শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৫ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
খুলনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা নেতানিয়াহুকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ইসরায়েলি নাগরিক গ্রেপ্তার ‘উলামায়ে কেরামদের বাদ দিয়ে দেশের উন্নয়ন অসম্ভব’ নিউইয়র্কে যাদের সঙ্গে বৈঠক হতে পারে প্রধান উপদেষ্টার গাজাজুড়ে ইসরায়েলের নৃশংস হামলা, নারী-শিশুসহ নিহত ২৮ ফিলিস্তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল প্রকার রাজনীতি বন্ধের সিদ্ধান্ত 'ঢাবি ও জাবির হত্যাকাণ্ডে জড়িত খুনীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে' ঢাবিতে যুবক হত্যায় ছাত্রলীগ নেতাসহ ৩ জন আটক কওমী মাদরাসার ছাত্রদেরকে বিসিএস এ অংশগ্রহণের সুযোগ না দেওয়া বৈষম্য: মুফতী ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই  সাগর-রুনি হত্যার বিচারের দাবিতে ঢাকায় সাংবাদিকদের বিক্ষোভ সমাবেশ

সেনাবাহিনীতে যোগ দিলে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দেবে মিয়ানমারের সরকার

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
ফাইল ছবি

বিদ্রোহীদের সঙ্গে দেশের ভেতরে যুদ্ধে লেজে-গোবরে অবস্থা এখন মিয়ানমার সেনাবাহিনীর। এ অবস্থায় বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ও দেশের ভেতরে কোণঠাসা হয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের জন্য বিশেষ প্রস্তাব দিয়েছে দেশটির জান্তা সরকার।

বলা হচ্ছে, বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য সেনাবাহিনীতে যোগ দিলে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।

গতকাল শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে থাইল্যান্ড থেকে পরিচালিত দেশটির ইংরেজি সংবাদমাধ্যম ইরাবতি।

রাখাইনের অধিকারকর্মী ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, জান্তা বাহিনী জানিয়েছে, যেসব রোহিঙ্গা পুরুষ সেনাবাহিনীতে যোগ দেবেন তাদের এক বস্তা চাল, নাগরিকত্বের একটি পরিচয়পত্র এবং মাসিক ১ লাখ ১৫ হাজার কিয়াট বেতন দেওয়া হবে। যা বাংলাদেশি অর্থে সাড়ে চার হাজার টাকার সমান।

তবে সাধারণ রোহিঙ্গাদের প্রলুব্ধ করতে না পেরে এখন জোরপূর্বক তাদের ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। যাদের ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তাদের রাজধানী সিত্তেতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এবং সেখানে দুই সপ্তাহের সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

রোহিঙ্গাদের ধরে নিয়ে যেতে বিভিন্ন গ্রাম এবং শরণার্থী ক্যাম্পে হানা দিচ্ছে জান্তা বাহিনী। গ্রামবাসী ও অন্যদের আশঙ্কা, তাদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হবে।

এখন পর্যন্ত প্রায় ৪০০ রোহিঙ্গা পুরুষকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং তাদের দুই সপ্তাহের প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে।

ফ্রি রোহিঙ্গা কোয়ালিশনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা নে সান বলেছেন, ‘প্রশিক্ষণের সময় মাত্র দুই সপ্তাহ। যাদের দুই সপ্তাহের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে তাদের জান্তা বাহিনী শুধু মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে।’

এর মধ্যে সিত্তের এবং বুচিডংয়ের বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে ৪০০ জনকে প্রশিক্ষণের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

গত ১০ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের সামরিক জান্তা ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী সব নারী-পুরুষকে সামরিক বাহিনীতে যোগদান বাধ্যতামূলক করে। এর পরই রোহিঙ্গা পুরুষদের সামরিক বাহিনীতে যুক্ত করার কার্যক্রম শুরু করে জান্তা।

সংবাদমাধ্যম ইরাবতি জানিয়েছে, জান্তা বাহিনী ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী সবার তালিকা তৈরির জন্য বুচিডং, মংডু এবং সিত্তের গ্রাম প্রশাসক ও নেতাদের চাপ দিয়েছে।

এর মধ্যে ছোট গ্রাম থেকে অন্তত ৫০ জন, বড় গ্রাম ও প্রতিটি শরণার্থী ক্যাম্প থেকে অন্তত ১০০ জনের তালিকা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

ফ্রি রোহিঙ্গা কোয়ালিশনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা নে সান আরও বলেছেন, ‘আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারি বুধবার পর্যন্ত সিত্তের শরণার্থী ক্যাম্প থেকে ৩০০ জনকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং তারা এখন প্রশিক্ষণ নিচ্ছে।’

এর আগে বুচিডং থেকে গত ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি শতাধিক মুসলিম রোহিঙ্গা পুরুষকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে তাদের সামরিক প্রশিক্ষণের জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

যদিও আইন অনুযায়ী বাধ্যতামূলকভাবে সেনাবাহিনীতে যোগদানের বিষয়টি শুধু মিয়ানমারের নাগরিকদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। কিন্তু রোহিঙ্গাদের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি না দিলেও এখন তাদের সেনাবাহিনীতে যুক্ত করা হচ্ছে।

রোহিঙ্গারা জানিয়েছেন, যাদের জোরপূর্বক ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে; তাদের জন্য তারা সবাই চিন্তিত। তারা আরও চিন্তিত কারণ, যেকোনো সময় তাদেরও প্রশিক্ষণের জন্য নিয়ে যাওয়া হবে।’

এদিকে গত বছরের অক্টোবর-নভেম্বরে রাখাইন রাজ্যে জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান শুরু করে আরাকান আর্মির যোদ্ধারা। তাদের হামলায় অনেক ঘাঁটি ও ক্যাম্প থেকে পালিয়ে গেছে জান্তা সেনারা। এখন আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য রোহিঙ্গাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। সূত্র: ইরাবতি

এনএ/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ