শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫ ।। ৫ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ২০ শাওয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
৫ বছর আগের এই দিনে কী হয়েছিল মাওলানা আনসারীর জানাজায়? হজযাত্রীর জন্য চালু হচ্ছে হজ ম্যানেজমেন্ট সেন্টার, থাকবে অ্যাপ কুয়েট শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি মেনে নিন- ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ  আইন করে ভারতে মুসলিমদের অধিকার হরণ করা যাবে না: জমিয়ত করাচি-চট্টগ্রাম রুটে নৌযান চলাচলকে স্বাগত জানিয়েছে দুই পক্ষ: পাকিস্তান ২৬ এপ্রিল জমিয়তের কাউন্সিল, প্রাধান্য পেতে পারে তরুণ নেতৃত্ব কওমি সনদ বাস্তবায়ন  করা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব: ধর্ম উপদেষ্টা কোরআন-সুন্নাহর ভিত্তিতেই কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব: জামায়াত সেক্রেটারি গাজায় গণহত্যা ও ভারতে ওয়াকফ বিলের বিরুদ্ধে জমিয়তের বিক্ষোভ ইয়েমেনে মার্কিন হামলায় নিহত অন্তত ৩৮

নববধূর সাজে তরুণী: এখন শুধুই অপেক্ষা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মোস্তফা ওয়াদুদ

গতকাল বিয়ের আসরে বসবার কথা ছিলো ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার রাজাপুর গ্রামের আবু হানিফের কন্যা মাহমুদার। মাহমুদা হাফেজা ও আলেমা। বিখ্যাত হাফেজ এমদাদুল্লাহ’র বড় বোন। সদা হাস্যময়ী মেয়েটির যাবার কথা ছিলো শুশুর বাড়ি। স্বামীর সাথে মধূর বাসর হবে তার। সব প্রস্তুতি সম্পন্ন। বাকি শুধু বরের উপস্থিতি। বরও রওয়ানা হয়েছেন নির্দিষ্ট সময়ে। উঠে বসেছেন গাড়িতে। সবাইকে নিয়ে বরের গ্রামের বাড়ি মৌলভীবাজার রুপসনগর থেকে রওয়ানা হয়েছেন মেয়ের ঢাকার বাসা তেজগাঁয়ে। এসেও পড়েছেন বহুদূর। পথেই ঘটেছে দূর্ঘটনা। ব্রাহ্মণবাড়ীয়ায় সরাইল থানার ইসলাম পুরে দানব এনা পরিবহনের ধাক্কায় দুমড়ে মুচড়ে যায় বাসটি। কিছু সময়ের ব্যবধানে ঝড়ে যায় আটটি প্রাণ।

গাড়ীতে ছিলেন বরের বেশে আবু সুফিয়ান ও তার পরিবারের অন্যান্য আট সদস্য। একজন ছাড়া বাকি সবাই মৃত্যুবরণ করেছে। মুহূর্তে খবর ছড়িয়ে পড়ে ফেসবুকে। গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে সংবাদ। হাজারো আইডি থেকে সমবেদনা জানিয়ে দেয়া হয় পোস্ট। সারাদিন সেই বিভৎস চেহারাগুলো দেখাতে থাকে দেশের টিভি চ্যানেলগুলোতে। এনা পরিবহনের বিরুদ্ধে করা হয় মামলা। পুলিশ বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করে ব্রাহ্মণবাড়ীয়া সরাইল থানায়।

এদিকে তেজগাঁয়ের বাসায় চলছে শোকের মাতম। যে মেয়েটি বধূর সাজে সজ্জিত ছিলো। মহানন্দে ভাসছিলো প্রতিক্ষণ। এই বুঝি চলে যাবো শশুর বাড়ি। কদমবুসি করবো প্রিয় স্বামীর। না আর যাওয়া হয়নি। রোড এক্সিডেন্টের ঘটনায় মূহ্যমান তরুনী মাহমুদা খাতুন।

গতকাল থেকে তিনি নিশ্চুপ। খাওয়া দাওয়া নেই। অসহায় চোখে চেয়ে আছেন আকাশে। মুখে কোনো সাড়াশব্দ নেই। কান্নাও আসে না আর। চেয়ে আছেন একদিকে। আকাশের মালিক যদি কিছু করেন। বারবার তিনি মূহ্যমান হচ্ছিলেন।

আজ সকালে মেয়ের ছোটো ভাই হাফেজ এমদাদুল্লাহর সাথে টেলিফোনে বিষয়টি জানা গেলো। মেয়ের বাবা মাওলানা আবু হানিফ। তিনি হবু জামাইয়ের বিয়োগে বিয়োগপ্রাণ। কাঁদছেন মেয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে। টেলিফোনে কথা বলতে পারেননি তিনি। দৌড়াদৌড়ি করছেন হাসপাতালে। বেঁচে যাওয়া আবু সুফিয়ানেরর ছোটো ভাই কামরানের সেবা শুশ্রূষায়। ছুটাছুটি করছেন রাজধানীরর পঙ্গু হাসপাতালে। দেখভাল করছেন কামরানকে।

আবু সুফিয়ানরা অনেক গরিব। তাই পুরো টাকারও ব্যবস্থা করতে পারছেন না। সহযোগিততা চাইছেন বৃত্তবানদের। কিছু মানুষ আসছে এগিয়ে।

যে তরুনীর বিয়ের সাজে বসেছিলেন। সে আজ শুধুই অপেক্ষায়। প্রিয় মানুষের অপেক্ষায়। বারবার অবচেতন হচ্ছিল। বাসার সবাই তাকে শান্ত হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে। তার ভাইয়ের মাধ্যমে মাহমুদার সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হয়েছিলো। কিন্তু তিনি কারো সাথেই কোনো কথা বলছেন না।

আরো পড়ুন: বিয়ে করা হলো না মাওলানা সুফিয়ানের

আরআর


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ