মুহাম্মদ হারুনুর রশিদ। বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্র মজলিস দেশের ঐতিহ্যবাহী ইসলামী ছাত্র সংগঠন। জ্ঞান অজর্ন চরিত্র গঠন ও সমাজ বিপ্লবের শ্লোগানে ছাত্র মজলিস সারা দেশে কাজ করছে। শাইখুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হক রহ. প্রতিষ্ঠিত সংগঠন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সহযোগী সংগঠন হিসেবে ছাত্র মজলিসের তৎপরতা রয়েছে সারা দেশে। চলমান শিক্ষানীতি বিরোধী আন্দোলনে ছাত্র মজলিস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিসের সভাপতি ও সর্বদলীয় ইসলামী ছাত্রঐক্যের প্রসিডিয়াম সদস্য হারুনুর রশিদের সাথে কথা বলেন আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকমের সাব এডিটর মুহাম্মদ এহসানুল হক
অনেক দিন ইসলামি ছাত্র সংগঠনগুলো আন্দোলনে নামলো, সাড়া পাচ্ছেন কেমন?
আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো সাড়া পাচ্ছি। ছাত্র জনতার মধ্যে ব্যাপক উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। মুরুব্বিরা আমাদের উৎসাহ দিচ্ছেন। ময়দানে অনেক দিন যাবৎ এমন একটা ঐক্যের চাহিদা ছিল। ছাত্র ঐক্যের মাধ্যমে সেই চাহিদা কিছুটা হলেও পূরণ হয়েছে বলে মনে হয়।
ছাত্র ঐক্যের পরবর্তী কর্মসূচি কী?
গত ২৪ তারিখের সাংবাদিক সম্মেলনে যে কয়টি কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিল। সবগুলোই পালন করা হয়েছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে প্রেসিডিয়ামের এর বৈঠক হবে। সেখানে আমরা সিদ্ধান্ত নিবো সামনের কর্মসূচি কি হবে।
এ পর্যন্ত কী কী কর্মসূচি পালিত হয়েছে?
আমরা বেশ কয়েকটি প্রোগ্রাম করেছি। ২৫ মে গণ স্বাক্ষর কর্মসূচি। ২৬ মে প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন। ৩০ মে বিএমএ মিলনায়তনে আলেম উলামাদের সাথে মতবিনিময় সভা। ২ জুন সিলেট আলিয়া মাদরাসা মাঠে মহাসমাবেশ। ৩ জুন বাইতুল মুকাররাম এর সামনে বিক্ষোভ মিছিল। এ পযর্ন্ত এই পাচঁটি প্রোগ্রাম আমরা করেছি।
প্রোগ্রাম করতে এত টাকা কোথায় পাচ্ছেন?
একেকটা প্রোগ্রামে যা খরচ হয়, আমরা সবগুলো সংগঠন মিলেই সেটা বহন করি। আমরা একটা দুইটা দল না। আটটা দল এক সাথে হয়েছি। আটটি দলের পক্ষ থেকে এ কয়টি প্রোগ্রাম করা অনেক বড় কোন ব্যাপার নয়।
একটু ভিন্ন প্রসঙ্গে যাই, ঢাকার প্রোগ্রামে মানুষ এত কম ছিল কেন?
আসলে এই প্রোগ্রামের ঠিক আগের দিন আমাদের সিলেটে মহাসমাবেশ ছিল। তো সেখানেই কয়েকজন থেকে গিয়েছিলেন। আর কয়েকটা সংগঠনের নিজেস্ব প্রোগ্রাম ছিল। এজন্য আমাদের উপস্থিতি সেদিক কাম্য মানের হয়নি। প্লানিং এ ঘাটতি ছিল।
দাবি আদায় না হলে কি আপনারা আরও কঠোর আন্দোলনের দিকে যাবেন?
দাবি আদায়ের জন্য প্রয়োজনে আমরা আরও কঠিন কর্মসূচির দিকে যাবো। এই শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে আমাদের এই আন্দোলন চলবে দাবি আদায় না হওয়া পযর্ন্ত। কোন অবস্থাতেই আমরা পিছু হটবো না।
ছাত্র মজলিসকে আর আগের মত মাঠে পাওয়া যায় না কেন?
ছাত্র মজলিসকে মাঠে পাওয়া যায় না বিষয়টা এমন নয়। এখন কাউকেই মাঠে পাওয়া যায় না। দেশের পরিস্থিতি এখন অনেক খারাপ। অনেক বড় বড় দলও রাজপথে কোন ভূমিকা রাখতে পারছে না। বর্তমান এই পরিস্থিতির বিবেচনা করে আমরা আমাদের ঘরোয়া প্রোগ্রামের উপরই বেশি জোড় দিচ্ছি। আর সেগুলো অব্যাহতভাবে চলছে।
ছাত্র ঐক্য গঠনের পর থেকে একটা বিষয় আলোচনায় আসছে, ছাত্র মজলিসের অপর অংশ কেন এই জোটে নেই?
এই জোট গঠনের সময় তাদেরকেও আহবান করা হয়েছিল কিন্তু তারা এই জোটে আসতে প্রস্তুত নয় বলে জানিয়েছে।
কেন তারা আসলো না, এই ব্যাপারটা আরও একটু ব্যাখ্যা করেন, তাদের ব্যাপারে আপনাদের বক্তব্য কি?
আমাদের অবস্থান পরিস্কার। তারা আসুক আমাদের কোন আপত্তি নেই। আমার কাছে অন্য সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দ জানতে চেয়েছেন তারা আসলে আমাদের কোন আপত্তি আছে কি না? আমি পরিষ্কার বলেছি, আমরা একটা গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে এক হয়েছি। এখানে কোন সংকির্ণতা দেখাবার অবকাশ নেই। তারা আসুক। ছাত্র সমাজের অফিসেই যেই মিটিংটা হয়েছিল সেখানে তাদেরকে দাওয়াত করেছিলেন ছাত্র সমাজের সভাপতি মাসুদ ভাই। কিন্তু তারা আসতে সম্মত হয়নি।
এটা কি শুধুই ইস্যু ভিত্তিক জোট?
এটা শুধু এই শিক্ষানীতি বিষয়ক জোট। অন্য কোন বিষয়ে আপাতত এই জোটের ঐক্যবদ্ধ কোন ভূমিকা নেই। কর্মসূচিও নেই।
এই জোট কি অন্য ইস্যুতেও ঐক্যবদ্ধ থাকার সম্ভবনা আছে?
আপাতত এটা শুধু শিক্ষানীতি বিষয়ক জোট। তবে আমরা যেহেতু কাছাকাছি আসতে পেরেছি। একটা সম্ববনার সৃষ্টি হয়েছে। প্রয়োজন হলে অন্য ইস্যুতেও আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবো। তবে এটা এখন বলা যাচ্ছে না। সময় এলে বুঝা যাবে। সে জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।
/আরআর