ফারুক ফেরদৌস : আজ ঈদের দিন সারাদেশে মুসলমানরা যখন কোরবানির পশু জবাই, গোশত বিতরণ, গোশতের নানা পদ রান্না করে খেয়ে ঈদ উদযাপন করছেন, কওমি মাদরাসার হাজার হাজার ছাত্র দিন ভর গরু জবাই ও চামড়া কালেকশনে ব্যস্ত সময় পার করে এখন হিসেব মেলাচ্ছে। কিছু মাদরাসা থেকে হয়তো চমড়াভর্তি ট্রাক রওয়ানা হয়েছে ট্যানারির উদ্দেশ্যে। আজই তাদের ছুটি হয়ে যাচ্ছে না। আগামীকালও কিছু কোরবানি হবে। সেই সব চামড়া কালেকশন করে কেউ কেউ আগামীকাল দুপুর বা রাতে বাড়ি যেতে পারবেন। কিছু ছাত্রকে আরও একদিন থেকে যেতে হবে। ছাত্রদের পাশাপাশি কওমি মাদরাসার শিক্ষকদেরও ঈদের প্রথম দিন চামড়া কালেকশন তদারকিতে ব্যস্ত সময় কাটে। তাদের অনেকেই নিজের কোরবানি দেন ঈদের দ্বিতীয় দিন।
এই চামড়া কালেকশন থেকে মাদরাসাগুলোর মোট ব্যয়ের কত শতাংশ আসছে? এর বিকল্প কি চিন্তা করা সম্ভব? এটা কি কওমি মাদ্রাসার ঐতিহ্যগত কোনো বিষয়? এসব প্রশ্ন নিয়ে আওয়ার ইসলামের পক্ষ থেকে ঢাকার জামিয়া ফরিদাবাদের মুহতামিম ও শাইখুল হাদিস আল্লামা আব্দুল কুদ্দুস সাহেবের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, চামড়া কালেকশন কওমি মাদ্রাসার ঐতিহ্যগত কোন বিষয় নয়। তবে এটা কারো একার সিদ্ধান্তে পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব নয়। বোর্ড বা সবগুলো কওমি মাদ্রাসা চাইলে বন্ধ করতে পারে।
তিনি জানান, চামড়া কালেকশনের আয় থেকে মাদ্রাসাগুলোর আনুমানিক এক মাসের ব্যয় নির্বাহ হয়।
ঈদুল আযহার সময় কওমি মাদরাসার অধিকাংশ ছাত্রই এখন ছুটিতে থাকে জানিয়ে ঢাকার ফরিদাবাদ জামিয়ার মুহতামিম বলেন, জামিয়া ফরিদাবাদের প্রায় সাড়ে তিন হাজার ছাত্রের মধ্যে চামড়া কালেকশনের জন্য রয়ে গেছে মাত্র সাত আটশ। বাকি সবাই ছুটিতে বাড়ি চলে গেছে।
মাওলানা আবদুল কুদ্দুস বলেন, কওমি মাদ্রাসাগুলো যেহেতু সরকারের অর্থায়নে পরিচালিত হয় না, তাই বাধ্য হয়েই ব্যয় নির্বাহের জন্য তাদেরকে নানাভাবে মানুষের অনুদান সংগ্রহ করতে হয়। এরকমই একটি কর্মসূচি এই চামড়া কালেকশন। সরাসরি ছাত্রদের না পাঠিয়ে চামড়া বিক্রির টাকা মাদরাসায় দান করার জন্য মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা যায় কিনা জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, কোরবানির পশুর চামড়া গরিবদের হক। কিন্তু ছাত্ররা না গেলে গুণ্ডা মাস্তানরাই এই বিপুল সম্পদের পুরোটা নিয়ে নেবে। মানুষের পক্ষে প্রকৃত দামে চামড়া বিক্রি করে সেটা দান করা সম্ভব হবে না।
এফএফ