মুহাম্মাদ ইবরাহীম আল খলীল: হাটহাজারী মাদরাসার প্রধান মুফতি ও শায়খুত তাফসির আল্লামা নূর আহমাদ রহ.। তিনি আর আমাদের মাঝে নেই। প্রভুর ডাকে সাড়া দিয়ে চলে গেছেন না ফেরার দেশে। তিনি ছিলেন অনন্য ও বরেণ্য এক ব্যক্তিত্ব। ইলমি ও ইসলামী মহলে যার খ্যাতি ছিল আকাশ ছোঁয়া। ফতোয়া প্রদানে অগাধ পাণ্ডিত্যের কারণে এক নামে যিনি পরিচিত। ইলমি ময়দানে দীর্ঘ কয়েক দশক যাবত বট বৃক্ষের ন্যায় ছায়া দিয়ে গেছেন। মুফতিয়ে আজম, মুফতি ফয়জুল্লাহ রহ.এর এই শাগরেদ আজ আর আমাদের মাঝে নেই। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
আল্লামা মুমতাজুল করিম বাবা হুজুর রহ. ও আল্লামা সাব্বির আহমাদ রহ. দুটি নক্ষত্রের বিদায়ের রেশ কাটতে না কাটতেই তৃতীয় দিনে আল্লামা নূর আহমাদ রহ. আমাদের থেকে বিদায় নিলেন। ইলমি অঙ্গনের আরও একটি উজ্জ্বল তারকা খসে পড়লো।
মুরুব্বীদের বিদায়ের মিছিল দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হতেই চলেছে। কোটা পূরণ হচ্ছে না। সামনে ভয়ংকর অন্ধকার হাতছানি দিচ্ছে। জানিনা কি আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। হে আল্লাহ আমাদেরকে সকল ধরনের মুসিবত থেকে হেফাজত করো। সকল অবস্থায় দ্বীনের উপর অটল থাকার তাওফিক দান করো। আমিন।
২০২০ সালে আল্লামা শাহ আহমদ শফী রহ.এর জানাজা পড়তে যখন হাটহাজারী মাদরাসায় যাই, তখন আল্লামা নূর আহমাদ রহ. হুজুরের সাথে সাক্ষাতের সুযোগ হয়। একেবারে বয়োবৃদ্ধ একজন আলেম। চলাফেরা করতে পারেন না। হুইল চেয়ারী যার একমাত্র অবলম্বন। প্রথম দেখাতেই একটা রুহানিয়্যাতের ছাপ লক্ষ্য করলাম। এতদিন শুধু তার নাম লোক মুখে শুনতাম এবং ফতোয়ার পাতায় পড়তাম। আর আজ নিজ চোখে দেখলাম এবং সাক্ষাৎ করলাম। অনেক ইচ্ছা আর আগ্রহ ছিল তার সাথে কথা বলি এবং তার অমূল্য ফুয়ুজ ও বরকত লাভে ধন্য হই। কিন্তু তা আর হয়ে ওঠেনি। দীর্ঘক্ষন আনত নয়নে তার দিকে তাকিয়ে থাকলাম। দেখলাম তার ব্যক্তিত্বকে। গ্রহণ করলাম তার রুহানিয়্যাত থেকে। এখনো আমার চোখে ঝলমল করছে তার সেই মুখটি। তার সেই কথা বলার ভঙ্গিটি। এই বরেণ্য মনিষিটি আজ আর আমাদের মাঝে নেই। এই কথাটা মনে হতেই যেন কষ্টে বুকটা ফেটে যাচ্ছে। হে আল্লাহ তুমি সবাইকে সবরে জামিল ইখতিয়ার করার তাওফিক দাও। আকল্লামা নূর আহমাদ সহ চলে যাওয়া আমাদের সকল আকাবিরদেরকে জান্নাতের উঁচু মাকাম দান করো। আমিন।
লেখক: শিক্ষক, মাদরাসা আশরাফুল মাদারিস, তেজগাঁও ঢাকা।
কেএল/