শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


শুরুর আগেই পূর্ণ তুরাগ তীরের ইজতেমার ময়দান

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মো: মোসাব্বির রাহমান, বিশেষ সংবাদদাতা- বিশ্ব ইজতেমার মূল পর্ব শুরুর আগেই শীত উপক্ষো করে গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ তীরের খিত্তায়-খিত্তায় জমায়েত হয়েছেন সারাদেশ থেকে আসা মুসল্লিরা, এসেছেন বিদেশিরাও।

আয়োজকরা জানিয়েছে, বুধবার ভোর থেকেই ট্রেন, বাস, ট্রাক, নৌকা, প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাসে করে হাজার হাজার মানুষ ময়দানে ঢুকতে শুরু করেন। সন্ধ্যার মধ্যেই জেলার জন্য নির্ধারিত প্যান্ডেলের ভেতরে তারা অবস্থান নেন। মানুষের সমাগম অব্যাহত আছে।

কোভিড মহামারীর কারণে টানা দুই বছর বন্ধ থাকার পর বৃহস্পতিবার বাদ ফজর আ’ম বয়ান শুরু হলেও প্রথম পর্বের ইজতেমার মূল পর্ব শুরু হবে শুক্রবার থেকে। রোববার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে তা শেষ হবে। সম্মিলনে আসা মানুষ এই তিনদিন সেখানে অবস্থান নিয়ে বয়ান শোনা ও ইবাগত-বন্দেগিতে মশগুল থাকবেন।

প্রায় এক বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিশাল মাঠকে বাঁশের খুঁটির উপর চটের ছাউনি দিয়ে প্রস্তুত করা হয়েছে। বয়ান মঞ্চ করা হয়েছে ইজতেমা মাঠের পশ্চিম-উত্তরের মাঝ বরাবর। বয়ান শোনার জন্য লাগানো হয়েছে বিশেষ ছাতা মাইক। বয়ান ও দোয়া মঞ্চ ছাড়া নামাজের মিম্বরও তৈরি করা হয়েছে আলাদাভাবে।

নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরাও ময়দানের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে দায়িত্ব পালনে ব্যস্ত সময় পার করছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় ১০ হাজার সদস্য ইজতেমা ময়দান ছাড়াও আশপাশের এলাকার নিরাপত্তা বিধান করবেন। অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে এবার সাইবার নিরাপত্তার বিষয়টিও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যুক্ত করেছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন আশা প্রকাশ করেছেন, সকলেই একে অপরকে সহযোগিতার মধ্য দিয়ে এই ধর্মীয় সম্মিলনের কাজ সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে শেষ করবেন।

বিদেশ থেকে আসা অতিথিরা আনুষ্ঠানিকতা শেষে ইজতেমাস্থল ত্যাগ করে হাজী ক্যাম্পে অবস্থান করবেন। সেখান থেকে তারা নিজ নিজ গন্তব্যে যাবেন।

বিশ্ব ইজতেমার আয়োজক কমিটির মরুব্বি প্রকৌশলী আব্দুন নূর আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে বলেন, "পুরো ময়দান এরই মধ্যে পূর্ণ হয়ে গেছে। শুক্রবার থেকে মূল পর্ব শুরু হলেও বৃহস্পতিবার বাদ ফজর থেকে শুরু হবে আ’ম বয়ান। প্রায় দুই মাস ধরে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে তাবলিগ জামাতের অনুসারীরা মাঠের প্রস্তুতির কাজ শেষ করেছেন।"

ইজতেমায় আসা বিদেশি অতিথিদের জন্য মাঠের উত্তর-পশ্চিম কোণে আধুনিক সুবিধা সম্বলিত আলাদা থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এরই মধ্যে যারা এসেছেন তারা সেখানে অবস্থান নিয়েছেন।

পুরো ময়দান এলাকায় থাকছে গাজীপুর জেলা প্রশাসন, গাজীপুর সিটি করপোরেশন, পুলিশ ও র‌্যাবের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ। বুধবার সকালে ইজতেমা ময়দানে দুটি গভীর নলকূপের উদ্বোধন করেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল।

গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান বলেন, জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দল অনিয়মের বিচারে থাকবে টঙ্গীজুড়ে।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আলমগীর মিয়া জানান, এখানে ৩১টি টয়লেট বিল্ডিং করা হয়েছে। এক সঙ্গে নয় হাজার মানুষ তা ব্যবহার করতে পারবেন।

বিআরটিসি ও রেলওয়ে ইজতেমায় আসা-যাওয়ার জন্য বিশেষ সার্ভিসের পদক্ষেপ নিয়েছে। ময়দানের পশ্চিম পাশে তুরাগ নদীর উপর সেনাবাহিনী পাঁচটি ভাসমান সেতু নির্মাণ করেছে।

গাজীপুর মহানগর পুলিশের কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম জানান, ময়দান ও আশপাশে ১৪টি নিয়ন্ত্রণকক্ষ রয়েছে পুলিশের। র‌্যাবের হেলিকপ্টারে টহল থাকবে। এ ছাড়া ডগ স্কোয়াড টিম, মোবাইল পেট্রোল টিম, বোম ডিসপোজল টিম থাকবে।

শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, "ইজতেমায় আসা মানুষকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা দিতে পাঁচটি ক্যাম্প স্থাপনের কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। এখান থেকে ২৪ ঘণ্টাই ওষুধ ও সেবা পাওয়া যাবে। হাসপাতালের সাতটি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল এখানে মোতায়েন থাকবে।"

-এসআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ