জাকির মাহদিন : ২৫ জুন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা। রোযামুখে একঝাঁক নবীন-প্রবীণ ইসলামি লেখক-সাহিত্যক-সাংবাদিকের মিলনমেলা জাতীয় প্রেসক্লাবের তৃতীয় তলায়। ২০ দিনব্যাপী একটি লেখালেখি কর্মশালা শেষে ‘বাংলাদেশ ইসলামি লেখক ফোরামের’ পূর্বঘোষিত ‘দোয়া ও ইফতার মাহফিল।’ উপস্থিত মাসিক আদর্শ নারীর সম্পাদক আবুল হাসান শামসাবাদী, উপস্থিত সিনিয়র সাংবাদিক-লেখক শরীফ মুহাম্মদ, লেখক ফোরামের সভাপতি মুফতি এনায়েতুল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দীন বাবর, আওয়ার ইসলাম ২৪ ডটকমের সম্পাদক মুফতি হুমায়ুন আইয়ুব, নির্বাহী সম্পাদক রোকন রাইয়ান, কলরব শিল্পীগোষ্ঠীসহ সাহিত্য-সংস্কৃতির স্বপ্নবাজরা।
চলছে একের পর এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্য। অডিটরিয়ামে পিনপতন নিরবতা। সঞ্চালক মুনিরুল ইসলাম ঘোষণা করলেন, সম্প্রতি সাড়া জাগানো ইসলামি নিউজপোর্টাল ‘আওয়ার ইসলাম টুয়েন্টিফোর ডটকমের’ সম্পাদক হুমায়ুন আইয়ুব এখন বক্তব্য পেশ করবেন। এরপরই আকাশ কালো করা এক সংবাদ, কিংবদন্তি লেখক মাওলানা মুহিউদ্দীন খান আর নেই! মুহূর্তেই উপস্থিত প্রতিটি চোখের কোণায় এক নদী জল। বুকে নিরব হাহাকার! বক্তা আড়ষ্ট। কিছুক্ষণ আগেও কয়েকবার এই নামটি এ মাইকেই উচ্চারিত হয়েছে দোয়ার সূত্রে। সঞ্চালক আবার মাইক হাতে কিছু বললেন। এরপর বক্তা দাঁড়িয়ে কাঁপাকণ্ঠে বললেন, ‘সময়ের সূর্য সন্তানরা বিদায় নেন না, বারবার ফিরে আসেন। তিনি চার বছর আগে আমাদের হাতে কলম তুলে দিয়ে বলেছিলেন, ‘ইহা আমানত’; তোমাদের কাছে রেখে গেলাম।’
কে এই মাওলানা মুহিউদ্দীন খান! হ্যাঁ, বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বাধিক জনপ্রিয় বাংলা সাহিত্য পত্রিকা ‘মাসিক মদিনা’র সম্পাদকের কথাই বলছি। ‘জীবনের খেলাঘরে’ তার আরেক রহস্য, একটি আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ। যার প্রতিটি অক্ষরে স্বর্ণ-রোপা, হীরা-জহরত চিকচিক করছে। তিনি কী ছিলেন তা না বলে সম্ভবত বলতে সহজ হবে তিনি কী ছিলেন না।
মাসিক মদিনা সম্পাদনার পাশাপাশি অনুবাদ করেছেন বিখ্যাত তাফসিরগ্রন্থ মা’রেফুল কুরআন। বাংলাদেশের আজকের এক বিখ্যাত ও জনপ্রিয় সরকারি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি একজন জাতীয় রাজনীতিক এবং আন্তর্জাতিক সংগঠক। তার মৃত্যুতে বিশ্ববাসী হারালো এক অনন্য কলম-যোদ্ধাকে। তিনি কি একটি নক্ষত্র, না সম্পূর্ণ এক আকাশ! শুধুই কি আকাশ; না আকাশের চেয়েও বড়! এই শূন্যতা পূরণ হবার নয়।
লেখক : গবেষক ও কলামিস্ট; সম্পাদক : পাক্ষিক দেশ দর্শন
আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকম /আরআর