সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫ ।। ৭ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ২৩ শাওয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন নিয়ে ক্ষোভ, প্রতিবাদ জানালেন শায়খ আহমাদুল্লাহ বিবাহ একটি ইবাদত, এর পবিত্রতা রক্ষা করা জরুরি নারী অধিকার কমিশনের সুপারিশে আলেম প্রজন্ম-২৪-এর আপত্তি  জুলাই-আগস্টের ত্যাগের পরও কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ পাইনি: মির্জা ফখরুল নারীবিষয়ক সুপারিশগুলো কোরআন-হাদিসের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন: জামায়াত আমির ‘১৬ বছরের জঞ্জাল দূর না করে নির্বাচন দিলে সমস্যা সমাধান হবে না’  প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জমা সরকারি নিবন্ধন পেল সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘কলরব’ ‘সিরাহ মিউজিয়াম’ চালু করছেন মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী মহাসমাবেশ সফল করতে যেসব কর্মসূচি নিয়েছে হেফাজত

গোস্ত না মাংস কী বলবো?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আরিফ খান সা’দ: গরুর গোস্ত বলা যাবে না। গোস্ত বলা শিরক। কারণ গোস্ত ফারসি শব্দ। ফারসি মাজূসীদের ভাষা। পারস্যের আগুনপূজারীরা এ ভাষায় কথা বলতো। তারা আগুন পানি পাথর বৃক্ষ নক্ষত্র গরু ইত্যাদির পূজা করতো। গোস্ত ফারসি মুরাক্কাব শব্দ।

গো+আস্ত=গোস্ত। 'গো' মানে গরু-দেবতা। 'আস্ত' মানে আছে, বিদ্যমান, অস্তিত্ব। 'গোস্ত' মানে গোরু-দেবতা আছে বা গো-দেবতার অস্তিত্ব। অর্থাৎ পরোক্ষভাবে একটা শিররি আকিদা স্বীকার করা হচ্ছে। কুফুরি হয়ে যাচ্ছে। (গোস্ত, গোসত, গোশত বিভিন্ন মতের বানানবিভেদ)

তাহলে কী বলবো?! মাংস বলবো?!

নাহ, মাংসও বলা যাবে না। কারণ 'মাংস' বাংলা শব্দ। বাংলা হিন্দুদের ভাষা। ভারতের মূর্তিপূজারী হিন্দুরা বাংলাভাষা জন্ম দিয়েছে। 'মাংস' বাংলা মুরাক্কাব বা সন্ধিবদ্ধ শব্দ। স্বরসন্ধি। মা+অংশ=মাংস। 'মা' মানে গো-মাতা। 'অংস' মানে 'অংশ'। 'মাংস' মানে গো-মাতার অংশ। অর্থাৎ মাংস বললে গরুকে মা হিসাবে স্বীকার করা হচ্ছে। এজন্য মুরুব্বিরা মাংস বলতে নিষেধ করেছেন।

তাহলে কী বলবো?! মিট বলবো?!

নাহ, মিট তো ইংরেজি শব্দ। ইংরেজি বলা হারাম। বৃটিশরা মুসলমানদের উপরে অকথ্য নির্যাতন করেছে।

তাহলে?! আরবি শব্দ 'লাহম'। লাহম বলতে হবে?!

নাহ, আরবি তো মুশরিকদের ভাষা। যারা কা'বা শরীফে নগ্নদেহে তাওয়াফ করতো, মেয়েকন্যাকে জীবন্ত কবর দিতো, মশক ভরে রক্ত পান করতো তাদের ভাষা। আরবরা জাহেলি যুগে বিভিন্ন পশুর 'লাহম' ভক্ষণ করতো। দেবতার উদ্দেশ্যে 'লাহম' উৎসর্গ করতো। এত শত সহস্র পাপে দুষিত কলুষিত আরবি কীভাবে ব্যবহার করবো মুসলমান হয়ে?!

ভাবতে হবে তো! সব ভাষাই আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন। মানুষ ভাষা সৃষ্টি করে নি। মানুষকেও আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন। ইসলামের আগে মুশরিকরা যে ভাষা ব্যবহার করতো ইসলামের সম্মানে আল্লাহ নতুন পুতপবিত্র কোনো ভাষা দেন নি। মুশরিকরা যেই 'লাহম' দেবতার উদ্দেশ্যে 'উৎসর্গ' করতো রাসূল সা. সেই 'লাহম' (পশু) আল্লাহর নামে 'কুরবানি' করলেন।

রাসূলের ইত্তেবা সুন্নত না? আগুনপূজারীরা যেই 'গোস্ত' দেবতার উদ্দেশ্যে 'উৎসর্গ' করতো পারস্যবিজিত নওমুসলিমরা সেই 'গোস্ত' বিসমিল্লাহ্‌ বলে খাওয়া শুরু করলেন। আর গোস্ত মানে 'গোরু দেবতা আছে' এই 'দেবতা' কোত্থেকে বের হলো? শব্দসন্ধিটির ভেতরে 'দেবতা' শব্দের কোনো আভাস আছে? এই মোরাক্কাবেরই কোনো অস্তিত্ব?!

কিংবা এই বক্তব্যের কোনো সূত্র?! 'খোদা' মানে 'খোদ-আয়া' অর্থাৎ 'স্বয়ম্ভূ'। সমস্ত জিনিসে তিনি নিজেই আসেন। এমন একটি শিরকি শব্দ মুসলমানদের বহুল ব্যবহারে তাওহীদি শব্দ হয় নি?!

'মাংস' মানে 'গো-মাতা' অংশ। এখানে শব্দবন্ধে 'মাতা' কোত্থেকে আসলো? 'মাংস' লিখছেন 'দন্ত্য-স' দিয়ে। আর 'অংশ' লিখছেন 'তালব্য-শ' দিয়ে। সন্ধি হলে শব্দের শেষের হরফ পরিবর্তন হয় কখনো?! 'অংস' মানে 'অংশ' হতে পারে?! 'অংস' মানে কাঁধ।

ধাতুমূল 'অম+স'। আর 'অংশ' মানে খণ্ড টুকরা ভাগ। ধাতুমূল 'অংশ+অ'। দুটো দুই জগতের শব্দ। ধাতু অর্থ বর্ণে কত পার্থক্য! যদি বলা হয় ইসলামি শব্দ বিলুপ্তির লক্ষ্যে ইংরেজ+হিন্দুদের চক্রান্তে ফোর্ট উইলিয়াম থেকে 'স শ ষ' বিশৃঙ্খলার সূচনা হয়েছে তবুও তো কথা থেকেই যায়। গাভি নাহয় মা হলো। গাভির মাংস মায়ের অংশ। গাভি স্ত্রীলিঙ্গ। গরু মা হতে পারে? গরুর মাংসও মায়ের অংশ? গরু পুংলিঙ্গ।

এছাড়া ছাগলের মাংস, মুরগির মাংস, মহিষের মাংস, হাঁসের মাংস, মানুষের মাংস, পাখির মাংস ইত্যাদি বলা হয়। ছাগল, মুরগি, মহিষ, হাঁস, মানুষ, পাখি এগুলোও কি সনাতনীদের মা?! দেবতা?! কোনো সূত্র আছে?!

আচ্ছা, পুংলিঙ্গ হলেও যদি 'মায়ের অংশ' হয়ে থাকে তাহলে নবীজির কাছে এক সাহাবি উটনীর বাচ্চা চাইলে নবী বয়স্ক উটনী দিয়ে কী বলেছিলেন? সব উটনীই তার মায়ের বাচ্চা না?!

নবীজির মূল বক্তব্য নিয়ে একটু চিন্তা করা যায়?! বাংলায় মা জননীরা সন্তানকে 'কলিজার টুকরা' বলেন। কলিজার অংশ! তাহলে খাবারের প্লেটে রাখা গরু গাভি মহিষ মুরগি মোরগ ছাগল কবুতর হাঁস ইত্যাদির টুকরাকে 'মাংস' বললে অসুবিধা কী?!

মাংসপেশি, মাংসপিণ্ড এসব শব্দ ব্যবহার করছেন না?! 'মাংস' বললে ঈমান হ্রাস পাবে বা ক্ষতি হবে?!

আচ্ছা তাহলে আমরা কী বলবো?!
যখন আরবিতে কথা বলবো তখন 'লাহম' বলবো।
যখন উর্দু ও ফার্সিতে কথা বলবো তখন গোস্ত বলবো।
যখন বাংলায় কথা বলবো তখন মাংস বলবো।
যখন ইংরেজিতে কথা বলবো তখন মিট বলবো।
কিংবা আমার যে শব্দ পছন্দ সেটাই ব্যাবহার করবো।

আরআর


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ