ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ : আল্লাহ মেহেরবান। তিনি আমাদের উপর কুরআন নাজিল করেছেন। কুরআনের মাধ্যমেই অন্ধ মানুষগুলো খুঁজে পেয়েছিল আলোর পথ। জাহেলিয়াত পলিণত হয়েছিল নূরানিয়াতে।
আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, ‘অবশ্যই তোমাদের কাছে আল্লাহর পক্ষ থেকে আলো ও সুস্পষ্ট গ্রন্থ এসেছে। এর মাধ্যমে আল্লাহ তাদেরকে শান্তির পথ দেখান, যারা তাঁর সন্তুষ্টির অনুসরণ করে এবং তাঁর অনুমতিতে তিনি তাদেরকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে বের করেন। আর তাদেরকে সরল পথের দিকে হিদায়াত দেন’। সূরা মায়িদাহ ১৫,১৬
এই কুরআন শিক্ষা থেকে দিন দিন আমরা দূরে সরে যাচ্ছি। একজন মুসলিম হিসাবে কুরআন শিক্ষার গুরুত্বও অনুধাবন করতে পারছি না। আমাদের প্রতিদিন কুরআন পড়তে হবে।
কুরআন পড়লে যা হবে -
১. কুরআন মানবজাতির জন্য হেদায়াত : আমাদের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় জীবন কীভাবে পরিচালিত হবে, তার প্রতিটি বিষয় কুরআনে বর্ণনা করা হয়েছে। এ বিষয়ে আল্লাহ ইরশাদ করেছেন : ‘আমি তোমার নিকট কিতাবটি নাজিল করেছি। এটি এমন যে তা সবকিছুর সুস্পষ্ট বর্ণনা, আর এটা হেদায়াত, রহমত ও মুসলিমদের জন্য সুসংবাদ স্বরূপ’। সূরা আননাহল : ৮৯
২. কুরআন তিলাওয়াত ঈমান বৃদ্ধি করে : কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে বান্দার ঈমান বৃব্ধি পায়। এ বিষয়ে আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন : ‘মুমিন তো তারা, যাদের অন্তরসমূহ কেঁপে উঠে যখন আল্লাহকে স্মরণ করা হয়। আর যখন তাদের উপর তাঁর আয়াতসমূহ পাঠ করা হয় তখন তা তাদের ঈমান বৃদ্ধি করে এবং যারা তাদের রবের উপরই ভরসা করে’। সূরা আনফাল : ২
৩. কুরআন মানুষের অন্তরকে প্রশান্তি দেয় : মানব জীবনে অর্থ বা অন্যান্য কারণে জাগতিক তৃপ্তি আসলেও প্রকৃত তৃপ্তি ও শান্তি কুরআন শিক্ষার মাধ্যমেই সম্ভব। আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, ‘যারা ঈমান আনে, বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাদের অন্তর আল্লাহর জিকির দ্বারা শান্তি লাভ করে। জেনে রাখ, আল্লাহর জিকির দ্বারাই অন্তরসমূহ শান্তি পায়’। সূরা আর-রা‘দ : ২৮
৪. কুরআন তিলাওয়াতকারীর পক্ষে সুপারিশ করবে : কিয়ামতের ভয়াবহ অবস্থায় কুরআন তিলাওয়াতকারীর পক্ষে সুপারিশ করবে। এটা বিরাট সৌভাগ্যের বিষয়। আবু উমামাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : ‘তোমরা কুরআন তিলাওয়াত কর, কারণ, কুরআন কেয়ামতের দিন তিলাওয়াতকারীর জন্য সুপারিশ করবে’। মুসলিম : ১৯১০
৫. কুরআন হচ্ছে সকল জ্ঞান-বিজ্ঞানের উৎস। কুরআন যে নির্দেশনা দিয়েছে তা নির্ভুলভাবে প্রমাণিত। আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, ‘ইয়া-সীন। বিজ্ঞানময় কুরআনের শপথ’। সূরা ইয়াছিন : ১-২
৬. জান্নাতে যাওয়ার জন্য কুরআন : প্রত্যেক মুমিনের সর্বোচ্চ কামনা হলো জান্নাতে যাওয়া। তাই জান্নাতে যাওয়ার জন্য কুরআন পড়তে হবে। হাদিসে এসেছে, ‘সিয়াম ও কুরআন কিয়ামাতের দিন মানুষের জন্য এভাবে সুপারিশ করবে যে, সিয়াম বলবে হে আমার রব, আমি দিনের বেলায় তাকে (এ সিয়াম পালনকারীকে) পানাহার ও যৌনতা থেকে বিরত রেখেছি।
তাই তার ব্যাপারে তুমি আমার সুপারিশ কবুল কর। অনুরূপভাবে কুরআন বলবে, হে আমার রব, আমাকে অধ্যয়নরত থাকায় রাতের ঘুম থেকে আমি তাকে বিরত রেখেছি। তাই তার ব্যাপারে তুমি আমার সুপারিশ কবুল কর। তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, অতঃপর উভয়ের সুপারিশই কবূল করা হবে’। মুসনাদে আহমাদ: ৬৬২৬
আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকম /আরআর