যতদিন পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্খার গণতান্ত্রিক অসাম্প্রদায়িক বৈষম্যহীন মানবিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠ হবেনা, ততদিন পর্যন্ত রাজনৈতিক ক্ষমতাবান ও বিত্তশালীরা সমাজকে তাদের কেনা সম্পত্তি মনে করবে। সংবিধান আইন মোতাবেক রাষ্ট্রপরিচালনার নীতিতে ন্যায় বিচার ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা না হলে,শিক্ষায় অগ্রসর হবে না সমাজ, দেশ। ততদিন নারী কর্মক্ষেত্র থেকে সর্বত্র যৌন হয়রানি থেকে মুক্ত তো হবেই-না উল্টো প্রতিবাদ করার বদলে যুক্তিই খুঁজবে এটাকে মেনে নিয়ে কিভাবে সে হেসে হেসে জীবনটা তথাকথিত সমাজের প্রতিনিধিত্বশীল চরিত্র নিয়ে হাটতে পারে। অবহেলিতরা তো মুখ বুজে সয়েই যাবে।
জীবনের দীর্ঘ সময় পেশাদারিত্বের পথে হাটতে গিয়ে পর্যবেক্ষন করেছি রাজনৈতিক ক্ষমতাবান বা তাদের করুণাশ্রিতরা ও বিত্তশালীরা কিভাবে সমাজকে পাপসের মতোন ব্যবহার করেন।এ র মধ্যে টাকার শক্তি কখনোবা রাজনৈতিক শক্তির চেয়ে বড় মনে হয়েছে। সামাজিক শক্তি সমূহ ও তাদের প্রতি নিঃশর্ত আনুগত্য দেখায়।তখন কেউ কেউ আইনের উর্ধ্বে উঠে যান।এরা হতে পারেন রাজনৈতিক ক্ষমতাশালী,তাদের করুনাশ্রিতজন, বিত্তশালীগন ছাড়াও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্ণধাররা। জীবনের এই বাঁকে যিনিই প্রথা ভেঙ্গে অন্তত বেঁচে থাকার সংগ্রাম করেন তার জন্য পরিবেশটা দমবন্ধের মতোন হয়ে ওঠে। ঘরে বাইরে তিনি নারীই হোন বা পুরুষ তাকে একা লড়তে হয়।
এই একাকিত্বের লড়াইটা অনেক করেছি,এ খনো করছি।পাগলামি বাড়াবাড়ি বলে প্রিয়জনরাও আত্বমর্যাদার এ লড়াইকে কখনো কখনো তিরস্কার করেন,পাশে দাঁড়ানো দূরে থাক। এই সমাজে চলতে গি্য়ে নারীকে তার রুপ ও হাসির বাণিজ্য করে কৌশলী হতে হয়।আর পুরুষদের করতে হয় আত্বার সঙ্গে প্রতারনা করে দাসত্ব। যারা এটা করেননা, তাদের লড়াইটা অনেক কঠিন,কেউ সাহায্য দূরে থাক উৎসাহও দিতে কার্পন্য করেন না।এতে কেউ কেউ হাপিয়ে যান,কেউবা ক্লান্ত হন অথবা পরাজয় মেনে নেন।আবার কেউ হাল ছাড়েন না। তারা জানেন এই দম্ভ উন্নাসিকতার বিপরীতে পরিবর্তনই নয়, আত্মমর্যাদা সম্পন্ন মানুষের লড়াই সফল-ই হবে।
আত্মগ্লানির নষ্ট প্রতারক প্রবঞ্চকের জীবন যত চাকচিক্যের হোক, নিরাপদ হোক, তা যেমন সাময়িক তেমনি কখনো বিশুদ্ধ আত্মার প্রশান্তির হয়না। যেখানে আদর্শিক পথ হাটা মর্যাদাসম্পন্ন মানুষদের বুকের শক্তি অন্য উচ্ছতায় ওঠে।সেই মানুষই গ্লানিহীন তৃপ্তির পথ হেটে যায় যার কারো কাছে মাথা নত করতে হয়না।তবে দহনে পোড়ে তার হৃদয়।
আজ রাত ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত এসএটিভির যে টকশো দেখানো হবে সেখানে অনেক কথাই এসেছে।দুজন করে আমরা চারজন তরুণের মুখোমুখি হয়েছি। নর্থসাউথ ও ঢাকাবিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেমেয়েরা ষ্টুডিওর ভিতরে মুখোমুখি বসে প্রশ্ন করেছে।ভালো লেগেছে রেকর্ডিংয়ে তাদের পেয়ে। সামনে সমাজটাকে বদলে দেবার সংগ্রামটা তরুণরাই করবেন।যেমন আমরা গণতন্ত্র এনেছিলাম।আমাদের পূর্বসুরিরা স্বাধীকার স্বাধীনতা এনেছিলেন।আমি তরুণদের নিয়ে আশাবাদী।তারুণ্যই রাষ্ট্র ও সমাজের শক্তি।
লেখক: প্রধান সম্পাদক, পূর্বপশ্চিম.নিউজ