নিজস্ব প্রতিবেদক : ফারাজ হোসেন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হলি আর্টিজানে গিয়েছিলেন তার দুইজন বন্ধু নিয়ে। নিজে পড়াশোনা করেন দেশের বাইরে। সঙ্গের দুই বন্ধুও বাইরেই থাকেন। ছুটি কাটাতে দেশে ফেরা এই তরুণ বন্ধুত্ব বাঁচাতে গিয়ে মারা গেছেন গুলশানের সন্ত্রাসী হামলায়।
সন্ত্রাসীরা আর্টিজানে ঢুকেই হিজাব পরিহিত কয়েকজন নারীকে ছেড়ে দেন। যারা কুরআন তেলাওয়াত করতে পারেন, তাদেরও ছেড়ে দেন সন্ত্রাসীরা।
ফারাজ নামাজ পড়তেন। তেলাওয়াত করতে পারেন কুরআনও। তাকেও তাই ছেড়েই দিয়েছিলো সন্ত্রাসীরা। কিন্তু বাংলাদেশে বেড়াতে আসা দুই বন্ধু পশ্চিমা পোশাক পরা। তাদের একজন তারুশি, ভারতীয়, মুসলিম নন। অন্যজন অবন্তিকা, কুরআন তেলাওয়াত করতে পারেন না। ফারাজকে ছেড়ে দিলেও তাদের ছাড়েনি সন্ত্রাসীরা।
বন্ধুদের সঙ্গে থেকে যাওয়ারই সিদ্ধান্ত নেন ফারাজ। তিনি সন্ত্রাসীদের জানিয়ে দেন, যেতে হলে দুই বন্ধুকে নিয়েই যাবেন। না হলে মরবে তাদের সঙ্গেই। শেষ পর্যন্ত সন্ত্রাসীদের হাতে নির্মম মৃত্যুই বরণ করতে হয় ফারাজ হোসেনকে।
বন্ধুদের মৃত্যুর মুখে ফেলে রেখে চলে আসার মতো ভীতু ছিলেন না ফারাজ। শেষ পর্যন্ত সন্ত্রাসীদের হাতেই মৃত্যুই বরণ করতে হয় তাকে। গুলশানের হলি আর্টিজানে সন্ত্রাসীদের ধারালো অস্ত্রের কোপে প্রাণ হারানো ২০ জনের একজন ফারাজ। তার সঙ্গে আরো দুজন বাংলাদেশি প্রাণ হারান। একজন তার বন্ধু অবন্তিকা অন্যজন শিল্পকলা-ব্যক্তিত্ব ইশরাত আকন্দ।
সন্ত্রাসীদের ঘৃণ্য আক্রমণে ফারাজ প্রাণে মরে গেলেও বন্ধুত্বের স্বর্গীয় সম্পর্কের রসায়নে নিজের নামটা স্বর্ণাক্ষরে লিখে গিয়েছেন তিনি। ফারাজ প্রমাণ করেছেন, বন্ধুত্বের মতো অকৃত্রিম সম্পর্কের জন্য মহামূল্যবান প্রাণটাও বিলিয়ে দেয়া যায়।
আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর/ওএস