আওয়ার ইসলাম: হাফেজ শফিকুল ইসলাম (১৭)। তার বাড়ি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার তারুন্দিয়া ইউনিয়নের পুনাইল গ্রামে। সে ওই গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের দ্বিতীয় সন্তান। তাঁর দুইটি কিডনিই অকেজো হয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় দরিদ্র পরিবারের পক্ষে লাখ লাখ টাকা খরচ করে কিডনি প্রতিস্থাপন করা দুরহ ব্যাপার। মৃত্যুর প্রহর গোনা ছাড়া তাঁর এক মাত্র পথ ওপরওয়ালা।
এই অবস্থায় মা জাহানারা চাইছেন না সোনার টুকরো ছেলে চোখের সামনে মৃত্যুর মুখে চলে যাক। এই বয়সেও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নিজের একটি কিডনি দিয়ে হলেও ছেলেকে বাঁচিয়ে রাখবেন। কিন্তু বাধা হয়ে এসেছে কয়েক লাখ টাকা। মায়ের কিডনি পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াও কিডনি প্রতিস্থাপানে খরচ হবে প্রায় ছয় লাখ টাকা। এই টাকা যোগাড় করা দরিদ্র পরিবারের পক্ষে খুবই অসম্ভব। সকল সহায় সম্বল বিক্রি করেও যোগাড় হবে না প্রয়োজনীয় টাকার।
শফিকুলের মা জাহানারা বেগম জানান, ছোট বেলা থেকেই ইচ্ছা ছিল তিন সন্তানের একজনকে কোরআনে হাফেজ বানাবেন। সেই ইচ্ছা পূরণ হয়েছে শফিকুলের মাধ্যেমে। এখন সে গফরগাঁও মদিনাতুল উলুম মাদ্রাসায় অধ্যয়ররত। কিছু দিনের মধ্যে সে মাওলানা হয়ে বের হওয়ার কথা। এই অবস্থায় শফিকুল এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দোদুল্যমান। গত মে মাস থেকে সে কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে তাঁর চিকিৎসা। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, দ্রুত কিডনি প্রতিস্থাপন করা না হলে শফিকুল মারা যাবে। এই খবরে চাষের জমি ছাড়াও প্রয়োজনীয় অনেক কিছু বন্ধক দিয়ে ও সুদে ধার করে চিকিৎসা চালানো হচ্ছে হাফেজ শফিকুলের। কিডনি ক্রয় করে তা প্রতিস্থাপন করা দিন দিনই অসম্ভব হয়ে দাড়াচ্ছে।
মা জাহানারা আরো জানান, তিনি নিজের কিডনি দিয়ে হলেও বাঁচাতে চান ছেলেকে। কিন্তু টাকার অভাবে তাও সম্ভব হয়ে উঠছে না। বর্তমান এই অবস্থায় শফিকুলের খোঁজ-খবর রাখছেন শফিকুলের চাচা হাসিম উদ্দিন।
হাসিম উদ্দিন জানান, ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি থাকলেও ত্রিশাল উপজেলায় অবস্থিত ময়মনসিংহ কমিউনিটি বেইজড হাসপাতালেও চলছে তাঁর চিকিৎসা। সেখানে ডাঃ মাহমুদ জাবেদ হাসান পরাগের অধীনে রয়েছেন। বর্তমানে প্রতি সপ্তাহে ডায়ালোসিস করতে খরচ হচ্ছে ১১ হাজার টাকা। এই টাকা খরচ করতে গিয়ে পরিবারটি দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
তিনি আরো জানান, তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে শফিকুলকে নিয়ে আবেদন জানালে অনেকেই এগিয়ে আসেন। এতে প্রায় ২৫ হাজার টাকা শফিকুলের মায়ের কাছে তুলে দেওয়া হয়। এখন শফিকুলকে বাঁচাতে দেশের বিত্তশালী ব্যক্তির সাহায্য কামনা করছেন তাঁর পরিবার।
আরআর