ঢাকা: পবিত্র মসজিদে নববী, হলি আর্টিজান, ফ্রান্স-সহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাসী হামলা ও ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদ জামাত-এর গ্রান্ড ইমাম আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদকে হত্যাচেষ্টার প্রতিবাদে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামা ঢাকা মহানগরীর সহসভাপতি ও রামপুরা বাইতুল মারুফ জামে মসজিদের খতীব শাইখুল হাদীস আল্লামা ইয়াহইয়া মাহমূদ বলেন, মসজিদের খতীবগণ কোকিলপাখি নন যে কারো বুলি তারা প্রতি শুক্রবার আওড়াতে থাকবেন। অনেক যাচাই বাছাই করে খতীব সাহেবদের নিয়োগ দেওয়া হয়। তাদের উদ্দেশ্যে বিজ্ঞ আলেমদের পরামর্শ সাপেক্ষে কিছু থিম বলে দেওয়া যেতে পারে।
আজ ২৩ জুলাই সকাল ১১টায় বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামা ঢাকা মহানগরীর উদ্যোগে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনী মিলনায়তনে আল্লামা ইয়াহইয়া মাহমূদ এসব কথা বলেন।
ইফার মহাপরিচালক সামীম মোহাম্মদ আফজাল ইসলাম বিষয়ে জান্তা কেউ নন উল্লেখ করে ইয়াহইয়া মাহমূদ বলেন, সামীম মোহম্মদ আফজাল খুৎবা নিয়ন্ত্রণ ও খতিব কাউন্সিল গঠনের যে উদ্যোগ নিয়েছেন তা আলেমদের মধ্যে আবেদন তৈরি করতে চরমভাবে ব্যর্থ হবে। ইমাম সম্মেলনে ব্যালে ড্যান্স মঞ্চায়নকারী ইফা ডিজির উপর এ দেশের আলেমদের কোনো আস্থা নেই।
মাওলানা মাহমুদ বলেন, মানব কল্যাণে শান্তির ফতওয়া দিয়ে মুজাদ্দিদে মিল্লাত আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ দেশ, জাতি, সরকার এবং বিশেষত উলামায়ে কেরামের পক্ষ থেকে গুরুদায়িত্ব পালন করেছেন। ফতোয়া প্রকাশের ক্ষেত্রে যে মৌলিক বিষয়গুলো তিনি জাতির সামনে উপস্থাপন করেছেন তা হলো-
এক. ইসলামের প্রকৃতরূপ তুলে ধরতে হবে অর্থাৎ উগ্রতা নয় সহিষ্ণুতা, শত্রুতা নয় ভালোবাসা, হিংসা নয় সহমর্মিতা, প্রতিশোধপরায়ণতা নয় ক্ষমাশীলতা এবং বিদ্বেষ নয় সহৃদয়তা।
দুই. যারা এখনো উগ্রবাদিদের প্রচারণায় বিভ্রান্ত হয়নি তাদেরকে রক্ষা করা।
তিন. বিভ্রান্তির শিকার তরুণদের সে পথ থেকে ফিরিয়ে আনা।
চার. মাদরাসা, মসজিদ এবং আইম্মা ও উলামায়ে কেরাম যে জঙ্গি বা সন্ত্রাসী নয় তা স্পষ্ট করা।
পাঁচ. সাধারণ মানুষের হৃদয়ে ইসলামের পরিভাষাগুলোকে যথার্থ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করা।
সমগ্র বিশ্বে এ আল্লামা মাসঊদের ফতোয়া আলোড়ন সৃষ্টি করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমেরিকার কংগ্রেস, হাউস অব কমন্স ইংল্যান্ড, বাংলাদেশ পার্লামেন্টসহ সংবাদটি প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাহায্যে এটি সাড়া জাগাতে সক্ষম হয়েছে। আজ সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যে জনগণ স্বতুস্ফূর্তভাবে এগিয়ে এসেছে- এই ক্ষেত্রেও উক্ত ফতোয়াটির ভূমিকা অনস্বীকার্য।
সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মূলোৎপাটনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার কর্মসূচি
১. স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, মসজিদ ও বিশ্ব বিদ্যালয়গুলোতে সচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ। ২. জঙ্গিবাদবিরোধী জাতীয় সম্মেলন আহ্বান। ৩. আলেম, বুদ্ধিজীবী ও সমমনা সংগঠনগুলোকে নিয়ে সমন্বিত কর্মসূচি গ্রহণ করা। ৪. ২৯ জুলাই ২০১৬ শুক্রবার জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ দিবস উদযাপন। ৫. জেলায় জেলায় একলক্ষ আলেম, মুফতি ও ইমামগণের স্বাক্ষর সম্বলিত ফতোয়া ও জঙ্গিবাদবিরোধী স্মরকলিপি প্রদান করা।
আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকম /আরআর