সোহাইল আহমেদ; আওয়ার ইসলাম
পৃথিবীতে কত মত, কত আদর্শ, কত বিধান; এসব আসে, সময়ের আবর্তনে আবার হারিয়ে যায়। কোনো বিধান যুগের সাথে খাপ খায় না বলে পরিত্যক্ত হয়। কোনো নিয়ম অপূর্ণ বা অথর্ব বলে পরিবর্তিত হয়।
ইসলামের বিধান যে কারণে সর্বশ্রেষ্ঠ তা হলো, তা কখনো হারিয়ে যায় না। সর্বযুগের সাথে তাল মিলাতে পারে। স্বয়ংসম্পূর্ণ; কোনো সম্প্রসারণ, সংকোচন, পরিবর্তন, পরিমার্জনের প্রয়োজন হয় না। সর্বকালীন; ফলে ওল্ড ভার্সন যেমন নেই, আপডেট ভার্সনও নেই। এটাই ইসলামের অলৌকিকতা ও শাশ্বত-চিরন্তন মহাসত্যের পরিচায়ক।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, ইসলামী বিধানে এক সুপ্ত সৌন্দর্য বিরাজমান, দূরদর্শী চোখ ও সুন্দর মন ছাড়া সেই স্নিগ্ধতা অবগাহন করা যায় না। প্রত্যেকটা বিধানই 'কল্যাণ' কবলিত। 'সাম্য' সম্বলিত। এক অপূর্ব সৌন্দর্য মহিমায় আন্দোলিত। সম্প্রীতির আবহে উদ্বেলিত।
সালাম। সরব সম্ভাষণ। অকপট অভিবাদন। অভয় অভ্যর্থনা। শীতল শুভেচ্ছা।
"আসসালামু আলাইকুম - আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক"। এই সালামের দ্বারা
(১) তার জন্য প্রার্থনা করা হয়।
(২) তার মঙ্গল ও কল্যাণ কামনা করা হয়।
(৩) বুঝানো হয়, 'আমি শান্তিকামী'।
(৪) নিশ্চয়তা দেয়া হয়, 'আমার দ্বারা আপনার কোনো ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই'। নিরাপত্তা প্রদান করা হয়।
(৫) সম্প্রীতি ও ভালবাসা প্রকাশ করা হয়।
(৬) (বড় হলে) ভক্তি ও শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়।
(৭) (ছোট হলে) আদর ও স্নেহ ঢেলে দেয়া হয়।
(৮) সালামের বাক্য এমনই যাদুময়ী, যা কেউ রাগী মুখে উচ্চারণ করতে পারে না। ধমকের সুরে সালাম দেয়া যায় না। সালামের সাথে হাসি'র জোরালো সম্পর্ক রয়েছে।
(৯) সালাম দেয়া বা পাওয়ার সাথে "Class বা Status" এর কোনো সম্পর্ক নেই। ছোট-বড়, ধনী-গরিব, রাজা-প্রজা, নির্বিশেষে সবাই সবাইকে সালাম দিতে পারে।
(১০) সমাজে শান্তি, শৃঙ্খলা, ন্যায় প্রতিষ্ঠায় যদি কোনো শব্দের ভূমিকা থাকে, তা সালাম।
সালাম শব্দের অর্থ যেমন শান্তি, সমাজে সালাম প্রতিষ্ঠায়ও শান্তি।
লেখক: শিক্ষার্থী, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়