ঢাকা: ঢাকার গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরায় ২০জন বিদেশিকে জবাই করে হত্যা করেছে যে সাত জিহাদি তারা সবাই একটি স্থানীয় জঙ্গি সংগঠনের সদস্য। ইসলামিক স্টেটের সাথে তাদের কোনো যোগাযোগ নেই।
এমন দাবি করেছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি জানাচ্ছে এই খবর।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেছেন, হামলাকারীরা সবাইই বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া উচ্চ শিক্ষিত তরুণ। তাদেরকে ধনী পরিবারের সন্তান হিসেবেও বর্ণনা করেন আসাদুজ্জামান খান।
তিনি বলেন, এরা কেউই কখনোই মাদ্রাসায় পড়তে যায়নি। ইসলামিক জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়া আজকাল একটা ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে।
এরই মধ্যে হামলাকারীদের ছবি প্রকাশ করেছে ইসলামিক স্টেটের বার্তা সংস্থা আমাক।
আইএসপিআর থেকে হামলাকারীদের মৃতদেহের যে ছবি সরবরাহ করা হচ্ছে সেগুলোর সাথে আমাকে প্রকাশিত জিহাদিদের চেহারা অনেকাংশেই মিলছে।
এর আগে শুক্রবার রাতেই আমাকের বরাত দিয়ে জঙ্গি কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণকারী ওয়েবসাইট ‘সাইট’-এ খবর বেরিয়েছিল হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁর হামলার দায়িত্ব আইএস নিয়েছে এবং জিহাদিরা ২০ জনকে হত্যা করেছে।
পরে শনিবার সকালে সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযানের পর হলি আর্টিজানে ২০ জনেরই জবাই করা মৃতদেহ পাওয়া যায়।
এমনকি কমান্ডো অভিযানের আগেই হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁর ভেতরের হত্যাযজ্ঞ এবং জবাই করা মৃতদেহের ছবি প্রকাশ করা হয় সাইটে।
এদের মধ্যে সতেরো জন বিদেশি, দুজন বাংলাদেশি এবং একজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক।
কমান্ডো অভিযানে ছয়জন হামলাকারী নিহত হলেও একজনকে জীবিত আটক করা হয়েছে। তাকে সেনাবাহিনীর গোয়েন্দারা এখন জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
এদিকে, ফেসবুকে কিছু তরুণের প্রোফাইল নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। এসব প্রোফাইলের কোনও কোনটির মালিকের সঙ্গে হামলাকারীদের চেহারার মিল পাওয়া যাচ্ছে।
অন্তত তিনজনের প্রোফাইল ঘেঁটে দেখা গেছে তারা ঢাকায় নামকরা ইংরেজি মাধ্যম স্কুল ও শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠ গ্রহণ শেষে মালয়েশিয়ার মনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে গিয়েছিলেন।
আইএসপিআর এবং ইসলামিক স্টেটের বার্তা সংস্থা আমাক হামলাকারীদের যে ছবি প্রকাশ করেছে সেইসব ছবির সাথে এই প্রোফাইলের মালিকদের চেহারা মিলে যাচ্ছে।
অন্তত একজন প্রোফাইলের মালিকের পিতার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তার অফিসের ফোনটিও কেউ ধরেন নি।
আরেকজনের প্রোফাইল আজ ভোররাত তিনটে পর্যন্ত বহুবার শেয়ার হয় ফেসবুকে। তাদের পিতামাতা, আত্মীয়-পরিজন, বন্ধু-বান্ধবেরও ছবিও বহুবার শেয়ার হয়। এরপর থেকেই প্রোফাইলটি অকার্যকর দেখা যায়।
এমনকি তার পরিবারের সদস্যদের প্রোফাইলও অকার্যকর দেখা যায়। কিন্তু এরাই গুলশানের হামলাকারীরা কী না সেটা শতভাগ নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হামলাকারীদের যে নাম প্রকাশ করেছে তার সাথে এইসব প্রোফাইল ধারীদের নামও মিলছে না।
সূত্র: বিবিসি