শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫ ।। ১৯ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ৪ জিলকদ ১৪৪৬


গাজায় কমপক্ষে ৩১ ফিলিস্তিনি শহীদ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে ‘পরিস্থিতি বিপর্যয়কর’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর টানা বিমান হামলা ও অবরোধের ফলে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে অন্তত ৩১ জন ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছেন বলে আল জাজিরাকে জানিয়েছে চিকিৎসা সূত্র। অবরুদ্ধ এই উপত্যকায় খাদ্য ও ওষুধ প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকায় মানবিক সংকট চরমে পৌঁছেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) একে 'বিপর্যয়কর' পরিস্থিতি হিসেবে অভিহিত করেছে।

শুক্রবার ভোরে গাজা শহরের মধ্যাঞ্চলের আল-বুরেইজ শরণার্থী শিবিরে একটি বাড়িতে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানের হামলায় পাঁচজন শহীদ হন, যাদের মধ্যে তিনজন নারী। একই সময়ে, দক্ষিণ গাজার খান ইউনুস শহরের কাওয়াযা আবু রাশওয়ান এলাকায় একটি সংঘবদ্ধ হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী, এবং উত্তরাঞ্চলের বেইত লাহিয়ার একটি কৃষি জমিতে বোমাবর্ষণ করে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় খান ইউনুসের জনবহুল আবু সাহলুল পরিবারের বাড়িতে বিমান হামলায় আটজন শহীদ হন, যাদের মধ্যে দুইজন শিশু। একই সময়ে গাজার শুজাইয়া এলাকায় আরেকটি হামলায় একজন শিশু ও আরও একজন ফিলিস্তিনি শহীদ হন।

গাজার তেল আল-হাওয়া এলাকায় খাদ্যের সন্ধানে ঘোরাঘুরির সময় এক ফিলিস্তিনি ইসরায়েলি ড্রোনের গুলিতে আহত হন। এছাড়া বেইত লাহিয়ার পূর্বাঞ্চলে কৃষিকাজে নিয়োজিত ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি গোলাবর্ষণে কয়েকজন শহীদ হন। মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ শহরে বাস্তুচ্যুতদের আশ্রয়কেন্দ্রে হামলায় এক কিশোর শহীদ এবং কয়েকজন নারী ও শিশু আহত হন।

গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া গণহত্যার পর থেকে শহীদ ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫২,৪১৮ জনে এবং আহতের সংখ্যা ১১৮,৯১১ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৮ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে একজনের মরদেহ ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে কয়েক মাস পর উদ্ধার করা হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও ৭৭ জন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হাসপাতালে ওষুধ না থাকায় এবং হাসপাতালগুলোর ব্যাপক ধ্বংসের কারণে শিশুদের মধ্যে রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। হাজার হাজার শিশু নির্মমভাবে নিহত বা গুরুতর আহত হচ্ছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক টেড্রোস আদহানম গেব্রিয়েসুস বলেছেন, গাজার পরিস্থিতি বিপর্যয়কর এবং উপত্যকার প্রায় ২০ লাখ মানুষ চরম খাদ্য সংকটে ভুগছে। সংস্থাটির জরুরি বিভাগের পরিচালক রিক ব্রেনেন বলেন, বিশ্ব সম্প্রদায়ের নিষ্ক্রিয়তা গাজা উপত্যকার শিশুদের মন-দেহ ধ্বংসে সহায়তা করছে।

জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (WFP) জানিয়েছে, গাজার দোকানে আর কোনো খাদ্যপণ্য নেই এবং তাদের কাছেও বিতরণের জন্য কিছুই অবশিষ্ট নেই। সীমান্ত বন্ধ থাকায় খাদ্য সহায়তা বন্ধ রয়েছে এবং পরিস্থিতি দিনকে দিন অবনতির দিকে যাচ্ছে। জরুরি ভিত্তিতে মানবিক সহায়তা গাজায় প্রবেশ করাতে হবে।

উল্লেখ্য, ইসরায়েল জানুয়ারিতে স্বাক্ষরিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি থেকে সরে আসার পর থেকে গাজায় গণহত্যামূলক অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

এমএম/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ