পোশাকশ্রমিকদের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহসড়ক অবরোধের ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেছে। এখনো কোনো সুরাহা হয়নি। গাজীপুরে একটি তৈরি পোশাক কারখানায় ৩ মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে শনিবার সকাল ৮টা থেকে এ সড়ক অবরোধ শুরু হয়। রবিবার সকালেও সে তাদের কর্মসূচি চলছিল। এতে ১২ কিলোমিটারজুড়ে দেখা দিয়েছে তীব্র যানজট। ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন এ সড়কের যাত্রীরা। শ্রমিকদের আন্দোলন বন্ধ করতে দফায় দফায় তাদের সঙ্গে আলোচনা করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তবে প্রতিবারই আলোচনা ব্যর্থ হচ্ছে।
রোববার সকাল ৮টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ভোগড়া এলাকায় দেখে গেছে, মহাসড়কের দুই পাশে ১২ কিলোমিটারজুড়ে যানজটে লেগে আছে। ফলে বিভিন্ন পণ্যবাহী যানবাহনের মালামাল নষ্ট হচ্ছে বলে জানান পরিবহন চালকরা। চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন যাত্রীরা।
আন্দোলনে অংশ নেয়া নারী শ্রমিক রেহানা বেগম গণমাধ্যমকে জানান, ‘ঘাম ঝড়িয়ে কাম করছি। মালিক তিন মাসের বেতন না দিয়ে আমাগো উপর কোন অত্যাচার চালাইতাছে। আমরা আমাগো বেতন বুইঝা না পাওয়া পর্যন্ত সড়ক ছাড়মু না।’
আরেক শ্রমিক আনোয়ার মিয়া বলেন, ‘গত মাসে বেতন দেয়ার কথা বইলা আরও এক মাস কাজ করাইছে। আমাগো কি বউ পোলাপাইন নাই। আমাগো কি পেট নাই। ৩ মাসের বাসা ভাড়া বাকি, ঘরে খাওন নাই। এইগুলা দেখবো কেডা। দুই দিন পর তো বাড়িওয়ালায় লাথি দিয়া বাহির কইরা দিব বাড়ি থাইকা।’
ভোগড়া বাইপাস এলাকায় পরিবার নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মোজাম্মেল হক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বউ বাচ্চা নিয়ে গ্রামের বাড়ি যাব। ২ কিলোমিটার হেঁটে আসছি। এখানে এসে দেখি সড়ক বন্ধ। তাই নিরুপায় হয়ে দাঁড়িয়ে আছি।’
এ পথে আটকা পড়া আলম এশিয়া পরিবহনের চালক আফজাল মন্ডল বলেন, ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে শনিবার বেলা ১১টার দিকে এখানে আটকেছি। গাড়ি ভর্তি যাত্রী ছিল। কয়েক ঘণ্টা বসে থেকে যাত্রীরা গাড়ি থেকে নেমে হেটে চলে গেছে। তারপর থেকে সারাদিন সারারাত এখানেই আটকে আছি।
গাজীপুর শিল্প পুলিশ-২ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম সাংবাদিকদের জানান, গাজীপুরের মালেকের বাড়ি, বোর্ডবাজার এলাকায় শ্রমিকরা বকেয়া বেতনের দাবিতে আন্দোলন করছে। তারা মহাসড়ক অবরোধ করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দু'পক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছে।