শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫ ।। ১৩ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ২৮ শাওয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
পটিয়ার ইতিহাসে মানুষ গড়ার শ্রেষ্ঠ কারিগর ছিলেন তিনি আজ জমিয়তের কাউন্সিল, কী পরিবর্তন আসছে নেতৃত্বে? মসজিদে নববীর ইমামের পেছনে নামাজ পড়তে মালদ্বীপে মুসল্লিদের ঢল আ.লীগ নিষিদ্ধের কথা বললে সরকার পশ্চিমাদের দোহাই দেয় : সারজিস নারী সংস্কার কমিশন বাতিল না করলে আন্দোলনের দাবানল জ্বলবে: হেফাজত আটপাড়ায় হেফাজতে ইসলামের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত কর্মস্থলে দুর্ঘটনাজনিত ক্ষতিপূরণের পরিমাণ বৃদ্ধির সুপারিশ মজলিসে আমেলার বৈঠকে জমিয়ত, রাত পোহালেই কাউন্সিল কাল ঢাকায় ইসলামী আন্দোলনের গণমিছিল, প্রস্তুতি সম্পন্ন ‘রাষ্ট্র কাঠামোর মৌলিক সংস্কার না হলে আবারও ফ্যাসিবাদ মাথাচাড়া দেবে’

কওমি মাদরাসার নেসাবে মানতেক শাস্ত্রের প্রয়োজন কতটুকু

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

|| মাওলানা মুহাম্মাদ হেমায়েত উদ্দীন ||

ইদানিং কওমি মাদরাসার নেসাবে মানতেক শাস্ত্র কতটুকু থাকবে বা থাকবে না তা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া ও প্রিন্ট মিডিয়ায় বেশ চর্চা দেখা যাচ্ছে। কেউ কেউ মানতেক শাস্ত্রকে নেসাব থেকে একেবারেই ধুয়েমুছে বিদায় করে দেওয়ার পক্ষে বলছেন। এটা তাফরীত তথা ছাড়াছাড়ি। আবার কেউ কেউ এর সম্পূর্ণ বিপরীত আগের যুগের মতোই মানতেক শাস্ত্রের ফুল প্যাকেজ পুনঃপ্রতিষ্ঠার পক্ষে বলছেন। এটা ইফরাত তথা বাড়াবাড়ি।

এ ক্ষেত্রে আমি বাস্তবসম্মত অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বলতে চাই- এই ইফরাত তাফরীত-এর মাঝে ভারসাম্যপূর্ণ বক্তব্য হচ্ছে- মানতেক শাস্ত্রের কিছু প্রয়োজন রয়েছে, তবে ফুল প্যাকেজের প্রয়োজন (এক সময় কিছুটা থাকলেও) এখন নেই।

কিছু প্রয়োজন রয়েছে এ কারণে বলছি যে, আকাবির আসলাফের বহু কিতাবে মানতেক শাস্ত্রের কিছু পরিভাষার ব্যবহার রয়েছে। যেমন: সুগরা, কুবরা, হদ্দে আওসাত, নতীজা, নেছবতে তাসাউয়ী, তাবায়ুন, উমূম-খুসূস মুতলাক, উমূম-খুসূস মিন্ ওয়াজহিন প্রভৃতি। এগুলো বুঝার জন্য মানতেক শাস্ত্রের এসব পরিভাষা সম্বন্ধে জ্ঞান থাকা আবশ্যক। এর জন্য মানতেক শাস্ত্রের প্রাথমিক পর্যায়ের কিতাব যেমন তাইসীরুল মানতিক ও মিরকাত- এ দু’টো বা এর সমমানের কিতাবই যথেষ্ট। এর জন্য এ শাস্ত্রের গুরুভার কিতাবপত্রের আবশ্যকতা নেই।

অতএব কওমী মাদরাসার নেসাবে মানতেক শাস্ত্রের প্রাথমিক পর্যায়ের দু’ একটি কিতাব রাখাই যথেষ্ট। হ্যাঁ, যারা একান্তই তর্কশাস্ত্রে বিজ্ঞ হতে চায়, তাদের জন্য বেফাক কর্তৃপক্ষ এ শাস্ত্রের আরও দুএকটি উঁচু পর্যায়ের কিতাব ঐচ্ছিক পর্যায়ে নেসাবভুক্ত রাখলে সেটা বেফাক কর্তৃপক্ষের বিবেচনা।

যারা বলেন, মানতেক শাস্ত্র ছাড়া হেদায়া, শরহে আকায়েদ, বায়জাবী, রূহুল মাআনী, আবুস সূঊদ প্রভৃতি অনেক কিতাব ভালোভাবে বুঝা ও বোঝানো সম্ভব নয়; তাদের উদ্দেশে বলছি, আল-হামদু লিল্লাহ এই কিতাবগুলো আমরা পড়েছি এবং অনেকটা দরসে পড়িয়েছিও। উপরোক্ত কিছু পরিভাষা ব্যতীত মানতেক শাস্ত্রের প্রয়োগ ছাড়াও আল-হামদু লিল্লাহ এগুলো বুঝতে ও বোঝাতে সক্ষম হয়েছি। আমি যাত্রাবাড়ি বড় মাদরাসায় অনেক বছর হেদায়া ছালেছ পড়িয়েছি। হাজার হাজার ছাত্র রয়েছে, যারা আমার কাছে হেদায়া ছালেছ পড়েছে। ইনশা আল্লাহ তারা সাক্ষ্য দিবে মানতেক শাস্ত্রের সহযোগিতা ছাড়াও আল-হামদু লিল্লাহ তারা হেদায়া ছালেছ ভালোভাবে বুঝতে সক্ষম হয়েছে।

যারা বলেন, মানতেক শাস্ত্র ছাড়া কুরআন-হাদীছ ভালোভাবে বুঝা সম্ভব নয়, তাদের কাছে আরয- উদাহরণ স্বরূপ কুরআন হাদীছের এমন দুই চারটা ভাষ্য দেখাবেন কি যেগুলো মানতেক শাস্ত্রের ব্যাপক জ্ঞান ছাড়া কোনোভাবেই বুঝা সম্ভব নয়? তাদের একথাও মনে রাখা চাই মানতেক শাস্ত্রের প্রচলন ঘটার আগেও কুরআন হাদীছ বুঝা ও বুঝানো হয়েছে।

কেএল/


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ