তনয় ইমরোজ
প্রতিটা দুর্ঘটনার পর রাষ্ট্রপরিচালকগণ মহানুভবতা দেখাতে ২-৪ লক্ষ টাকা অনুদান ঘোষনা করেন। আমরা বিগলিত হয়ে ‘মহামান্যদের’ স্তুতিগান করি। চিন্তা করি না এই অনুদান কেবল লোক দেখানো। আদতে শ্রমিকদের জীবন নিয়ে ভাবার সময় উনাদের নেই। তবে শ্রমিকের ‘জীবিকা’ নিয়ে উনারা ভাবেন। কেননা শ্রমিকের শ্রম- জিবিকার উপর নির্ভর করে উনাদের লাক্সারি জিবন।
প্রথমত অনুদান শব্দটাই আপত্তিজনক। এটা হবে ক্ষতিপুরণ। দুর্ঘটনার ক্ষতিপুরণ শ্রমিক-কর্মচারী সকলের ন্যায্য অধিকার। এটা দয়া ভিক্ষা নয় যে প্রধানমন্ত্রীর মহানুভবতা বলে বিবেচিত হবে। দ্বিতিয়ত, প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে অর্থসাহায্য সরকারব্যবস্থার ব্যর্থতার গল্প। দুর্ঘটনার ইন্সুরেন্স শ্রমিকের মানবাধিকার। শ্রমিক কাজ করবে মিল-কারখানাতে ভাড়ি লোহা-লক্কর মেশিন নিয়ে আর তার ওয়ার্কপ্লেস ইন্সুরেন্স থাকবে না- এটা চূড়ান্ত অসভ্যতা! দুর্ঘটনা ইন্সুরেন্স কর্মচারীদের ওয়েজ প্যাকেজের অংশ। সারা পৃথিবীতে স্বীকৃত এবং আইনের মাধ্যমে সুরক্ষিত।
বাংলাদেশ রাষ্ট্রটা ব্যবসায়িক নির্লজ্জতার প্রতীক যেন। দেশের সকল বড় পুঁজিপতিরা সংসদ সদস্য অথবা বড় বড় দলের নেতা বা নেতাদের বেয়াই। উনারা ইন্সুরেন্স প্রিমিয়ামের পয়সা বাঁচাতে শ্রমিককে অধিকার বঞ্চিত করেন। ওয়ার্কপ্লেস ইনজুরির চিকিৎসা, পুর্নবাসন খরচ শ্রমিকগণ পান ‘তাহাদের’ মর্জিমোতাবেক, দয়ার দান হিসাবে। লক্ষ-হাজার শ্রমিক এই রাষ্টী্রয় অসভ্যতার ভিক্টিম। যাদের কথা কখনো নিউজে আসে না। দুর্ঘটনার ইন্সুরেন্স থাকলে কি শ্রমিকদের শুনতে হতো যে মালিক পালিয়ে গেছে? মালিকের ক্রিমিনাল প্রসিডিঙের সাথে ক্ষতিপুরণের সর্ম্পকটা কি? ক্ষতিপুরণের দায়িত্ব হবে ইন্সুরেন্স কোম্পানির।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি মহানুভবতা দেখাচ্ছেন না। আপনি শুধু আপনাদের অপরাধ ঢাকছেন।
লেখক : আমেরিকা প্রবাসী
এফএফ