জান্নাত চীরস্থায় সুখের বাগান। ফল-মূল, নদ-নদী, গাছ-পালা, তরুলতায় সাজানো থাকবে জান্নাত। যেখানে কোনো ক্ষুধা লাগবেনা। একদিকে থাকবে দুধের নহর। অপর দিকে মধুর। সারি সারি থাকবে কোলবালিশ। সেবক-সেবিকা সব সময় নিয়োজিত থাকবে জান্নাতীর জন্য। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁর অফুরন্ত নেয়ামত জান্নাতের কত চমৎকার বর্ণনা দিয়েছেন-
এরাই তারা, যাদের জন্য রয়েছে স্থায়ী জান্নাতসমূহ, যার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয় নদীসমূহ। সেখানে তাদেরকে অলংকৃত করা হবে স্বর্ণের চুড়ি দিয়ে এবং তারা পরিধান করবে মিহি ও পুরু সিল্কের সবুজ পোশাক। তারা সেখানে (থাকবে) আসনে হেলান দিয়ে। কী উত্তম প্রতিদান এবং কী সুন্দর বিশ্রামস্থল !-সূরা আল কাহাফ: ৩১
অপর আয়াতে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এরশাদ করেন- নিশ্চয়ই পুণ্যবানগণ থাকবে প্রভূত নিআমতের মধ্যে। আরামদায়ক আসনে বসে অবলোকন করতে থাকবে। তাদের চেহারায় সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের দীপ্তি দেখতে পাবে। তাদেরকে পান করানো হবে বিশুদ্ধ পানীয়, যাতে মোহর করা থাকবে। সে পানীয়ে ‘তাসনীম’-এর পানি মেশানো থাকবে। তা একটি প্রস্রবণ, যা থেকে আল্লাহর সান্নিধ্যপ্রাপ্ত বান্দাগণ পানি পান করে। সূরা মুতাফিফীন ২৫-২৯।
সত্যিই জান্নাতের এ নেয়ামত ভাবতেই অবাক লাগে। আর অন্তরে আশা জাগে আহ আমি যদি জান্নাতী হতে পারতাম। জান্নাত তো আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মুমিন বান্দার জন্যই সাজিয়েছেন। এর জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমল করতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। আল্লাহর রাসূল সা. বলেছেন কেউ যদি জান্নাতে বৃক্ষ আর তরুলতার নয়নাভিরাম দৃশ্য অবলোকন করতে চায় সে যেনো বেশি বেশি তাসবীহ পড়ে।
হযরত ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত । রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন - মিরাজের রজনীতে আমি ইবরাহীম আ. এর সঙ্গে সাক্ষাত করেছি। তিনি বললেন- হে মুহাম্মাদ আপনার উম্মাতকে আমার সালাম পৌছিয়ে দিন এবং তাদেরকে জানান যে, জান্নাতের যমীন অতীব সুগন্ধি সমৃদ্ধ এবং সেখানকার পানি অত্যন্ত সুস্বাদু। তা একটি সমতল ভূমি এবং তার গাছপালা হল “সুবহানাল্লাহ, ওয়ালহামদু লিল্লাহ, ওয়া লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার"। তিরমিযী শরীফ ৩৪৬২।
অতএব জান্নাতে যেতে শুধু মনের স্বপ্ন আর বুকভরা আশাই যথেষ্ট নয়। এ নেয়ামত পেতে রব্বে কারীমের যিকিরে জিহ্বা তরুতাজা রাখতে হবে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে বেশী বেশী এ তাসবীহ سُبْحَانَ اللَّهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ وَلاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَاللَّهُ أَكْبَرُ পড়ার তাওফীক দান করেন। আমীন।
এমআই/