সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
চিকিৎসকরা বছরে দুইবারের বেশি বিদেশ যেতে পারবেন না ঢাকা থেকে ভাঙ্গা হয়ে খুলনায় গেলো পরীক্ষামূলক ট্রেন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন প্রধান উপদেষ্টা: প্রেস উইং ধর্মীয় মূল্যবোধ ও সাম্যের ভিত্তিতে সংবিধান রচনার আহ্বান নেপালে ফের কুরআন প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে সৌদি আগামীকাল সংবিধান সংস্কার কমিশনে প্রস্তাবনা পেশ করবে ইসলামী আন্দোলন ‘আল্লামা আতহার আলী রহ. জীবন, কর্ম, অবদান’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন আগামীকাল হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কী রহ. : কে এই মহান ব্যক্তি হাজিদের স্বার্থ রক্ষায় সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ : ধর্ম উপদেষ্টা মহানবীকে সা. নিয়ে কটূক্তি করলে সংবিধানে শাস্তির বিধান রাখার প্রস্তাব পার্থের

লক্ষ আলেমের ফতোয়া জাতীয় ঐক্যের একটি বিশেষ পদক্ষেপ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

fumফতোয়া মানবজাতির জন্য কল্যাণকর ইসলাম ধর্মের এক বিশেষ বিধান বা ব্যবস্থা। বিশেষ পরিস্থিতি বা সংকটে বিশেষ করে মুসলমানদের মধ্যে এটা এক অভাবনীয় ফল দেয়। টনিকের মতো কাজ করে। ভারতবর্ষে মাওলানা হুসাইন আহমাদ মাদানীর ‘ইংরেজ খেদাও’ ফতোয়া ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তুলেছিল। এছাড়াও আরো অনেক বুযুর্গ ফতোয়া দিয়ে বহু সংকট ও সমস্যার মীমাংসা করেছেন। বাংলাদেশে সর্বশেষ সে ধরনের ফতোয়া দিয়েছিলেন হযরত মুহাম্মাদুল্লাহ হাফেজ্জি হুজুর। সেটা ছিল মুসলমানদের ‘তওবা’ বা আত্মশুদ্ধির ফতোয়া। সাড়া এসেছিল অকল্পনীয়। বাতিলের তখ্ত-তাউস কেঁপে উঠেছিল মুহূর্তেই। বর্তমান প্রজন্মের সামনে সে রকম আরেকটি ফতোয়া এসেছে যার কাছ থেকে, তিনি মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসউদ। স্বাক্ষর করেছেন লক্ষাধিক আলেম। আশা করা যাচ্ছে এটি বর্তমান প্রধান বৈশ্বিক সমস্যা জঙ্গিবাদ প্রতিহতের পাশাপাশি বাংলাদেশের সর্বশ্রেণি-পেশার মানুষকে এক কাতারে নিয়ে আসবে একাত্তরের সেই স্বাধীনতা যুদ্ধের মতো। কে এই সাহসী ফরীদ উদ্দীন মাসউদ? কী তার যোগ্যতা? একটি কথা নির্দ্বিধায় বলা যায়, তিনি বাংলাদেশের একজন প্রথম সারির লেখক, চিন্তাবিদ এবং সংগঠক। তার চিন্তার বাঁক, গভীরতা, দূরদর্শিতা নতুন প্রজন্ম আঁচ করতে একটু সময় নিচ্ছে এই যা; বিশেষ করে ফতোয়ার বিষয়টি। কী বলেছেন তিনি ফতোয়ায়? কেন বলেছেন? এতসংখ্যক আলেমইবা কেন তার সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হলেন? এসব প্রশ্নের উত্তর জানতে আওয়ার ইসলামের পক্ষ থেকে মুখোমুখি হয়েছিলেন তরুণ প্রজন্মের আরেক প্রতিনিধি জাকির মাহদিন

জাকির মাহদিন : জাতির চলমান এই বহুমুখী সংকটে আপনার শক্তিশালী অবস্থান, ব্যক্তিত্ব ও জ্ঞানকে জাতীয়/ইসলামি ঐক্যের কাজে কেন ব্যবহার করছেন না? কেন আপনি দেশের আলেম সমাজ, সুশীল সমাজ ও চিন্তাশীলদের নিয়ে বসছেন না?
ফরীদ উদ্দীন মাসউদ : ‘সুশীল সমাজ’ শব্দটা আমি পছন্দ করি না। এটাও ইসলামি সমাজ, ইসলামি অর্থনীতি ইত্যাদির মতো একটা শ্রেণিবদ্ধ ও সংকীর্ণ ধারণা। এসব ধারণাগুলোই মূলত সাধারণ মানুষদের থেকে আমাদের বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে। রাষ্ট্রের একশ্রেণির সুবিধাভোগী ব্যক্তি জনগণের প্রতি ঘৃণার বহির্প্রকাশ হিসেবে নিজেদের সুশীল সমাজ বলে পরিচয় দেয়। বড়জোর এক্ষেত্রে ‘নাগরিক সমাজ’ বলা যেতে পারে। আলেম সমাজসহ সবাই সে নাগরিক সমাজ এবং সাধারণ মানুষের অংশ। সে দিক থেকে সামগ্রিক জাতীয় ঐক্যের প্রাথমিক ভিত্তিটা স্থাপন করতে চিন্তাগত সূত্রে আমি নিজস্ব অবস্থান থেকে দীর্ঘদিন ধরেই কাজ করছি। এর ফলে সম্প্রতি একটি বৃহৎ ঐক্যের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। এটা অনেকটা সাম্প্রতিক লক্ষাধিক আলেমের ফতোয়াকে কেন্দ্র করে। ইসলামের নামে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, হত্যা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। এতে দেশ জাতি সবাই একমত। প্রায় এক লক্ষ বিশ হাজার আলেম এতে সম্মতি দিয়ে স্বাক্ষর করেছেন। রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিকভাবেও এ উদ্যোগটি ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। বহির্বিশ্বের অনেক সন্ত্রস্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান ফোন করে বলেছেন এ ফতোয়া প্রকাশের পর তারা অন্তরে শান্তি অনুভব করছেন। সুতরাং এটাকে আমরা জাতীয় ঐক্যের একটা ভিত বা বিশেষ পদক্ষেপ হিসেবে দেখতে পারি।

প্রথম পর্ব: সবকিছুর পূর্বে ‘ইসলামি’ শব্দ প্রয়োগ করে সামগ্রিক বিষয়কে সঙ্কীর্ণ করা হচ্ছে

জাকির মাহদিন : সরকার কিন্তু বলছে ঐক্য আছে। আমরাও মনে করি সাধারণ মানুষের মধ্যে একটা ঐক্য অবশ্যই আছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, সেই সাধারণ মানুষের ঐক্যের জায়গাটা দিন দিন আরো মজবুত হচ্ছে, না ভাঙছে? আর যারা সাধারণ মানুষ হিসেবে নিজেদের পরিচয় দিতে লজ্জাবোধ করে, সেসব সঙ্কীর্ণমনা দলীয় ও শ্রেণিগত লোকগুলোর ঐক্যের অবস্থা কি?
ফরীদ উদ্দীন মাসউদ : একাত্তরে সাধারণ মানুষের যে ঐক্য গড়ে উঠেছিল, সাধীনতা পরবর্তী সময়ে সে ঐক্যের জায়গাটি দিন দিন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাচ্ছে এতে কোনো সন্দেহ নেই। আর দলীয় ও শ্রেণিগত লোকদের ঐক্যের অবস্থা তো ভয়াবহ খারাপ। তবে বায়ান্ন, ঊনসত্তর ও একাত্তরের মতো বৃহৎ ঐক্যের আরেকটি হাওয়া এখন বইছে। এতে আসলে সময়েরও একটা বিশেষ ভূমিকা থাকে। সময় উপযুক্ত না হলে চেষ্টা ও যোগ্যতা দিয়েও অনেক সময় পারা যায় না। একাত্তরে হঠাৎ করে আমাদের সামনে যে ঐক্য দৃশ্যমান হয়েছিল তা কিন্তু অনেক আগে থেকেই চলছিল, কিন্তু সেটা দৃশ্যমান ছিল না। আবার তখন ঐক্য এগিয়েছিল খুব ধীরে ধীরে, কিন্তু উপযুক্ত সময় চলে আসার পর ঐক্য হয়ে গেছে অতি দ্রুত গতিতে। এমন দ্রুত গতিতে যে এটাকে থামানো বা অন্যমুখী করার ক্ষমতা কারো ছিল না। একাত্তরের আগেও পূর্ব পাকিস্তানে অনেক নেতৃত্ব এবং যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তি ছিলেন। শেরে বাংলা একেএম ফজলুল হক, সোহরাওয়ার্দী, ভূমিপুত্র নেতা মওলানা ভাসানী প্রমুখ। অথচ একাত্তরে নেতৃত্বে দৃশ্যমান হন শেখ মুজিবুর রহমান। এটা অনেকটা সমাজ ও সময়েরও ব্যাপার। সুতরাং ঐক্যের সেই প্রচেষ্টা এখনো আমাদের আছে। কিন্তু বিশেষ মুহূর্তে কে যে এগিয়ে আসবেন আমরা কেউ বলতে পারি না। দেখা যাক সময় কাকে জাতির সামনে পেশ করে। সমাজগর্ভে যখন নেতৃত্বের ‘গর্ভব্যথা’ শুরু হয় তখন সত্যিই একজন বেরিয়ে আসে। সেটা যে কেউ হতে পারে। আপনিও হতে পারেন।

farid_masud2_ourislam24

জাকির মাহদিন : সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে আপনারা ‘ফতোয়া’ দিয়েছেন। ফতোয়া আসলে কোন ক্ষেত্রে ও কোন পরিস্থিতিতে কার্যকর? ফতোয়া দিয়ে অন্যায় প্রতিরোধ এবং ঐক্য সৃষ্টির পরিবেশ পরিস্থিতি কি এখন আছে, না এটা ফতোয়ার অবমাননা?
ফরীদ উদ্দীন মাসউদ : ফতোয়া বৃহত্তর মানব সমাজ, রাষ্ট্র, পরিবেশ এমনকি ব্যক্তির খুঁটিনাটি বিষয় থেকেও বিচ্ছিন্ন কিছু নয়। এখানে ফতোয়ার বিষয়টি এসেছে একটি বিশেষ প্রেক্ষাপটে। ইসলামের নামে কেউ যেন জঙ্গিবাদী কার্যক্রম চালাতে এবং তরুণদের বিপথে চালিত করতে না পারে সে পথটি বন্ধ করতে। ফতোয়া সমাজের একশ্রেণির কাছে এখন নিন্দনীয়। ফতোয়ার প্রতি আগে মুসলমান এবং অন্যদের যে বিশেষ শ্রদ্ধাবোধ ছিল তা এখন নেই। নেই বলেই এর প্রয়োজন আরো বেশি। এটা অবমাননা নয়। আমরা ফতোয়াকে মাবকল্যাণে শান্তির জন্য ব্যবহার করে প্রমাণ করতে চাই ফতোয়ার প্রয়োজন ও কার্যকারিতা এখনো ফুরিয়ে যায়নি। এর জন্য অবশ্যই যুগের আলেমদের নিয়ে জাতীয় পর্যায়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এমন একটি ফতোয়া অপরিহার্য ছিল। এটি প্রকাশের পর স্বাভাবিক কারণেই কিছু জঙ্গি আরো ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে। তবে তা আমরা সাফল্যের সঙ্গেই মোকাবেলা করব ইনশাআল্লাহ। এটা একটা বিপ্লব। আমরা এর নামকরণ করেছি ‘মানবকল্যাণে শান্তির ফতোয়া’। ইসলাম ও কোরআন হাদিসের প্রতি একশ্রেণির মানুষের যে মনোবৈকল্য সৃষ্টি হয়েছে তা আশা করি এবার দূর হবে।

ফতোয়ার মূল চারটি লক্ষ নির্ধারণ করা হয়েছে। এক. ইসলাম মানবতাবাদী শান্তির ধর্ম, মানবজাতির নিরাপত্তার ধর্ম। মানবসেবার একটা বিশেষ ব্যবস্থা। হযরত মুহাম্মদ সা. প্রেমের নবি, শান্তির নবি, ভালোবাসার নবি। অথচ আজ অমুসলিমদের কাছে ইসলাম হয়ে উঠেছে এক আতঙ্কের নাম। নামের আগে ‘মুহাম্মদ’ শব্দটি দেখলে বড় বড় সাংবাদিকের ভিসাও অনেক দেশে আটকে যায়। তাই বিশ্ববাসীর নিকট প্রমাণ করা যে ইসলাম ও মুহাম্মদ কোনো আতঙ্কের নাম নয়, বরং ইসলাম শান্তি ও নিরাপত্তার ধর্ম। দুই. যেসব তরুণ-যুবক ভুল বোঝে আল্লাহর ভালোবাসায়, ইসলাম প্রতিষ্ঠার চেতনায় এবং বেহেশত পাবার আশায় জঙ্গিবাদে লিপ্ত হচ্ছে তাদের সামনে ইসলামের সঠিক রূপটি পেশ করা। যাতে তারা এ থেকে ফিরে আসে এবং নতুন করে কেউ না জড়ায়। আমরা তার আবেগকে সম্মান করি। সম্মান করি বলেই সে আবেগ যেন ভুল পথে পরিচালিত না হয় সে চেষ্টা করছি। তিন. আলেম-উলামা এবং মসজিদ মাদরাসাগুলোর হেফাজত করা। বিশাল সংখ্যক আলেম একত্রিত হয়ে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক ফতোয়া দিলে কোনো রাষ্ট্র বা সরকার বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনাকে কেন্দ্র করে আলেম-উলামা ও মসজিদ মাদরাসার দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তোলার পথ থাকবে না। (এটি এরই মধ্যে আমরা দেখতে পাচ্ছি)। চার. ইদানিং ইসলামের কয়েকটি পরিভাষা একশ্রেণির মানুষের কাছে নিন্দিত ও ঘৃণিত, সেটা দূর করা। এ শব্দগুলোর মর্যাদা পুনরুদ্ধার করা। ফতোয়া প্রকাশের পর বিশ্বের বড় বড় এজেন্সিগুলো ধন্যবাদ জানাচ্ছে। আন্তর্জাতিক মিডিয়াগুলো গুরুত্বসহ কাভারেজ দিচ্ছে।

ভিডিও

জাকির মাহদিন : যারা জঙ্গিবাদে লিপ্ত, আপনি কি মনে করেন আসলেই তারা ইসলামি চেতনা থেকে এসব করছে? অনেকে তো বলছেন এটা বিশেষ গোষ্ঠীর সৃষ্টি। ইসলামের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। দ্বিতীয়ত, জ্ঞানগত কার্যক্রম ও ব্যাপক ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ ছাড়া শুধু ফতোয়ার দ্বারা কি জঙ্গিবাদে লিপ্ত তরুণদের মানসিকতা ও দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটবে?
ফরীদ উদ্দীন মাসউদ : আমরা ফতোয়ার যে বই প্রকাশ করেছি তাতে ইসলামের যথেষ্ট ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ এবং রেফারেন্স আছে। কেউ চাইলে সে রেফারেন্সগুলো পড়ে আরো বিস্তৃত ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ পেতে পারে। সুতরাং আমরা আশা করতে পারি এর মানবিক দিকটার দ্বারা চিন্তা-চেতনায় আলোড়ন সৃষ্টি হবে।

জাকির মাহদিন : এটা করতে গিয়ে আপনাকে বিশাল খরচের বোঝা বহন করতে হচ্ছে না?
ফরীদ উদ্দীন মাসউদ : হ্যাঁ, তবে খরচের ব্যাপারটা আমরা অনেককে ভাগ করে দিয়েছি। কারো একা বা দুয়েকজনের পক্ষে এটা সম্ভব না। আরো সম্ভব হয়েছে এ কারণে যে আলেমগণ এ থেকে কোনো আর্থিক লাভ দূরের কথা, অতিরিক্ত খরচও নেননি। অনেকে নিজ খরচে আবার অনেকে সামান্য খরচে স্বতঃস্ফূর্তভাবে করছেন।

জাকির মাহদিন : ধর্মবিরোধী বিশেষ কোনো ইস্যুকেন্দ্রিক আলেমগণের স্বল্পস্থায়ী জাগরণ বা ঐক্য বাংলাদেশে সবসময়ই হয়ে আসছে। কিন্তু দেশ জাতি ও ধর্মের মৌলিক ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদি তেমন ঐক্য কল্পনাও করা যাচ্ছে না। যদি দীর্ঘমেয়াদি ঐক্যের জন্য এ ধরনের উদ্যোগ, খরচ, স্বতঃস্ফূর্ততা, আসা-যাওয়া, যোগাযোগ আলেমগণের মাঝে চলত তাহলে কি আমরা আজ আরো সুশৃঙ্খল ও ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারতাম না?
ফরীদ উদ্দীন মাসউদ : তা ঠিক। তবে তারপরও কোনো একটা বিন্দু থেকে সেই ঐক্যপ্রক্রিয়াটা আমাদের শুরু করতে হবে। প্রথমেই যদি মূল বিষয় নেয়া হয় যাতে মতবিরোধ প্রবল, সেক্ষেত্রে চেষ্টা এগোয় না। সাম্প্র্িরতক ফতোয়াকে কেন্দ্র করে লক্ষাধিক আলেমের যে সম্মতি তাতে অন্তত পঞ্চাশ হাজার আলেম পাওয়া যাবে নিশ্চিত। এটা কি একটা বিশাল ঐক্য নয়? বাকিটাও ধীরে ধীরে হবে।

farid_masud3_ourislam24

জাকির মাহদিন : এই পঞ্চাশ হাজার আলেমের ঐক্যটা শুধু আলেমদের মধ্যে সীমিত না রেখে একটি বিশাল জাতীয় ঐক্য হিসেবে শীঘ্রই রূপান্তরিত হওয়ার আশা করতে পারি?
ফরীদ উদ্দীন মাসউদ : অবশ্যই। ইনশাআল্লাহ।

জাকির মাহদিন : আপনার প্রতিষ্ঠানের নাম ‘ইকরা বাংলাদেশ’ কেন? ‘ইকরা’ সর্বজনীন। বিশ্বজনীন। বাংলাদেশ সীমিত। কুরআনের একটি ব্যাপক অর্থবোধক শব্দকে এখানে সীমিত করা হলো না?
ফরীদ উদ্দীন মাসউদ : বরং সবচেয়ে সুন্দর এটাই। কারণ বৈশ্বিক পর্যায়ে কিছু করতে গেলেও আপনাকে একটি নির্দিষ্ট জায়গা থেকেই শুরু করতে হবে। সেই জায়গাটি বিশ্ববাসীর কাছে পরিচিত করাতে হবে। ইকরা শব্দটি শুধু একটি আভিধানিক শব্দ নয়, এটি ব্যাপক অর্থবোধক। একটা হচ্ছে ভাষাগত ও বৈষয়িক শিক্ষা। আরেকটা প্রকৃত শিক্ষা। ইকরা শব্দটি যা ইঙ্গিত করছে। কিছু শিক্ষা মানুষকে পশু বানায়, আবার কিছু শিক্ষা মানুষকে মনুষ্যত্ব শেখায়। বাংলাদেশের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইকরা শব্দটি ব্যবহার করার মানে হচ্ছে, এই প্রতিষ্ঠানে মনুষ্যত্বের শিক্ষার বিষয়টি সুস্পষ্ট করা। ‘ইকরা বাংলাদেশ’ শব্দে সূক্ষ্ম ও ব্যাপক চিন্তার সমন্বয় ঘটেছে। এ দুটি শব্দেই আমরা আমাদের জাতটা চেনাচ্ছি।

আরো পড়ুন: খতীবদের প্রতি আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদের খোলা চিঠি

আরআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ