ঢাকা : দরিদ্র জনগোষ্ঠীর টিআর ও কাবিখা প্রকল্পে ‘চুরির’ জন্য সাংসদসহ অন্যান্য জনপ্রতিনিধি ও আমলাদের দায়ী করে বক্তব্য দেয়ায় তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর সমালোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘উনি (ইনু) সবাইকে চোর বানিয়েছেন। সবাই খেলে উনিও খেয়েছেন।’
সোমবার (২৫ জুলাই) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এক অনির্ধারিত আলোচনায় ওই সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী। বৈঠকসূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
গতকাল রোববার দুপুরে ঢাকায় পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনে এক অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি তো এমপি, আমি জানি টিআর কিভাবে চুরি হয়। সরকার ৩০০ টন দেয়, এর মধ্যে এমপি সাহেব আগে দেড়শ টন চুরি করে নেয়। তারপর অন্যরা ভাগ করে। সব এমপি করে না। তবে এমপিরা করেন।’
অনলাইন পোর্টালগুলোতে ওই সংবাদ প্রকাশিত হলে এ নিয়ে রাজনীতিকসহ বিভিন্ন মহলে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।
পরে রাতে তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর বক্তব্যে টিআর-কাবিখা প্রসঙ্গে প্রকাশিত সংবাদের বিষয়ে তার দৃষ্টি আকৃষ্ট হলে, এ বিষয়ে মন্ত্রী কোনো বিভ্রান্তি বা ভুল বোঝাবুঝি হলে বা কেউ এতে দুঃখ পেয়ে থাকলে তা অনভিপ্রেত বলে জানান এবং সেক্ষেত্রে নিজেও দুঃখপ্রকাশ করেন।’
বিবৃতিতে ইনু বলেন, ‘আমি নিজে একজন সংসদ সদস্য হিসেবে মাননীয় সংসদ সদস্যবৃন্দসহ সকল জনপ্রতিনিধিদের আন্তরিকভাবে সম্মান করি এবং সেই সম্মান অক্ষুণ্ন রয়েছে। তারপরও কেউ যদি অনভিপ্রেতভাবে দুঃখ পেয়ে থাকেন, সেজন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত।’
সোমবারের বৈঠকে মন্ত্রিপরিষদের এক সদস্য বলেন, ‘আমরা এক ছটাকও টিআর-কাবিখার গম খাই না। এটা উনি বলতে পারেন না।’
জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি খালেদা জিয়া ও তারেক সম্পর্কে বলতে গিয়ে ওই কথা বেখেয়ালে বলে ফেলেছি।’
সাথে সাথে মন্ত্রিপরিষদের আরেক সদস্য বলেন, ‘কিসের বেখেয়াল? আপনি এটা বুঝে-শুনেই বলেছেন।’ এর পর ‘সরি’ বলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।
বৈঠকে সরকারপ্রধান মন্ত্রীদের বলেন, ‘আপনারা দুর্নীতির কথা বললে বিএনপির আমলের দুর্নীতির কথা বলবেন। এখন দুর্নীতির কথা বললে সেটা সরকারের বিরুদ্ধেই যায়।’
এ সময় সরকারের অর্জনের কথা তুলে ধরতে মন্ত্রীদের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এআর