মুহিউস সুন্নাহ আল্লামা মাহমূদুল হাসান
পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহতায়ালা বলেছেন, তোমাদের ওপর যত ধরনের বিপদাপদ ও মুসিবত আসে সব তোমাদের কর্মেরই প্রতিফল। অর্থাৎ ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় জীবনে যেসব পেরেশানি বা দুরবস্থা আসে তার একমাত্র কারণ হলো গোনাহ ও আল্লাহর নাফরমানি।
প্রতিটি মুহূর্তে পাপের সাগরে ডুবে থাকার কারণেই আল্লাহ পাক স্বীয় সৃষ্টি ও শত্রুকে আমাদের জন্য মুসিবত, ধ্বংস ও আজাবের কারণ বানিয়ে পাঠিয়েছেন। আগুন, পানি, বাতাস, ভূমিকম্প ও হিংস্র প্রাণীকে যেভাবে আমাদের জন্য আজাব হিসেবে পাঠান তেমনি অনেক সময় আল্লাহ পাক ইসলামের শত্রুদের আমাদের জন্য আজাবের মাধ্যম বানান। আল্লাহ হুকুম ও নবীর সুন্নত তরক করার কারণে আমাদের ওপর আজাব আসে। মিছিল, মিটিং ইত্যাদি করে আজাব দূর করা যাবে না। আজাব দূর করতে হলে নেকির কাজ করতে হবে এবং পাপের কাজ বর্জন করতে হবে।
আমি প্রায় জায়গায় বলে থাকি যে, বাংলাদেশের ৬০% মানুষ যদি সহিশুদ্ধ ও সুন্নত তরিকায় ফরজ নামাজ আদায় করত তাহলে দেশের পরিস্থিতি নির্ঘাত পাল্টে যেত। দুঃখের কথা আর কী বলব— আমরা যারা নামাজ পড়াই তাদের নামাজই সুন্নত তরিকায় হচ্ছে না। দাঁড়ানোর সুন্নত তরিকা ঠিক নেই, বসার তরিকা ঠিক নেই, ইত্যাদি ইত্যাদি।
কেউ যদি বলে ভাই! তোমার আজান, নামাজ ইত্যাদি সুন্নত তরিকায় হচ্ছে না, তাহলে সে রাগ করে, তার কথা মানতে চায় না। ভাতের মধ্যে যদি পোকা থাকে আর কেউ ওই ভাত আহারকারীকে জানিয়ে দেয় যে, তোমার ভাতে পোকা; তাহলে তাকে ধন্যবাদ দেওয়া হয় অথচ কারও নামাজে যদি পোকা তথা গলদ থাকে আর তা ধরিয়ে দেওয়া হয় তখন রাগ করা হয়। এই পোকা নামাজে থাকলে কি তাকে পরিশুদ্ধ নামাজ বলা যায়? যে এই পোকার খবর দিয়ে তা সরানোর কাজে সহযোগিতা করল তাকে তো আন্তরিক বন্ধু ভাবার কথা! মনে রাখবেন, নামাজ যখন ত্রুটিমুক্ত হবে তখনই তা রুহানি শক্তি পয়দা করবে।
লেখক : খতিব, গুলশান সেন্ট্রাল জামে মসজিদ।