রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ২৪ ভাদ্র ১৪৩১ ।। ৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :

দাজ্জালের ফেতনা থেকে বাঁচতে জুমআর দিনের আমল

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
ফাইল ছবি

পবিত্র কুরআনের ১৮নং সূরা হচ্ছে সূরা কাহাফ। এর আয়াত সংখ্যা ১১০। নিয়মিত এ সূরা তিলাওয়াতের ফজিলত সম্পর্কে বিভিন্ন হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। বিশেষ করে জুমার দিন এ সূরা তিলাওয়াতের ফজিলত অনেক বেশি।

রুহুল মাআনিতে হজরত আনাস রা. থেকে বর্ণিত রাসূল সা. বলেন, সূরা কাহাফ সম্পূর্ণ একসঙ্গে নাজিল হয়েছে এবং এর সঙ্গে সত্তর হাজার ফেরেশতা আগমন করেছেন। এতে বোঝা যায় সূরা কাহাফের মহত্ব অনেক বেশি ।

যে ব্যক্তি জুমার দিন সূরা কাহাফ পাঠ করবে তার নুর এ জুমা থেকে পরবর্তী জুমা পর্যন্ত চমকাতে থাকবে (মিশকাত ২১৭৫)।

আরেক হাদিসে রাসূল সা. বলেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন সূরা কাহাফ পাঠ করবে সে আট দিন পর্যন্ত সব ধরনের ফেতনা থেকে নিরাপদ থাকবে। যদি দাজ্জাল বের হয় তবে তার ফেতনা থেকেও নিরাপদ থাকবে।

মুসনাদে আহমদে হজরত সাহল ইবনে মুয়াজের রেওয়াতে আছে যে, রাসূল সা. বলেন, যে ব্যক্তি সূরা কাহাফের প্রথম ও শেষ আয়াতগুলো পাঠ করে তার জন্য তার পা থেকে মাথা পর্যন্ত একটি নুর হয়ে যায়। আর যে ব্যক্তি সম্পূর্ণ সূরা পাঠ করে তার জন্য জমিন থেকে আসমান পর্যন্ত নূর হয়ে যায়।

জুমার দিনে সূরা কাহফ পাঠ করলে কিয়ামত দিবসে তার পায়ের নিচ থেকে আকাশের মেঘমালা পর্যন্ত নুর আলোকিত হবে এবং দুই জুমার মধ্যবর্তী গুনাহ মাফ হবে। (আত তারগিব ওয়াল তারহিব-১/২৯৮)।

হাদিসে দাজ্জালের বর্ণনা

দাজ্জাল সম্পর্কিত এক হাদিসে এসেছে, হজরত নাওয়াস ইবনে সাময়ান (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদিন সকালে দাজ্জালের কথা আলোচনা করলেন। তিনি আওয়াজকে উঁচু-নিচু করছিলেন। ফলে আমরা মনে করলাম দাজ্জাল খেজুর বাগানের মধ্যেই রয়েছে।

অতঃপর যখন আমরা তার কাছে গেলাম, তখন তিনি আমাদের অবস্থা বুঝে ফেললেন। তিনি বললেন, তোমাদের কী হলো। আমরা বললাম, আল্লাহর রাসুল! আপনি সকালে দাজ্জালের কথা আলোচনা করেছিলেন, আওয়াজকে উঁচু-নিচু করেছিলেন, তাই আমরা মনে করলাম দাজ্জাল হয়তো খেজুর বাগানেই আছে।

তিনি বললেন, তোমাদের ক্ষেত্রে দাজ্জাল ছাড়া অন্যকিছুতে এত বেশি ভয় আমাকে দেখানো হয়নি। যদি আমি তোমাদের মাঝে থাকাবস্থায় সে বের হয়, তা হলে তোমাদের ছাড়া আমি সর্বপ্রথম তার প্রতিরোধ করব।

দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাঁচার আমল

আর যদি তোমাদের মাঝে না থাকাবস্থায় সে বের হয়, তা হলে প্রত্যেকে তার প্রতিরোধ করবে। আল্লাহর শপথ! প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আমার খলিফা রয়েছে। নিশ্চয়ই দাজ্জাল কোঁকড়া চুলবিশিষ্ট যুবক হবে এবং তার চোখ কানা হবে।

যেন আমি আবদুল ওযা ইবনে কাতালের মতো তাকে দেখতে পাচ্ছি। তোমাদের মধ্যে যে তাকে পাবে সে যেন সুরা কাহাফের শুরু অংশ পড়ে। (সহিহ মুসলিম ২৯৩৭, সুনানে আবু দাউদ ৪৩২১, তিরমিজি ২২৪১) 

আরেক হাদিসে দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাঁচতে সুরা কাহাফের প্রথম ১০ আয়াত মুখস্ত করতে বলা হয়েছে। হাদিসের বর্ণনায়— যে ব্যক্তি সুরা কাহাফের প্রথম দশটি আয়াত মুখস্থ করবে, সে দাজ্জালের ফিতনা হতে হেফাজতে থাকবে। (মুসলিম, কিতাবুল ফিতান)

দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাচাঁর দোয়া

দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাচঁতে আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে আরেকটি দোয়ার কথা বলা হয়েছে। দোয়াটি হল-

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَمِنْ عَذَابِ النَّارِ وَمِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ وَمِنْ فِتْنَةِ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন আজাবিল কাবরি, ওয়া মিন আজাবিন্নারি, ওয়া মিন ফিতনাতিল মাহইয়া ওয়াল মামাতি, ওয়া মিন ফিতনাতিল মাসিহিদ্দাজ্জাল।

অর্থ : হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে কবরের শাস্তি, জাহান্নামের শাস্তি, জীবন ও মৃত্যুর ফিতনা ও দাজ্জালের ফিতনা থেকে আশ্রয় চাই।-(বুখারি, হাদিস : ১৩৭৭)

এনএ/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ