ফয়জুল আল আমীন : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার ঘনিষ্ঠতম মিত্র যুক্তরাজ্যের সঙ্গে আঞ্চলিক বিভিন্ন ইস্যুতে কোনো ধরনের সহযোগিতা না করার কথা জানিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারিত ভাষণে খামেনি বলেন, ‘এ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ইরানের সম্পূর্ণ বিপরীত। আমাদের জন্য ছোট বড় নানা শত্রু আছে। কিন্তু এ শত্রুদের মধ্যে আমাদের সবচেয়ে বড় শত্রু হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন।’ ফক্স নিউজ।
খামেনি তেহরান এবং ছয় বিশ্বশক্তির মধ্যকার পারমাণবিক চুক্তির প্রতি সম্মান প্রদর্শন না করার কারণে ওয়াশিংটনকে দোষারোপও করেছেন। ইরানের বিতর্কিত পারমাণবিক কর্মসূচির রাশ টেনে ধরতে ২০১৫ সালে এ চুক্তি হয়। তবে চুক্তিটি সেরে নেয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে দেয়া প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে, নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখে। তিনি যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য এ দু’দেশকে অসভ্য আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘এদেরকে বিশ্বাস করা যায় না।’
ভাষণে তিনি আরও বলেন, ‘আমেরিকা সেই ১৯৭৯ সালের ইসলামিক বিপ¬বের সময় থেকে ইরানের সঙ্গে শত্রুতা করে আসছে। তাই আমরা আঞ্চলিক সঙ্কটে আমেরিকার সঙ্গে সহযোগিতা করব না।’ যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য মানবাধিকারের অপব্যবহার এবং সন্ত্রাসের মতো কিছু অজুহাত দেখিয়ে তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা না করার পাঁয়তারা করছে বলেও উল্লেখ করেন খামেনি। ইরানের প্রতিষ্ঠাতা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনির মৃত্যুবার্ষিকী পালনকালে সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে খামেনি এসব কথা বলেন। এ সময়ে তিনি বলেন, ‘কোনো সরকার বা ব্যক্তি যারা ইসলামের জন্য কাজ করছে তারা যদি আমেরিকাকে বিশ্বাস করে তাহলে তারা অবশ্যই এক সময় আমেরিকার হাতেই প্রতারিত হবে। প্রায় ৩৮ বছর আগে যে চেতনা নিয়ে শত্রুদেরকে দেশ থেকে তাড়ানো হয়েছিল সেই বিপ্লবী চেতনা সমুন্নত রাখতে হবে।’
সমাবেশে দেয়া বক্তৃতায় সর্বোচ্চ নেতা ইরানের সঙ্গে আমেরিকার নানা শত্রুতার ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, ‘ইরাকের স্বৈরশাসক সাদ্দাম হোসেনকে দিয়ে ইরানের ওপর আট বছরের যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রই। এছাড়া, ইরানের একটি যাত্রীবাহী বিমান ভূপাতিত করেছে মার্কিন সেনারা, ইরানের তেল স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে তারা এবং মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর মাধ্যমে এ দুটি দেশ ইরানে সেনা অভ্যুত্থান ঘটিয়েছে।’
উল্লেখ্য, সিরিয়ার অবরুদ্ধ এলাকাগুলোতে ত্রাণ সাহায্য সরবরাহ নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের আলোচনায় বসার পর ইরানের কাছ থেকে এ বিষয়ে সহায়তা চাওয়া হতে পারে এমন সম্ভাবনার মধ্যেই খামেনি এ বক্তব্য দিলেন। ইরান মধ্যপ্রাচ্য সঙ্কট বিশেষ করে সিরিয়ায় হস্তক্ষেপ করছে বলে অভিযোগ করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্রদেশগুলো।