মাওলানা গাজী আতাউর রহমান : ২ রমজান ourislam24.com -এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হয়ে গিয়েছিলাম শাহবাগের পাবলিক লাইব্রেরিতে। আলোচনা অনুষ্ঠানে দেশের কয়েকজন পন্ডিতব্যক্তি চমৎকার আলোচনা রেখেছেন।বিলম্বে পৌঁছার কারণে আমি সবার আলোচনা শুনতে পারিনি।তবে অনুষ্ঠানের সভাপতি দেশের একজন সচেতন এবং বিজ্ঞ আলেমের জবান থেকে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম সম্পর্কে নতুন ধারণা পেলাম।আমি ছোটকাল থকেই কাজী নজরুলকে প্রচন্ড রকমের ভালবাসি।কাজী নজরুল ঘুমন্ত মুসলিম জাতিকে জাগিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন।তিনি বিশ্ব-মানবতার মুক্তি চেয়েছিলেন। তিনি মানুষকে মানুষের গোলামী থেকে মুক্তির গান শুনিয়েছিলেন।আল্লাহর একত্ববাদ এবং ইসলাম সম্পর্কে কাজী নজরুলের আল্লাহপ্রদত্ত বিশেষ জ্ঞান ছিল।
প্রিয় কবি কাজী নজরুল সম্পর্কে সেদিনের নতুন আলোচনা শুনে কিছুটা চমকে ওঠলাম।মাওলানা বললেন, ‘কাজী নজরুল মা‘রেফতের উচুঁ পর্যায়ের একজন সাধক ছিলেন। এমনকি কাজী নজরুলের মাকাম ছিল আল্লামা জালালউদ্দীন রুমিরও উপরে।’
অনুষ্ঠানে দেশের অন্যতম প্রধান কবি আসাদ চৌধুরীও উপস্থিত ছিলেন।কথাগুলো যদি আসাদ চৌধুরী বলতেন তাহলে ভাবতাম; সামনের সাড়িতে হুজুরদের দেখে তিনি এমন আবেগময় কথা বলেছেন।কিন্তু কথাগুলো এমন এক আলেমের মুখ থেকে বেড়িয়েছে যিনি হকপন্থী আলেম হিসেবে দেশে খ্যাতিমান। তিনি নিজেও আধ্যাত্মিক লাইনের একজন বুজুর্গ ব্যক্তি।অতএব বিষয়টিকে হালকাভাবে দেখার সুযোগ কম।
অথচ যুগের আলেমরাই কবি নজরুলকে কাফের ফতোয়া দিয়েছিল।আসলে নজরুলকে নিয়ে এলেমদের মাঝে তেমন কোন গবেষণাই হয়নি।নজরুল যে ইসলামের সম্পদ, মুসলমানদের সম্পদ তা আমরা যথার্থভাবে মূল্যায়নে ব্যর্থ হয়েছি।
অথচ যারা ইসলাম পছন্দ করে না তারা নজরুলকে নিয়ে গবেষণা করছে।যারা মুসলিম জাতিকে দাবিয়ে রাখতে চায়, তারা নজরুল চর্চার নামে নজরুলের খন্ডিত জীবনকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করছে।
আধ্যাত্মিক লাইনে নজরুলের মাকাম কোথায়, এটা জানা খুব প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না।এবিষয়ে বিজ্ঞ মাওলানার সঙ্গে আমার চিন্তার তফাৎ আছে। বিষয়টি নিয়ে সুযুগ হলে মুহতারামের সঙ্গে আমার কথা বলারও আগ্রহ আছে।
তবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে কবি নজরুলকে নিয়ে তরুণ আলেমদের মাঝে বিশ্লেষণ ও গবেষণা হওয়াটা খুবই প্রয়োজন।আমার মনে হয় যারা বংলা ভাষার মজা পেতে চায় এবং প্রকৃত বাঙ্গালী মুসলমানের মানস বুঝতে চায়, তাদেরকে কবি নজরুলের দ্বারস্থ হতেই হবে।
লেখক : বিশিষ্ট আলেম, লেখক ও রাজনীতিক
/আরআর