একাত্তরের ২০শে জানুয়ারি।
কলাভবন থেকে বেরিয়েছে ছাত্রজনতার মিছিল।
প্রগতির মিছিল, প্রতিবাদের মিছিল, মুক্তির মিছিল।
এগিয়ে চলছে মেডিক্যালের দিকে।
আমরা যাবো
সিপাহি বিদ্রোহের স্মৃতিবাহী ভিক্টোরিয়া পার্ক।
বৃটিশ কাউন্সিলের সামনে আসতেই
শুনলাম তরুণী কণ্ঠ, ’হুদা, শ্লোগান ধরো’।
মেয়েদের মিছিল দ্রুত আমাদের কাতারে এসে মিশেছে।
ঘাড় ফেরাতেই দেখি, শাদা শাড়ির এক শাদা তরুণী।
খাপখোলা তলোয়ারের মতো শাণিত আর তরঙ্গিনী।
মুক্তিকামী বাঙালি তরুণ-তরুণীর যুযুধান যাত্রা
ঢাকার রাজপথকে বানিয়েছে
গঙ্গা-পদ্মা-যমুনার মিলিত ধারা।
বেবীর কণ্ঠে শ্লোগানের স্বর,
’পদ্মা-মেঘনা-যমুনা’ :
আমাদের সম্মিলিত উত্তর,
‘তোমার আমার ঠিকানা’।
সেই কিংবদন্তিলীন পদ্মা-মেঘনা-যমুনা
আর তার মিলিত মোহনার নাম
আজকের স্বাধীন সার্বভৌম ভাষারাষ্ট্র
জনগণতান্ত্রিক বাংলাদেশ।
‘যতদূর বাংলাভাষা, ততদূর এই বাংলাদেশ’।
কণ্ঠে গগনবিদারী শ্লোগানধারী
সেদিনের সেই শাদা শাড়ির শাদা তরুণী
আমাদের রাজপথের লড়াকু মুক্তিদূত
বেবী মওদুদ।
‘লড়াই লড়াই লড়াই চাই,
লড়াই শেষে তোমাকে চাই।’
সেদিন থেকে
আমার কাছে বেবী চিরদিন
বহমান বাঙালির চিরকালীন
সংগ্রাম, স্বাধীনতা ও শান্তির প্রতীক।
বেবী, তুমি আজ আমাদের মধ্যে নেই।
আমার চেতনালোকে
তোমার চেতনা তবু উড়ছেই।
বেবী, আজ তোমার দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী।
সহকর্মী সহমর্মী অামি, তোমার উদ্দেশে লিখি
সামান্য এই স্মৃতির প্রণতি।
তুমি বাঙালির ভূমিকন্যা, অসামান্যা, শ্রীমতি প্রগতি।
এসএস