শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


‘ছোটবেলা থেকেই কবিতা লিখতাম, আবৃত্তি করতাম’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

salman4আবদুল আহাদ সালমান। একজন গীতিকার, সুরকার ও ইসলামি সঙ্গীতশিল্পী। শিল্পীদের সংগঠন- বিকিরণ, সরুপ শিল্পীগোষ্ঠী, আহ্বান শিল্পীগোষ্ঠীসহ বেশ কয়েকটি সংগঠনে সক্রিয় কাজ করেছেন। সর্বশেষ নিজের হাতেগড়া ‘অনুপ্রাস’-এ প্রতিষ্ঠাতা প্রধান পরিচালক হিসাবে বিরামহীন কাজ করে দক্ষতার স্বাক্ষর রাখছেন।
‘সুরের পাখি’ ও ‘লাল সবুজের পতাকা’ নামে তার একক দুটি এ্যালবাম রয়েছে। রচনা করেছেন শতাধিক ইসলামি সঙ্গীত, সুর করেছেন অসংখ্য গান। ১৯৮৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি ফেনীর ধুমসাদ্দা আফতাব বিবিরহাট এলাকায় জন্ম নেয়া এই কণ্ঠশিল্পী পবিত্র শহর- মক্কা-মদিনাসহ দেশের প্রায় প্রতিটি জেলাতেই কনসার্ট করেছেন। তার সুর ও সঙ্গীতে হৃদয় গলে দর্শক-শ্রোতার। আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকমের পক্ষে তার মুখোমুখি হয়েছিলেন বিভাগীয় সম্পাদক- আমিন ইকবাল

সুর-সঙ্গীতে প্রেরণা পেলেন কোত্থেকে?
প্রেরণার মূলে আমার পরিবার। আমার দাদা মাওলানা আবদুর রাজ্জাক ও নানা মাওলানা আবদুল মান্নান উভয়ে দারুল উলুম দেওবন্দের ফারেগ। বড় মাপের আলেম হওয়ার সাথে সাথে কবিও ছিলেন। আর পরদাদা মাওলানা কারী মুসলিম রহ. ছিলেন একজন বিখ্যাত ফার্সি শায়ের (কবি)। সে হিসাবে বংশীয় ধারাপাতেই আমার সুর-সঙ্গীতের প্রেরণা!

পথচলার সূচনা কিভাবে?
তখন ২০০০ সাল। ইসলামি সঙ্গীতের উপর একাডেমিক কোনো প্রশিক্ষণ নেই আমার। কিন্তু সাবেক ছাত্র আন্দোলন নেতা- ইমরান ভাই আমাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। সময়ে সময়ে বিভিন্ন প্রোগ্রামে নিয়ে যেতেন। আমি ছোটবেলা থেকেই কবিতা লিখতাম, আবৃত্তি করতাম। তবে গানে কণ্ঠ দেয়ার উপর একটু বেশিই আগ্রহ ছিল। তাছাড়া ইসলামি সঙ্গীত শোনা এক ধরনের নেশায় পরিণত হয়েছিল তখন। এভাবেই পথচলা শুরু।

সঙ্গীতে আপনার ‘গুরু’ কে?
আমার নির্দিষ্ট একক কোনো গুরু নেই। সবার কাছ থেকেই শেখার চেষ্টা করি। তবে সঙ্গীতজগতে বিখ্যাত- আহমদ বুখাতির, শায়খ মাশারি, মাহের জাইন ও মহসিন আল গাজীকে আমি আইডল মনে করি। তাদের সুর আমাকে বিমোহিত করে। প্রেরণা জোগায়।

মঞ্চে প্রথম কবে কোথায় গান করেছেন?
২০০৩ সালে ফেনীর ‘জহির রায়হান’ হলে ইসলামি সঙ্গীতানুষ্ঠানে শিল্পী হিসাবে প্রথম গেয়েছিলাম। সেই অনুষ্ঠানে তখনকার সময়ে দেশের খ্যাতনামা ইসলামি সঙ্গীতসম্রাট- আইনুদ্দিন আল আজাদ রহ. উপস্থিত ছিলেন। আমার সঙ্গে ওই মঞ্চে আরও গেয়েছিলেন শিল্পী মোস্তাফিজ ও আব্দুল মুনঈম।

নিজের কোন গানটি শ্রেষ্ঠ মনে করেন?
‘ওগো বিধাতা’ গানটি। গানটিতে আল্লাহর প্রশংসা ও মুনাজাত করা হয়েছে। মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা- তিনি যেনো আমার মুনাজাত কবুল করেন।

কোন ধরনের গানে দর্শক-শ্রোতার উৎসাহ বেশি পান?
দেশাত্মবোধক গান গেয়ে দর্শক-শ্রোতাদের বেশ উৎসাহ পেয়েছি। ২০০৬ সালে ‘এই যে আমার জন্মভূমি’ গানটি বেশ হিট করেছিল। গানটি নিয়ে মিডিয়ায় নিউজও হয়েছিল। ওই গানটি ছিল আমার প্রথম এ্যালবাম- ‘সুরের পাখি’তে। শ্রোতাদের উৎসাহেই ‘লাল সবুজের পতাকা’ নামে ২য় এ্যালবামের জন্ম।salman3

দেশের বাইরে কোথায় কোথায় সফর করেছেন?
সৌদি আরব, কাতার, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে সফর করার সুযোগ হয়েছে। ১০১৩ সালে মক্কা ও মদিনায় বেশকিছু প্রোগ্রাম করারও সুযোগ হয়েছে। তন্মধ্যে ব্যতিক্রম একটি প্রোগ্রাম ছিল মদিনা শরিফে ডক্টর শায়েখ মুহাম্মাদ সাঈদ-আল গাজী’র আমন্ত্রণে। ওই অনুষ্ঠানে মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়সহ নানা প্রতিষ্ঠানের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

আপনি ‘অনুপ্রাস’-এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক। সংগঠন ঘিরে কী স্বপ্ন দেখেন?
সমাজে সুস্থ সংস্কৃতির প্রসার ঘটানো। সুন্দর আগামী গড়ার প্রত্যয়ে অনুপ্রাস স্বতন্ত্র মিডিয়া- টেলিভিশন, এফএম রেডিও ইত্যাদি প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখে। সকলের সহযোগিতা ও ভালোবাসা নিয়ে সেই স্বপ্ন পূরণে সাধ্যমতো চেষ্টা চলছে।

ইসলামি সঙ্গীতাঙ্গন নিয়ে কিছু বলুন!
বর্তমানে ইসলামি সঙ্গীত বেশ একটিভ। সময়ের সাথে সাথে সংগঠন বাড়ছে। কলরব, অনুপ্রাস, আহ্বান, দাবানল ইত্যাদি শিল্পীগোষ্ঠীর মাধ্যমে অনেক তরুণ প্রতিভা ওঠে আসছে। সবার মাঝে প্রতিযোগিতাপূর্ণ মনোভাব লক্ষ্য করা যায়। এটা ইসলামী সঙ্গীত জগতের জন্য সুখকর।

কোনো বিষয়ে অভিযোগ...
কোনো অভিযোগ নেই। তবে আমরা অলস। আমাদের কাছে সময়ের গুরুত্ব নেই বললেই চলে। সবার কাছে অনুরোধ থাকবে- সময়কে কাজে লাগান। তাছাড়া বিশেষ করে খারাপ লাগে- যখন কাজ করার ক্ষেত্রে গুরুজনদের কাছ থেকে উৎসাহের পরিবর্তে নিরুৎসাহিত হই!

আওয়ার আসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকম /আরআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ