শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের বিকল্প নেই: তারেক রহমান জমিয়তের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হলেন শায়খ মাওলানা আবদুর রহীম ইসলামাবাদী কুমিল্লায় আন্তর্জাতিক ইসলামী মহাসম্মেলন আগামীকাল মাওলানা মনসুরুল হাসান রায়পুরীর ইন্তেকালে চরমোনাই পীরের শোক প্রকাশ জমিয়ত সভাপতি মাওলানা মনসুরুল হাসান রায়পুরী রহ.-এর বর্ণাঢ্য জীবন কওমি সনদকে কার্যকরী করতে ছাত্রদল ভূমিকা রাখবে: নাছির বড় ব্যবধানে জিতে প্রথমবারের মতো পার্লামেন্টে যাচ্ছেন প্রিয়াঙ্কা আইফোনে ‘টাইপ টু সিরি’ ফিচার যেভাবে ব্যবহার করবেন  স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা জাতীয়করণের দাবি অত্যন্ত যৌক্তিক: ধর্ম উপদেষ্টা আল্লাহকে পেতে হলে রাসূলের অনুসরণ অপরিহার্য: কবি রুহুল আমিন খান

দুনিয়ায় বেহেশতের বাগান

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
ফাইল ছবি

|| নাজমুল হুদা মজনু ||

মুমিনের শ্রেষ্ঠ প্রত্যাশা হলো আল্লাহর নৈকট্য অর্জন। আর এ পথের প্রধান পাথেয় হলো আল্লাহ তায়ালার জিকির।
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কুর‌আনুল কারিমে প্রথমেই বলেছেন—
(হে মুহাম্মদ), তুমি পড়ো, (পড়ো) তোমার মালিকের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন।(আলাক-১)
কুরআন মাজিদ পড়া ও পড়ানো নিঃসন্দেহে আল্লাহর জিকির। আবার নামাজ-রোজা, হজ-জাকাত আদায় করার মধ্যেও রয়েছে আল্লাহর জিকির। এসব এবাদত স্থান কাল ও সময়ের সাথে সংশ্লিষ্ট। আর অন্যান্য জিকির আছে, যা সার্বক্ষণিক করার তাগিদ দেয়া হয়েছে কুরআন-হাদিসে।

জিকির মানে হলো আল্লাহর স্মরণ। আর আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের স্মরণ‌ই হলো ইবাদত। আল্লাহ তায়ালার স্মরণে রহমতের বারিধারায় সিক্ত হয় মুমিনের অন্তর। কুরআন মাজিদে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন, মুমিন তাে হচ্ছে সেসব লােক, (যাদের) আল্লাহ তায়ালাকে স্মরণ করানাে হলে তাদের হৃদয় কম্পিত হয়ে ওঠে এবং যখন তাদের সামনে তাঁর আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করা হয়, তখন তাদের ঈমান বৃদ্ধি পায় এবং তারা সবসময় তাদের মালিকের ওপর নির্ভর করে। (আনফাল-২)

সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার এসব অন্যতম প্রধান জিকির। তবে সম্মিলিত জিকিরের ব্যাপারে আলেমদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। একসাথে জিকির করার অনেক অর্থ রয়েছে। যেমন সমস্বরে অনেকেই জিকির করেন। এ ব্যাপারে অনেক আলেম বলে থাকেন, তালিমের ক্ষেত্রে সম্মিলিত জিকির জায়েজ রয়েছে তবে সুন্নাত হলো একাকী নীরবে আল্লাহর জিকির করা। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, যেখানে আল্লাহ এবং আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অর্থাৎ দ্বীনের আলোচনা হয় তাকেও আল্লাহর জিকির বলা হয়। শুধু তাই নয়,  জিকিরের মজলিসকে বলা হয়ে থাকে বেহেশতের বাগান।

আবু ওয়াকিদ আল-লাইসি রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত— আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদা মসজিদে বসে ছিলেন; তাঁর সাথে আরও লোকজন ছিলেন। এমতাবস্থায় তিনজন লোক এলো। তন্মধ্যে দু’জন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দিকে এগিয়ে এলো এবং একজন চলে গেল। আবু ওয়াকিদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, তাঁরা দু’জন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কাছে  কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকল। অতঃপর তাঁদের একজন মজলিসের মধ্যে কিছুটা খালি জায়গা দেখে সেখানে বসে পড়ল এবং অপরজন তাদের পেছনে বসল। আর তৃতীয় ব্যক্তি ফিরে গেল।

যখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অবসর হলেন সাহাবিদের উদ্দেশে্য বললেন, আমি কি তোমাদের এই তিন ব্যক্তি সম্পর্কে কিছু বলব না? তাদের একজন আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করল, আল্লাহ তাকে আশ্রয় দিলেন। অন্যজন লজ্জাবোধ করল, তাই আল্লাহও তার ব্যাপারে লজ্জাবোধ করলেন। আর অপরজন (মজলিসে হাজির হওয়া থেকে) মুখ ফিরিয়ে নিলো, তাই আল্লাহও তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। (বুখারি-৬৬)

উপরের উল্লেখিত হাদিসে প্রতীয়মমান হয়, যে মজলিসে দ্বীনের আলোচনা হয় তা নিঃসন্দেহে জিকিরের মজলিস বা জিকিরের মাহফিল। আর জিকিরের মজলিস হলো দুনিয়ায় বেহেশতের বাগান।

আনাস রাদিয়ল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত—
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমরা যখন জান্নাতের বাগানে যাবে, তখন তোমরা সে বাগানের ফল খাবে। সাহাবিরা জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! জান্নাতের বাগান কী? তিনি বললেন, জিকিরের মজলিস।  (মিশকাত-২২৭১)

এক হাদিসে কুদসিতে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন স্বয়ং জিকির ও জিকিরের মজলিসের মাহাত্ম্য বর্ণনা করেছেন। আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহ আনহু থেকে বর্ণিত— তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, আল্লাহ জাল্লা শানুহু বলেন, আমি বান্দার ধারণা অনুযায়ী কাছে থাকি। যখন সে আমার জিকির (স্মরণ) করে সে সময় আমি তার সাথে থাকি। বান্দা আমাকে একাকী স্মরণ করলে আমিও তাকে একাকী স্মরণ করি। আর যদি সে আমাকে কোনো মজলিসে আমার কথা স্মরণ করে তাহলে আমি তার চেয়ে উত্তম মজলিসে তাকে স্মরণ করি। যদি সে আমার দিকে এক বিঘত অগ্রসর হয় তাহলে আমি তার দিকে এক হাত এগিয়ে আসি। যদি সে আমার দিকে হেঁটে আসে আমি তার দিকে দৌড়িয়ে আসি। (মুসলিম-৬৬১৮)

লেখক : সাংবাদিক ও সাহিত্যিক  

এনএ/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ