মুফতি জাহিদুজ্জামান : মানুষ মহান আল্লাহ তায়ালার সৃষ্টি। সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি। মানুষের প্রথম এবং সর্বপ্রথম দায়িত্ব হলো মহান আল্লাহ তায়ালার হক আদায় করা। মানবজাতিকে শ্রেষ্ঠ জাতি হিসেবে সৃষ্টি করার পর পৃথিবীতে প্রেরণ করা হয়েছে এবং অসংখ্য-অগণিত নেয়ামত দ্বারা পরিপূর্ণ করা হয়েছে মানবজীবন। মহান আল্লাহ প্রদত্ত অসংখ্য-অগণিত নেয়ামতে পরিপূর্ণ এ ইহজগতের পর আরো একটি জগৎ রয়েছে আমাদের জন্য। সেটি পরকালীন জগৎ। সে জগৎই আমাদের প্রকৃত জগৎ বা আবাসস্থল। পৃথিবী নামের এই জগতে কেবলই পরীক্ষা দেয়ার জন্য প্রেরিত হয়েছি আমরা মানুষ। সর্বশ্রেষ্ঠ মানবজাতি। ইহজীবনের ভালো-মন্দের প্রতিদানস্বরূপ পরজীবনে ভালো-মন্দ প্রাপ্ত হব আমরা।
এজন্য আমাদের কী করণীয় এবং কী বর্জনীয়, তা বলে দিয়েছেন পরম দয়ালু প্রভু। জানিয়ে দিয়েছেন আমাদের প্রস্তুতি পর্বের প্রকৃত কাজ কি। মহান স্রষ্টা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা এবং তার হুকুম-আহকাম ও আদেশ-নিষেধ মেনে চলাই মূল উদ্দেশ্য। আর এসব আলোচনার সর্বাগ্রে যে বিষয়টি চলে আসে, তা হলো- বান্দার প্রতি মহান আল্লাহর কিছু হক রয়েছে। তাই প্রত্যেক বান্দার উচিত সর্বপ্রথম মহান আল্লাহর হক আদায়ে সচেষ্ট হওয়া। মানুষের দায়িত্বে মহান আল্লাহর মোট চারটি হক রয়েছে।
এক. কোরান-হাদিসের আলোকে মহান আল্লাহর সত্তা ও গুণের প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন করা।
দুই. যে সব আকিদা-বিশ্বাস, আমল-আখলাক, লেনদেন, কাজ-কারবার মহান আল্লাহর পছন্দ সে সব গ্রহণ করা।
তিন. মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি ও ভালোবাসাকে সবকিছুর ওপর প্রাধান্য দেয়া।
চার. মানুষের প্রতি ভালোবাসা, শত্র“তা এবং দয়া-মায়া সবকিছুই মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশে করা।
এই চারটি হক যথাযথভাবে পালন করা প্রত্যেকজন মানুষের জন্য আবশ্যিক। কারণ আল্লাহ মহানই আমাদের একমাত্র স্রষ্টা- এ কথার মধ্যে কোনো সন্দেহ বা ভ্রান্ত তথ্য নেই। সুতরাং স্রষ্টার হক আদায় করাই সৃষ্টির প্রথম দায়িত্ব হওয়া উচিত। তাই আমাদের সবার উচিত মহান আল্লাহর এই চারটি হক আদায়ের ব্যাপারে কোনো প্রকার গাফিলতি না করা। মহান আল্লাহ আমাদের তার হক যথাযথভাবে আদায়ের মাধ্যমে তার সন্তুষ্টি অর্জন করার তাওফিক দান করুন।