মোস্তফা ওয়াদুদ; বিশেষ প্রতিনিধি, আওয়ার ইসলাম
মুসলিম বিশ্বের সুখে-দুখে পাশে থাকার অঙ্গিকার নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো ওআইসি। এরপর থেকে তারা বিশ্ব নেতাদের নিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে বৈঠক করে। বিশ্বব্যাপী যে কোনো অশান্তির মোকাবেলায় পাশে দাঁড়িয়েছে। অতীতে সংস্থাটির কার্যক্রম এমনি দেখা গেছে। কিন্তু বর্তমানে সারাবিশ্বের মুসলিম দেশগুলোতে অশান্তি বিরাজ করছে। মুসলিম পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর কাছে মুসলমানরা নির্যাতিত হচ্ছে। এমন খবর বিশ্ব মিডিয়ায় পরিলক্ষিত হয়। বিশেষত বর্তমানে কাশ্মিরসহ আরো নানা দেশেই অশান্তি বিরাজ করছে। কাশ্মিরের নিরপরাধ মানুষের উপরে চলছে অন্যায়ভাবে নির্যাতন। এমতাবস্থায় ওআইসি ভারতকে নির্যাতন বন্ধের আহবান জানিয়েই কর্ম সেরেছে। সাম্প্রতিক সময়গুলোতে বিশ্ব নেতাদের থেকে প্রশ্ন উঠেছে ওআইসি যে উদ্দেশ্য নিয়ে গঠিত হয়েছিল তা রক্ষ করতে পারছে না। তাদের কার্যক্রম অনেকটাই বিবৃতিনির্ভর হয়ে পড়েছে। এই নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে মুসলিম বিশ্বে।
বিষয়টিকে কিভাবে দেখছেন বাংলাদেশের আলেম ও বিশ্লেষকরা। টেলিফোনে জানতে চেয়েছিলাম জমিয়তের উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের নির্বাহী সভাপতি, সাবেক মন্ত্রী ও এমপি মুফতি মুহাম্মদ ওয়াককাসের কাছে। তিনি বলেন, ওআইসি একটি আন্তর্জাতিক শান্তি সংস্থা। তারা বিভিন্ন ইস্যুতে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য বিবৃতি বা বাণী দিয়ে থাকেন। যেসব রাষ্ট্রে অশান্তি বিরাজ করছে সেসব রাষ্ট্রে শান্তি প্রতিষ্ঠার আহবান জানিয়ে আসছেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সংস্থাটি তাদের পথে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের কার্যক্রম আমার জানা মতে এতটুকুই। কোনো রাষ্ট্রের ব্যাপারে এ্যাকশানে যাওয়ার পরিকল্পনা ওআইসির নীতিতে নেই। তাছাড়া প্রতিষ্ঠাকালীন থেকে তারা শান্তি ও সমৃদ্ধির কথা বলে আসছেন। এখন যদি ওআইসি কোনো এ্যাকশানে যায় তাহলে তো অশান্তি বিরাজ করবে। তারা হলো শান্তি আহবানোর ফোরাম। এ্যাকশানের ফোরাম বলে আমার কিছু জানা নেই।
বর্তমানে কাশ্মিরে অস্থিরতা বিরাজ করছে। এ ব্যাপারে ওআইসি বা বিশ্ব মুসলিম নেতাদের ভিন্ন কোনো কার্যকর উদ্যোগের প্রয়োজন রয়েছে কিনা? জানতে চাইলে মুফতি ওয়াক্কাস বলেন, কাশ্মির সেই ৭০ বছর থেকে স্বাধীনতা প্রাপ্তির যুদ্ধ করে আসছে। তারা স্বাধীনতা চায়। স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার অধিকার সবারই আছে। সুতরাং বিশ্ব নেতাদের করণীয়র চেয়ে তাদের নিজেদের করার আছে অনেক কিছু। তারা গণভোটের আয়োজন করুক। যদি গণভোটের আয়োজন করে এবং গণভোটের মাধ্যমে তারা তাদের স্বাধীনতা লাভ করতে পারে।
তবে ১৯৮৬ সালে একবার ভারত সরকার তাদেরকে স্বাধীনতা দেয়ার কথা বলেছিলেন। এক সপ্তাহ সময় নিয়েছিলেন তখন। বলেছিলেন গণভোটের মাধ্যমেই কাশ্মির তার ভাগ্য নির্ধারণ করে নিবে। কিন্তু আজ কতটি বছর পেরিয়ে গেলো। এখনো কাশ্মিরের মুসলমানরা যুদ্ধ করছে। শাহাদাত বরণ করছে। মিডিয়া এ যুদ্ধকে সন্ত্রাসী বলে প্রচার করছে। এমতাবস্থায় বিশ্বলিডারদের জন্য তাদের পক্ষে কথা বলা প্রয়োজন বলে মনে করি।
মুফতি ওয়াক্কাস বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে কাশ্মিরের মুসলমানের স্বপক্ষে কথা বলার পক্ষে। আর বিশ্ব নেতারা কি করবেন সেটা তাদের ব্যাপার। তবে আমার কথা হচ্ছে তাদের পাশে দাঁড়ানো উচিত।
বর্তমানে ভারত পাকিস্তানে যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে। ভারত পাকিস্তানকে হুমকি দিচ্ছে- পাঁচ মিনিটের ব্যাবধানে পাকিস্তানকে উড়িয়ে দেবে। আবার পাল্টা হুমকি দিচ্ছে পাকিস্তান। ভারতকে উড়িয়ে দিবে ২ মিনিটে। এ অবস্থায় বাংলাদেশ কার পক্ষ নিবে? জানতে চাইলে সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, আমরা কার পক্ষ নিবো। সেটা নয়। বরং আমরা বলবো এসব হামলা বা হুমকি বন্ধ করুন। এটাই আমাদের কামনা।
আরআর