|| হাসান আল মাহমুদ ||
সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ও চাঁদপুর-১ (কচুয়া) আসনের বিএনপি মনোনীত সাবেক সংসদ সদস্য আ ন ম এহসানুল হক মিলন বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়ার সরকার কওমি মাদরাসার প্রথম সার্টিফিকেটের ব্যবস্থা করেছিলেন। সে সময়ে আমি মামুনুল হকের পিতা আজিজুল হক সাহেবসহ আমার বাসায় মিটিং করে এ বিষয়ে প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। সারা বাংলাদেশে কওমি মাদরাসা সম্প্রসারিত হোক এবং সত্যিকারার্থে দ্বীনি শিক্ষা কওমি মাদরাসাই দিয়ে থাকে।
তিনি বলেন, এই কওমি মাদরাসাকে ধ্বংস করার জন্য শাপলা চত্বরে হেফাজতের উপর আক্রমণ করেছিল বিগত সরকার। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন শেষ বিচারটি করে দিলেন, কোথা থেকে আবাবিল পাখি এলো, আর দেশটাকে স্বাধীন করে দিয়ে গেলো। আজকে কচুয়ায় নয় শুধু, এই শীতে সারা বাংলাদেশে হাজার হাজার মাহফিল দেখছি, কিন্তু গত শীতে এতো মাহফিল দেখতে পাইনি।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সন্ধায় চাঁদুপুরের কচুয়ায় অবস্থিত দেশের ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি বিদ্যাপীঠ জামিয়া ইব্রাহীমিয়া উজানী মাদরাসার মাহফিলে এসব বলেন তিনি।
এসময় তিনি ১৭ বছর পর উজানীর মাহফিলে অংশ নিলেন সে প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, ২০০৭ সালের পরে আজকের ২০২৪ সালের এই দিনটি আমার জন্য এক ঐতিহাসিক দিন। আমি ১৯৯৫ সালে কচুয়ায় আসার পর উজানীর এমন কোনো মাহফিল ছিল না, আসিনি। কিন্তু ২০০৭ সালের পর আর আসতে পারিনি। এটা অত্যন্ত কষ্টের ব্যাপার ছিল।
নিজের রাজনীতির সূচণা কিভাবে শুরু করেছিলেন সে প্রসঙ্গ তুলে ধরে সাবেক এই শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি যখন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরে আসি, তখন হজরত মোবারক করীম পীর সাহেব রহ. এর কাছে এসে প্রথম দোয়া চেয়ে এই কুচয়াতে রাজনীতি করি। তিনি আমাকে এতো বেশি আদর করতেন, আজকে এখানে এসে মনে পড়ছে উনার সেই কথাগুলো।
তিনি বলেন, এই মাদরাসা থেকে আমার রাজনীতি শুরু হয়েছিল, হজরত ক্বারী ইব্রাহীম সাহেব রহ. এর কবর জিয়ারত থেকেই কচুয়ায় জগণের খেদমত করব এই প্রতিজ্ঞা নিয়ে বের হয়েছিলাম। ২০০১ সালে মন্ত্রী হয়েছিলাম। সারা বাংলাদেশে খেদমত করেছিলাম। বিগত দিনের মত এই মাদরাসার খেদমত করে যাব ইনশাআল্লাহ কথা দিয়ে যাচ্ছি।
প্রসঙ্গত, চাঁদপুরের কচুয়ার এই উজানী মাহফিল দেশের অন্যতম বৃহত্তম মাহফিল। মাহফিল কেন্দ্র করে সারা কচুয়ায় ঈদ উৎসব বিরাজ করে। এবছর ২৬ ও ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ইংরেজি, রোজ: বৃহস্পতি ও শুক্রবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কাল বাদ ফজর আখেরী মোনজাতের মাধ্যমে শেষ হবে এই মাহফিল।
এদিকে উজানী মাহফিল থেকে সরেজমিনে আওয়ার ইসলামের বিশেষ প্রতিনিধি তানযিল হাছান জানান, আজকে উজানী ময়দানে লক্ষ লক্ষ মানুষের উপস্থিতিতে বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। জুমার নামাজের ইমামতি ও খুৎবা প্রদান করেন মাওলানা আশেক এলাহী (পীর সাহেব উজানী)।
উজানী মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা মিজানুর রহমান সূত্রে তানযিল জানান, মাহফিলে আজকে বয়ান করেছেন মাওলানা ফজলে এলাহী (পীর সাহেব উজানী), আল্লামা শেখ আহমদ, শাইখুল হাদীস (হাটহাজারী মাদ্রাসা), মুফতি সাখাওয়াত হুসাইন রাজী (লালবাগ মাদরাসা ঢাকা), মুফতি মুশতাকুন্নবী কাসেমী (সুধন্যপুর কুমিল্লা), মুফতি ফয়জুল্লাহ ইব্রাহীমী, মাওলানা ইমরান মাজহারী, মাওলানা মাসুদুর রহমান ইব্রাহীমী, মাওলানা মুখলিসুর রহমান কাসেমী।
এছাড়া আরো বয়ান করবেন মুফতি দিলাওয়ার হুসাইন (আকবর কমপ্লেক্স ঢাকা), মাওলানা নজির আহমদ, টঙ্গী), মাওলানা মাহবুবে এলাহী (মোহতামিম উজানী মাদরাসা), মুফতি নজরুল ইসলাম কাসেমী, মুফতি রেজাউল করিম আবরার, মাওলানা শিব্বির আহমদ (সাহেবজাদা পীর সাহেব উজানী) প্রমুখ ওলামায়ে কেরাম।
হাআমা/