মাহফুজ তানিম : প্রতিটি জিনিসের ভালো-খারাপ দুই-ই আছে। যে যেভাবে ব্যবহার করে সেরকমই পায়। আগুনের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে যেমন অসাধ্য সাধন করা যায়, আবার এই আগুন ব্যবহার করে সবকিছু পুড়িয়ে ছাইভস্মও করা যায়। সব নির্ভর করে ব্যবহারের ওপর। কীভাবে কাজে লাগাচ্ছেন তার উপর। ফেসবুকের যেমন ভালো দিক আছে, তেমন আছে মন্দ দিক। মন্দ দিকের জন্য অনেকাংশে দায়ী আমরাই। কিছু পরিশ্রমী মানুষ যখন ফেসবুককে ভালো কাজে ব্যবহার করে বিপ্লব ঘটিয়ে ফেলছে, আবার পাশাপাশি কিছু মানুষ অলস সময় কাটিয়ে জীবনের দীর্ঘ সময় নষ্ট করছেন এ ফেসবুকে, যার কোন আউটপুট নেই । আমরা এখানে ফেসবুকের তিন জনপ্রিয় ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেছি। যাদের প্রোফাইলগুলো নানাকারণে গুরুত্বের দাবি রাখে। যারা নিজেদের জায়গা থেকে সাধ্যমতো সমাজের কাজ করছেন।
বন্ধু তালিকায় প্রকৃত জ্ঞানী লোকদের বেছে নেয়া উচিত
: সাইমুম সাদী
আপনি কবে থেকে ফেসবুক ব্যবহার করেছেন?
সম্ভবত ২০০৮ থেকেই ইউজ করি। কিন্তু ফেসবুকে নিয়মিত লিখি দুই বছর যাবত।
কেন ফেসবুক ব্যবহার করছেন? ফেসবুক ভালো কিছু দিয়েছে?
ফেসবুক আমাদের দৈনন্দিন জীবন থেকে বেশ কিছু সময় কেড়ে নিচ্ছে। এটা অনেকটা নিজের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর মত। তারপরও লিখি। কারণ সামাজিক মিডিয়ার শক্তি দিন দিন বাড়ছে। মেইনস্ট্রিম মিডিয়া সব লিখতে পারে না কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়া তা পারছে। এবং ইতিমধ্যে তার শক্তি আমরা দেখতে পাচ্ছি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ঘটনার মাধ্যমে। ফেসবুকের আরেকটা মজার ব্যাপার হচ্ছে এখানে যা লিখি দ্রুত কমেন্ট চলে আসে। চিন্তাকে ছড়িয়ে দেয়া যায়। নতুন ও পুরাতন বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ সৃষ্টি হয়। একটা পাঠক শ্রেণি তৈরি হয়ে যায়। এক সময় পত্রিকায় লেখা ছাপাতে হলে বিভাগীয় সম্পাদকের সাথে লাইন মারতে হত। এখন এই কাজ করা লাগে না। লেখা সাথে সাথেই ফেসবুকে পোস্ট করা যায়। ফেসবুকের শক্তি কত ব্যাপক তা তো আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না।
তরুণ প্রজন্ম কিভাবে ফেসবুক থেকে উপকৃত হবে?
শুধু তরুণরা নয় সবার জন্যই ফেসবুক ইউজ পরিকল্পিত ও নিয়ন্ত্রিত হওয়া উচিত। এডিক্টেড হবার সম্ভাবনা দেখা দিলেই সতর্ক হয়ে যাওয়া উচিত। ফেসবুক থেকে লাভবান হতে হলে ফ্রেন্ড লিস্টে এমন কিছু লোককে রাখতে হবে যাদের থেকে উপকৃত হওয়া যায়। লাইক কিংবা শেয়ারের সংখ্যা থেকে কাউকে ভাল বা খারাপ লেখক বলা যাবে না। অনেক সময় খারাপ বা চটুল লেখায়ও লাইকের বন্যা বয়ে যায়। রাজনীতিতে যারা একটিভ তাদের পোস্টেও লাইকের বন্যা বইতে থাকে। সেজন্য প্রকৃত জ্ঞানী লোকদের বেছে নেয়া উচিত ফ্রেন্ড তালিকায়। তারপরও আশাবাদী এজন্য, যারা নিয়মিত লিখছেন, লিখার জন্য কিন্তু চিন্তা করতে হচ্ছে। এই চিন্তার অভ্যাসটা খুবই ইমপোর্টেন্ট। অবাক হয়ে দেখি খুব অল্প বয়স্ক নবীন লোকটিও ভাল লিখছে। ফেসবুক বেশ কিছু নতুন লোককে আমাদের সামনে নিয়ে আসছে যাদের চিনতাম না।
(ফেসবুক লিঙ্কঃ https://web.facebook.com/symum.sadi)
ফেসবুক সিরিয়াসলি না নেয়ার পরামর্শ দেব তরুণদের
: হাসান মাহবুব
কবে থেকে ফেসবুক ব্যবহার করেছেন?
২০০৭ এর দিকে।
কেন ফেসবুক ব্যবহার করেন? ফেসবুক থেকে উপকৃত হয়েছেন?
প্রথম দিকে মূলত সময় কাটানোর জন্যই ফেসবুক ব্যবহার করা হতো। তবে ইদানিংকার ফেসবুক ফিলসফি অনেকটা আমাদের দেশি চায়ের দোকানের মত। মূল উদ্দেশ্যটা থাকে যদিও চা খাওয়া, কিন্তু সেই চা খেতে গিয়ে সেক্স টু ফিলসফি সব ধরণের টপিকে আলোচনার ঝড় উঠে যায়। কোনো মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে যে ফেসবুক ব্যবহার করছি বা করব তা নয়, তবে চেষ্টা থাকে সময় কাটানোর পাশাপাশি নিজের জানার ক্ষুদ্র গন্ডি থেকে কিছু শেয়ার করার। যদি কেউ উপকৃত হয় ভেবে। ফেসবুক থেকে ভাল কিছু বন্ধু এবং শুভাকাঙ্ক্ষী পেয়েছি। অপরিচিত, স্বল্প পরিচিত অসংখ্য মানুষের ভালবাসা পেয়েছি। এটাকেও আমি অর্জন হিসাবে দেখবো এবং একে একেবারেই ছোট করে দেখার উপায় নেই।
তরুণ প্রজন্ম কিভাবে ফেসবুক থেকে উপকৃত হতে পারে?
ফেসবুক এর জন্মই হয়েছে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং এর জন্য। উপকৃত হবার আশায় ফেসবুক ব্যবহার করার চিন্তা এক প্রকার বোকামি বলা চলে। ভার্চুয়াল আর রিয়েলিটি, এ দুটোর মধ্যে বিস্তর ফারাক। তাই আমাদের তরুণ প্রজন্ম কে ফেসবুক সিরিয়াসলি না নেবার জন্য উৎসাহিত করব।
(ফেসবুক লিঙ্কঃ https://web.facebook.com/Provabok?_rdr )