দিদার শফিক : আমাদের দেশে আজকাল ধর্ষণের ঘটনা খুব বেড়ে গেছে। খবরের পাতা মেলে ধরলেই চোখ আটকে যায় ধর্ষণের সংবাদে। পাড়া গাঁ থেকে মন্ত্রনালয় পর্যন্ত ধর্ষণের ছড়াছড়ি। বিষয়টা একটু ভাবনারই। কথিত নারী অধিকার বিষয়ক সংগঠনগুলো নারীকে প্রায় বিবস্ত্র করে দিয়ে এ ধরনের ঘটনায় কেন মায়া কান্না কাঁদে তা আমাদের বোধগম্য নয়। আসলে নারীবাদীরাই নারীর শত্রু। একটু তলিয়ে দেখুন এ কথার সত্যতা প্রমাণিত হবে। আমরা মনে করি- ধর্ম মানলে , নবি মুহাম্মদ সা. এর অসংখ্য হাদিস থেকে মাত্র একটি হাদিসের উপর আমল করলেও ধর্ষণ নামক মহামারি থেকে জাতি নিস্তার পেতে পারে। রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি নিজের জিহ্বা ও লজ্জাস্থানের হেফাজত করবে, আমি তার জান্নাতের জিম্মাদারি নিবো।’ পবিত্র কোর আনের সূরা নূরের 30 ও 31 নাম্বার আয়াতও পড়ে দেখুন আমলে আনুন। দেখবেন ধর্ষণ নামক মহামারি দেশ থেকে লেজ গুটিয়ে পালিয়েছে। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেছেন, ‘ মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং যৌনাঙ্গের হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন। ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে । তাদের যৌনাঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণত প্রকাশমান তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে। তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে আর তারা যেন তাদের গোপন সাজসজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে।’ নূর : ৩০-৩১ আমরা তো কোরআন পড়ছি না। পড়লেও তার দাবি ও আবেদন রক্ষা করছি না। নাকের ডগায় সুটকি বেঁধে দিয়ে বিড়ালকে বলছি , সাবধান! ও দিকে তাকাস না। এ ধরণের আইন বা হুকুম এর প্রতি বিড়াল স্বভাবসূলভভাবেই বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে। কিন্তু আমরা এ সত্যতা স্বীকার করি না।
সমাজে যৌনত অপরাধ বেড়ে যাওয়ার আরেকটি কারণ হলো যুবসমাজ প্রযুক্তির অপব্যবহার করছে। মোবাইলে, কম্পিউটারে রসগল্প কিংবা রসালো চিত্র বা নারীপুরুষের মিলনদৃশ্য দেখে নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে সরকার পর্নো সাইটগুলো ব্যান করার উদ্যোগ নিতে পারে। এলাকাভিত্তিক কম্পিউটারের দোকানে যারা গান লোডের ব্যবসা করে মাঝেমধ্যে পুলিশ বা সরকারি কোন লোক সেসব দোকানে তল্লাশি চালাতে পারে । কম্পিউটারে থ্রি এক্স এর ভিডিও ক্লিপ পেলে দোকানের সরঞ্জাম বাজেয়াপ্ত করতে পারে। কিংবা দোকান সিলগালা করতে পারে।
যেসব নারীর দীর্ঘদিন স্বামী বিদেশে পড়ে থাকে, তারা শয়তানের ফাঁদে পড়ে সুযোগে যৌনতা চর্চা করতেই পারে। তাই প্রবাসী স্বামীদের অল্প সময়ের ব্যবধানে স্ত্রীর কাছে ছুটে আসা দরকার। মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়ের মহিলা হল গুলো কতটা নিরাপদ, তারা স্বেচ্ছায় বা চাপে পড়ে নৈতিকতার সীমা লঙ্ঘন করছে কি না তা খতিয়ে দেখার দাবি রাখে। নারীদের পোশাক শিল্পে আঁটসাঁট পোশাককে না বলা জরুরি হয়ে পড়েছে। ছাত্রছাত্রীদের প্রেমপ্রেম খেলা আর এ নিয়ে আরজেরা লাভগুরু সেজে যে লাভ টিপস দেন এটা কতটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলে সেটাও ভেবে দেখার সময় এসেছে। এভাবে বলতে থাকলে অনেক কিছু বলা যাবে। আর বলছি না। একটি হাদিস দিয়ে শেষ করছি- নবি সা. বলেন, নির্জনে একজন অনাত্মীয় সম্পর্কের নারী ও পুরুষ একত্র হলে তাদের তৃতীয় জন হয় শয়তান। তাই নবি নির্জনে নারীপুরুষকে একত্র হতে বারণ করেছেন। একটু ভেবে দেখি- যারা ডেটিং এ যায়, কিংবা কোনও অভিজাত আবাসিক হোটেলে। এ হাদিস মেনে চললে সেটা আর হতো না। নারী তখনই সমাজে সম্মানিত হবে, নিজের সম্মান কোথায় যখন তা ভালভাবে বোঝার চেষ্টা করবে। অনৈতিক কাজকে প্রগতি বলা থেকে বিরত থাকবে। পবিত্র ও সুন্দর জীবন যাপনে সচেষ্ট হবে।
আওয়ার ইসলাম ২৪ ডটকম / এফএফ