পীরে কামেল ড. মাওলানা মুশতাক আহমদ; আওয়ার ইসলাম
মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। আমাদের জিজ্ঞাসা কে তিনি? জবাব; তিনি মহান আল্লাহর বান্দা। তিনি আল্লাহর রাসূল। তিনি কুল মাখলূকের নূর। তিনি ইনসানে কামিল। তিনি মহামানব। তিনি সৃষ্টির সেরা। তিনি শ্রেষ্ঠ জ্ঞানী। তিনি নবী। তিনি শ্রেষ্ঠ নবী। তিনি শেষ নবী। তিনি নবীগণের নবী। তিনি বিশ্বনবী। তিনি জিন্ন ইনসানের নবী। তিনি কুল মাখলূকের নবী। তিনি আলামীনের নবী। তিনি আবাদুল আবাদের নবী। তিনি হাশর দিবসে সর্বাগ্রে উত্থিত হবেন। তিনি সাক্ষ্যদাতা। তিনি হামদের পতাকাবাহী। তিনি মাকামে মাহমূদের অধিকারী। তিনি শাফীউল মুযনিবীন। তিনি শাফাআতের সূচনাকারী। তিনি শাফাআতে কুবরার অধিকারী।
তিনি হাউজে কাউসারের মালিক। তিনি বিচার দিবসে আরশের ডানে অবস্থান করবেন। তিনি মানবতার শান্তির প্রতীক। তিনি মাকারিমুল আখলাকের জনক। তিনি উম্মতের কাণ্ডারী। তিনি উম্মতকে নিয়ে সর্বাগ্রে জান্নাত প্রবেশ করবেন। তিনি দুনিয়ায় বংশ মর্যাদায় শ্রেষ্ঠ। তিনি মাসূম। তিনি নিষ্পাপ। তিনি পূর্বাপর সকল ত্রুটি ক্ষমাপ্রাপ্ত। তিনি একক সনদের অধিকারী। তিনি রহমাতুল লিল আলামীন। তিনি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলের জন্য রহমত। তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ দাতা। তিনি শ্রেষ্ঠ ক্ষমাকারী। তিনি রহমতের বিতরনকারী। তিনি হাবীবুল্লাহ। তিনি আল্লাহর পরম বন্ধু। তিনি আল্লাহ সম্পর্কে সর্বাধিক জ্ঞানী। তিনি শ্রেষ্ঠতম মুত্তাকী। তিনি শ্রেষ্টতম পরহেযগার। তিনি উসীলা। তিনি আল্লাহর কাছে সর্বোচ্চ উসীলারূপে গৃহীত।
তিনি স্বচক্ষে জান্নাত জাহান্নাম দেখেছেন। তিনি স্বশরীরে কাবা কাওসাইন ভ্রমন করেছেন। তিনি ইমামুল আম্বিয়া। তিনি ইমাম হয়ে সকল নবীর নামায পড়িয়েছেন। তিনি হায়াতুন নবী। তিনি ওফাতের পরেও কবর শরীফে জীবন্ত। তিনি রওজা পাকে উম্মতের সালাম নিজ কানে শোনেন। তিনি রওজা পাক থেকে মাহবূব উম্মতকে সালামের জওয়াব দেন। তিনি শ্রেষ্ঠ মুজিযাপ্রাপ্ত। তিনি অসংখ্য মুজিযার অধিকারী। তাঁর নাম আরশের গায়ে লেখা। তাঁর জীবনে মিথ্যার লেশমাত্র ছিল না। তাঁর সীনা মুবারক ছিল পুতপবিত্র। তাঁর যবান মুবারক ছিল সর্বাবস্থায় নিয়ন্ত্রিত। তাঁর গ্রীবা মুবারকে ছিল কুদরতের দেওয়া মোহরে নবুওয়াত। তাঁর আবির্ভাবের কথা বর্ণিত ছিল পূর্বের সকল আসমানী কিতাবে। তাঁর আগমনের আগাম সংবাদ দিয়ে গিয়েছেন সকল পয়গাম্মর। তাঁর অঙ্গুলি নির্দেশে দ্বিখণ্ডিত হয়েছিল চাঁদ। তাঁর সাথে কথা বলেছিল পাথর। তাঁকে ছালাম করেছিল গাছপালা। তাঁকে শুভেচ্চা জানিয়েছে জীবজন্তু।
তাঁর কালেমা পড়েছিল বনের হিংস্র ব্যঘ্র। তাঁকে ভয় পেত দুশমনরা একমাস পথের দূরত্ব থেকে। তাঁকে সমর সাহায্য করেছিল জিবরাঈল। তাঁর সহযোদ্ধা হয়েছিল ফেরেশতার বাহিনী। তাঁর প্রতি সাক্ষী প্রদান করেছে বাবুল বৃক্ষ। তাঁর সত্যতার স্বীকারোক্তি দিয়েছে ইহূদী আলিমগণ। তাঁর সত্যতার ঘোষণা ঘোষিত হয় খৃষ্টান সম্রাটের দরবারে। তাঁর সাথে কথা বলল চতুষ্পদ জন্তুরা। তাঁর বাহন উটনী মাটিতে হাটতো আল্লাহর প্রত্যক্ষ নির্দেশে। তাঁর প্রতি সাক্ষ্য ঘোষণা করে ছিল খেজুরের খোসা। তাঁর আহার তাঁকে বিষ মেশানোর সংবাদ জানিয়ে দেয়। তিনি শ্রেষ্ঠ মুজাহিদ। তিনি নির্ভিক সিপাহসালার। তিনি বদর যুদ্ধের পূর্বেই শত্রুর অকুস্থল নির্দেশ করে দিলেন। তিনি যুদ্ধের আগেই বিজয়ের সংবাদ দিয়ে দিলেন। তিনি অসংখ্য ভবিষ্যতবাণী করেছেন। তাঁর কোন ভবিষ্যতবাণী কোন দিন অসত্য হয়নি। তিনি বহু অদৃশ্য ঘটনার ধারাবিবরনী দিয়েছেন। তিনি কিয়ামত পর্যন্ত ঘটিতব্য বিষয়াদির ভবিষ্যতবাণী করেছেন। তাঁর দেহরক্ষীর দায়িত্ব পালন করল আসমানের ফেরেশতা। তাঁর পাহারাদার একজোড়া কবুতর ও একটি মাকড়শা। তাঁর শারিরীক সৌন্দর্য পুর্ণিমার চাঁদকে হার মানাল। তাঁর গাত্রঘর্ম ছিল মিশক আম্বরের চেয়ে বেশী সুগন্ধিময়। তিনি ছিলেন শ্রেষ্ঠ বীর। তাঁর শরীরে একশত জান্নাতী পুরূষের শক্তি রাখা ছিল।
তাঁর শরীরে মশা মাছি বসার অনুমতি ছিল না। তাঁকে ছায়া দিত আকাশের মেঘখণ্ড। তাঁকে পরাভূত করতে পারেনি কোন যদুমন্ত্র। তাঁর দুআ ছিল অব্যর্থ। তিনি গরীবকে ভালবাসতেন। তিনি কাঙ্গালদের সাথে বসে খানা খেতেন। তিনি মিসকীনের সঙ্গে থাকতেন। তাঁর হাতের ছোয়ায় বকরীর বাটে দুধ চলে আসলো। তাঁর পদ স্পর্শে গমের সামান্য স্তুপ অনন্ত স্তুপে পরিনত হয়ে গেল। তিনি হাত লাগালেন তো ভাঙ্গা পা সুস্থ হয়ে গেল। তাঁর আংগুল থেকে জারী হল পানির নহর। তাঁর থুথুর বরকতে মৃত কূয়া পানিতে ভরে গেল। তাঁর দুআয় তৎক্ষণাৎ ঝরঝর করে নামল বৃষ্টি। তাঁর আহার থেকে তাসবীহের আওয়াজ বেরিয়ে আসলো। তাঁর উপর ঈমান আনলো জিন্নেরা। তাঁকে অর্পন করা হলো অদৃশ্য ভাণ্ডারের চাবি। তিনি নীরূপম। তিনি তিনিই; সৃষ্ট জগতে তাঁর কোন উপমা নেই। তিনি আমাদের নবী সায়্যিদুনা হযরত মুহাম্মদ মুস্তাফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
ড. মাওলানা মুশতাক আহমদ
মুহতামিম, জামিয়া শায়খ যাকারিয়্যা, কাঁচকুরা, উত্তরখান, ঢাকা।
খতীব ও শায়খুল হাদীস, তেজগাঁও রেল স্টেশন জামে মসজিদ ও মাদ্রাসা।
উপ-পরিচালক, ইসলামিক ফাউণ্ডেশন বাংলাদেশ
আরআর