আওয়ার ইসলাম ডেস্ক : গুলশান হামলায় নিহত ৬ জঙ্গির ছবি প্রকাশ পাওয়ার পর ধীরে ধীরে তাদের পরিচও পাওয়া যাচ্ছে। শনিবার আইএস টুইটারে হামলাকারীদের ছবি প্রকাশ করার পর পুলিশও তাদের ছবি প্রকাশ করেন। সেসব ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে বের হয়ে আসতে থাকে তাদের পরিচয়।
গুলশানে হামলাকারীদের একজন মীর সামিহ মোবাশ্বির। তিনি স্কলাস্টিকা স্কুলের ছাত্র। দীর্ঘ দিন ধরেই তিনি নিখোঁজ ছিলেন। গত ৭ মার্চ দেশের গণমাধ্যমে তার নিখোঁজের খবর প্রকাশ হয়। সে সময় পুলিশ কর্মকর্তারাও বলেছিলেন, তারা সামিহ’র অবস্থান জানা ও উদ্ধারের চেষ্টা করছেন।
সামিহ স্কলাস্টিকা স্কুল থেকে ও-লেভেল সম্পন্ন করেছে। এ লেভেলে ভর্তি হওয়ার জন্য সে গুলশানের এমিনেন্স কোচিং সেন্টারসহ দুটি কোচিং সেন্টারে পড়ছিল। পরিবারের সঙ্গে সে বনানী ডিওএইচএসের ৫ নম্বর সড়কের ৬৮/এ বাসার ৫/বি ফ্ল্যাটে থাকতো। গত ২৯ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৩টার দিকে সে কোচিংয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে গাড়িতে করে বাসা থেকে বের হয়। যানজট থাকায় কোচিং সেন্টারের আগেই গাড়ি থেকে নেমে যায়। পরে সন্ধ্যা ৬টার দিকে গাড়িচালক জুয়েল তাকে কোচিং থেকে আনতে গেলে তাকে আর পাওয়া যায়নি। পরে সামিহ’র বাবা মীর এ হায়াত কবীর ওই দিনই গুলশান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (নম্বর ১৮৪৮) দায়ের করেন। পুলিশ সামিহ’র খোঁজ করতে গিয়ে গুলশান এলাকার সিসিটিভি ফুটেজে দেখতে পান সামিহ গাড়ি থেকে নামার পর একটি রিকশা নিয়ে বনানীর ১১ নম্বর সড়কের দিকে চলে যাচ্ছে।
[caption id="attachment_4780" align="alignright" width="262"] অভিনেতা ফেরদৌসের সঙ্গে নিবরাস[/caption]
গুলশানে হামলাকারী আরেকজনের নাম নিবরাস ইসলাম। আইএসের পতাকার সামনে পোজ দেওয়া ছবি প্রকাশের পর সেই ছবির সঙ্গে চেহারার মিল পাওয়া যায় ঢাকার এক যুবকের। তার ফেসবুক বন্ধুরাই এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তারা বলছেন, এই যুবকই নিহতদের মধ্যে একজন। তবে তার পরিবার কিংবা বিশ্বস্ত কোনো সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া যায়নি যে নিহতদের মধ্যে এই যুবকও ছিল কিনা। ফেসবুকে অনেকে সাইটে প্রকাশিত ছবির পাশে যুবকের ফেসবুকে টাইমলাইন থেকে নেওয়া ছবি পাশাপাশি দিয়ে স্ট্যাটাসও দিয়েছেন। তাদের তথ্য যদি সত্য হয়, তাহলে ফেসবুক প্রোফাইল অনুযায়ী ওই যুবকের নাম নিবরাস ইসলাম।
ফেসুবকে তিনি নিজেকে মালয়েশিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ বলে পরিচয় দিয়েছেন। তিনি এর আগে সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনাও করেছেন। এর আগে তিনি ঢাকার নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে হামলাকারীদের পাঁচজনই চিহ্নিত জঙ্গি বলে আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক জানিয়েছেন। পুলিশ তাদের খুঁজছিল বলেও জানিয়েছেন তিনি।
গুলশানে জঙ্গি হামলা পরিচালনাকারী দলের আরেক সদস্য রোহান ইমতিয়াজ। সেও দীর্ঘদিন যাবত নিখোঁজ ছিল। তার পরিবার বিভিন্নভাবে তাকে খোঁজ করছিল। তার বাবার নাম ইমতিয়াজ খান বাবুল। তিনি বিগত ঢাকা মহানগর উত্তর সিটি কর্পরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেছেন বলে জানিয়েছে পূর্বপশ্চিমবিডি ডটকম।
রোহান ইমতিয়াজের মা’ও চাকরিজীবি। তিনি স্কলাস্টিকা স্কুলের শিক্ষিকা।মা-বাবার একমাত্র পুত্র সন্তান রোহানের দুই বোন আছে, এবং তারা মোহাম্মদপুরে বসবাস করেন বলে জানা গেছে।
নিহত বাকি দুই জনের পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি।
আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকম /আরআর