|| হুমায়ুন আইয়ুব ||
ফুলে প্রেম আছে, আছে আনন্দ বেদনার ছবি। মমতা ও ভালোবাসার রঙে কাছে টানার জাদুও আছে। ফুল কথা বুঝে মানুষের, বুঝে মানুষের ভাষা, স্বপ্ন ও চাহিদা। মানুষ বুঝে ফুলকে, ভালোবাসে বাগানের পুষ্পকলি। পৃথিবীতে ছড়িয়ে আছে অনেক মানুষ, ফুলের মানুষ, মানুষের ফুল।
আরবের মরুতে ধু ধু বালির জমিনে একজন ফুলের মানুষ এসেছিলেন। ফুলের খোশবু, ফুটন্ত ফুলের ঘ্রাণে মুগ্ধ হয়েছিলেন তিনি। ফুলের প্রতি ছিল তার প্রাণের টান। ফুল-প্রেমিক নবী মুহাম্মদের ভাষা থেকে আবু উসমান আন নাহদি বলেন, রাসূল সা. বলেছেন- ‘যদি কাউকে ফুল উপহার দেয়া হয় সে যেন তা ফিরিয়ে না দেয়। কেননা তা জান্নাত থেকে আনা হয়েছে।’ তিরমিজি ২য় খণ্ড ১০৭ পৃষ্ঠা
হাদিসের শ্রেষ্ঠতম গ্রন্থ বুখারি শরিফে উল্লেখ আছে রাসুল সা.- এর অভ্যাস ছিল কেউ তাকে ফুল উপহার দিলে তিনি তা ফিরিয়ে দিতেন না। নবীজি সা. হাফেজ ও কুরআন পড়ুয়াকে ফুলের সঙ্গে উপমা করেছেন। জান্নাতের রূপ সৌন্দর্য সবুজ সতেজ বাগ-বাগিচার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেছেন যখন উপযুক্ত ব্যক্তি জান্নাতের দরজার কাছে যাবে তখন মন জুড়ানো চোখ ধাধানো একটি ফুল দেখতে পাবে। সে ফুলের ঘ্রাণে মুগ্ধ হবে। সে অপলক দৃষ্টিতে নীরব মনে চেয়ে থাকবে। বুখারি ১ম খণ্ড ১১১ পৃষ্ঠা
আল্লাহ সুন্দর, ভালোবাসেন সুন্দরকে। ফুল সুন্দর বলেই ফুল ভালোবাসতেন নবীজি। একজন কবি বলেছেন-
‘জোটে যদি মোটে একটি পয়সা খাদ্য কিনিও ক্ষুধার লাগি
জোটে যদি মোটে দুইটি পয়সা ফুল কিনে নিও হে অনুরাগি।’
ফুলের নবী মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সা.-এর ফুলপ্রেমের কথা আরো স্পষ্ট হয় বুখারি শরিফের দ্বিতীয় খণ্ডের ৯৫০ পৃষ্ঠায় চোখ রাখলে। হজরত আবু সাইদ বলেন রাসুল সা. বলেছেন- আমার খুব আশঙ্কা হচ্ছে আল্লাহ তায়ালা তোমাদের জন্য জমিনের বরকত বন্ধ করে দেবেন। উপস্থিত সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞাস করলেন হুজুর জমিনের বরকত কী? হুজুর সা. বললেন- জমিনের ফুল, বাগানের কলি।
উত্তপ্ত মরুর পাহাড়-পর্বত আর ধু-ধু বালির জমিনে জন্ম নেয়া নবীজির হৃদয়ে ফুলের প্রতি এতো ভালোবাসা, কথায় কথায় ফুলের উপমা দেয়া, আমাদের প্রতি কি ফুলের মানুষ হওয়ার ইঙ্গিত বহন করে না? ফুলের সৌন্দর্য মানুষকে পবিত্র হতে প্রেরণা জোগায়। তাই আমাদের উচিত, আমরা যেন ফুলের মতো সুন্দর হই। ফুল প্রেমিক হই। প্রেমিক হয়ে এ সমাজ বদলে দিই।
হুআ/