মুফতি সাদেকুর রহমান।।
১.বিনা প্রয়োজনে কোন কিছুর স্বাদ গ্রহণ করা বা চিবানো। তবে স্বামী কঠোর স্বভাবের হলে স্ত্রীর জন্য তরকারীর স্বাদ পরীক্ষা করা মাকরুহ নয়।
২. এমনভাবে কুলি করা কিংবা নাকে পানি পৌছানো যে পানি ভিতরে প্রবেশের আশংকা হয়। হযরত লাকিত ইবনে সাবিরা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন- بالغ في الاستنشاق إلا أن تكون صائما ‘নাকে পানি দেওয়ার সময় ভালোভাবে নাকে পানি দাও, তবে রোযাদার হলে নয়।-জামে তিরমিযী হাদীস: ৭৬৬; সুনানে আবু দাউদ ১/৩২২; মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা হাদীস : ৯৮৪৪
৩. ইচ্ছাকৃতভাবে মুখে অনেক থুথু জমা করে গিলে ফেলা।
৪. কয়লা, মাজন বা টুথপেষ্ট দ্বারা দাঁত মাজা।
৫. বিনা প্রয়োজনে শিশুর খাদ্য চিবিয়ে দেওয়া। রোযাদার মহিলা তার বাচ্চার জন্য খাদ্য চিবানোকে ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. দোষের বিষয় মনে করতেন না।-মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক ৪/২০৭
৬. ইস্তেন্জায় অধিক পানি ব্যবহার করা।
৭. পানিতে বায়ু নিঃসরণ করা।
৮. গীবত – শেকায়াত করা, মিথ্যা বলা, গালি- গালাজ করা,টিভি-সিনেমা ইত্যাদি দেখা, গান-বাদ্য শ্রবণ করা, এবং যে কোনো বড় ধরনের গুনাহে লিপ্ত হওয়া।
আর এ কাজগুলো যে সর্বাবস্থায় হারাম তা তো বলাই বাহুল্য। একটি হাদীসে কুদসীতে আছে, আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন- اذا كان يوم صوم احدكم فلا يرفث ولا يصخب ‘তোমাদের কেউ যখন রোযা রাখে তখন সে যেন অশালীন কথাবার্তা না বলে ও হৈ চৈ না করে।-সহীহ বুখারী হাদীস : ১৯০৪;
সুনানে আবু দাউদের রেওয়ায়েতে এ শব্দ রয়েছে, ‘রোযাদার যেন কোনো অন্যায়-অপরাধে লিপ্ত না হয়।’ হাদীস : ৩৩৬৩ (১/৩২২)
হযরত আবু হুরায়রা রা. বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি মিথ্যা-প্রতারণা ও গুনাহর কাজ ত্যাগ করে না আল্লাহ তাআলার নিকট তার পানাহার থেকে বিরত থাকার কোনো মূল্য নেই।’-বুখারী, হাদীস ১৯০৩; সুনানে আবু দাউদ হাদীস : ৩৩৬২ (১/৩২২)
৯.রোযা অবস্থায় শরীর থেকে ইচ্ছাকৃতভাবে ইনজেকশন ইত্যাদির মাধ্যমে এ পরিমাণ রক্ত বের করা মাকরূহ, যার দ্বারা রোযাদার খুব দুর্বল হয়ে যায়। সাবিত আল বুনানী রাহ. বলেন, হযরত আনাস রা. কে জিজ্ঞাসা করা হল রোযার হালতে শিঙ্গা লাগানোকে কি আপনারা মাকরূহ মনে করতেন? তিনি বলেন, ‘না। তবে এ কারণে দুর্বল হয়ে পড়লে তা মাকরূহ হবে।’-সহীহ বুখারী হাদীস ১৯৪০
১০.বীর্যপাত কিংবা সহবাসের আশংকা থাকা অবস্থায় স্ত্রীকে চুম্বন করা।
১১.. স্ত্রীর ঠোঁটে চুম্বন করা, চাই বীর্যপাত বা সহবাসের আশঙ্কা থাকুক বা না থাকুক।
১২. বিবস্ত্র অবস্থায় স্ত্রীকে আলিঙ্গন করা।
১৩. রোজা অবস্থায় মাথায় পানি ঢালা এবং ভেজা কাপড় শরীরে জড়িয়ে রাখা। ১৪.বিনা ওজরে গ্লুকোজ জাতীয় ইনজেকশন (যা খাদ্যের চাহিদা মেটায়) নেয়া মাকরূহ।
১৫.এমন কাজ করা মাকরুহ যা দ্বারা রোজাদার নিতান্ত দুর্বল হয়ে পড়ে। যার কারণে রোজার প্রতি বিরক্তিভাব আসে। যেমনঃ রোজা রেখে প্রচণ্ড ভারী কাজ করা অথবা রোজা রেখে শিঙ্গা লাগানো/ রোজা রেখে রক্ত দান। সবগুলোর রেফারেন্স:ফাতাওয়া আলমগীরী ১/১৯৯-২০০, রদ্দুল মুহতার ৩/৩৯৯-৪০০। আল মুহিতুল বুরহানী ৩/৩৫৬
লেখক: মুফতি ও মুহাদ্দিস শেখ জনূরুদ্দীন রহ দারুল কুরআন মাদ্রাসা চৌধুরীপাড়া ঢাকা
-এটি