ও মূর্খ রয়ে গেছে।
মুহিব খান বলেন, মাদরাসা ধর্মীয় শিক্ষার প্রতিষ্ঠান। অন্যকিছু শিখলো কি না এসব প্রশ্ন করে কোমলমতি ছাত্রদের বিব্রত করার কোনো যুক্তি নাই। কিছু জানার থাকলে তাদের উচিত কওমি মাদরাসার দায়িত্বশীল আলেম ওলামা বুদ্ধিজীবীদের সাথে কথা বলা। তাদেরকে এড়িয়ে মাদরাসায় ঢুকে কোমলমতি ছাত্রদের সাক্ষাতকার নিয়ে প্রচার করা অপসাংবাদিকতার নামান্তর ও উদ্দেশমূলক।
এফএফ