আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: পবিত্র রমজান মাস সামনে রেখে সাতটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মজুদ, সরবরাহ ও মূল্য স্বাভাবিক রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এ তথ্য জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ভোক্তাদের উদ্দেশে বলেছেন, পবিত্র রমজান শুরু হওয়ার আগে একসঙ্গে বেশি পরিমাণ পণ্য কেনার প্রয়োজন নেই। তিনি বলেন, এ বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে দেশের প্রচারমাধ্যমগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।,
গতকাল বুধবার সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনাসংক্রান্ত টাস্কফোর্স কমিটির পঞ্চম সভা শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে টিপু মুনশি এসব কথা বলেন।,
ভোক্তাদের উদ্দেশে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এক মাসেরটা রেগুলার কিনলে এই চাপটা হয় না। এটা কিন্তু একটা বড় ধরনের ঝামেলা। আমরা সব সময় লক্ষ করছি, রমজানের প্রথম সাত দিনেই অন্য রকম ক্রাইসিস। কারণ রমজানের আগে থেকে সাত দিনে কিনে নিল; তারপর সাত-আট দিন চলে যায়। তখন দেখা যায় স্বাভাবিক হয়ে আসছে। ’ সাংবাদিকদের উদ্দেশে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এটা একটু আপনারা কাইন্ডলি বলুন, উনারা (ভোক্তারা) যেন তড়িঘড়ি না করেন। রমজান মাসের আগেই সব কিনে নিতে হবে? রমজান মাসে আমার ৩০ কেজি পেঁয়াজ লাগবে, একবারেই কিনে ফেলি! সেখানে তো সমস্যা হবেই। ’,
সরকারের নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সব মানুষ যদি এক দিনেই মনে করে সব কিনে ফেলবে, তাহলে কিভাবে হবে? সাপ্লাইটা তো ঠিক রাখতে হবে। এটা একটা পজিটিভ মেন্টালিটি যে হুট করে কেনার দরকার নেই। এটা সারা মাস ধরেই পাওয়া যাবে। ’
আসন্ন রমজান মাস ঘিরে সাতটি পণ্য আমদানিতে ডলার কোটা সংরক্ষণ করা হবে বলে জানিয়েছেন টিপু মুনশি। তিনি বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে সরকার ব্যাংকগুলোকে নির্দিষ্ট পরিমাণ ডলার কোটা সংরক্ষণের পরামর্শ দেবে।,
তিনি জানান, বিগত বছরগুলোর অভিজ্ঞতার আলোকে চাহিদা মোতাবেক ভোজ্য তেল, চিনি, মসুর ডাল, ছোলা, পেঁয়াজ, খেজুর, চাল-গমের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।,
বাণিজ্যমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান গতকাল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মৌলিক পণ্যের সরবরাহ, মজুদ ও মূল্যের মাত্রা জানতে বৈঠক করেন। পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিনিয়র বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, প্রয়োজনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ব্যাংকগুলোতে নোট পাঠাবে, যাতে ব্যবসায়ীরা ঋণপত্র না খুলে পণ্য আমদানি করতে পারেন।,
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, চলমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে আমদানিনির্ভর পণ্যগুলো আমদানিতে এলসি খোলার ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা হচ্ছে। বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কাজ করছে।
টিপু মুনশি বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে এলসি খোলার সুবিধার্থে নির্দিষ্ট পরিমাণ ডলার রাখার জন্য ব্যবসায়ীরা প্রস্তাব দিয়েছেন। অনেক ব্যবসায়ী চিনির ওপর আরোপিত ট্যাক্স ও ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। দেশের মানুষের সুবিধার জন্য বিষয়গুলো নিয়ে সরকার সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে।,
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, দেশের মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও স্বাভাবিক মূল্য নিশ্চিত করতে সরকার সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। পণ্যের সঠিক মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে সতর্ক হতে হবে। যাতে ন্যায়সংগত মূল্য নিশ্চিত করা যায়। সরকার সার্বিক বিষয়ে অবগত আছে, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে এলসি খোলাসহ সব ধরনের সহযোগিতা সরকার দেবে। সব ব্যবসায়ীকে সততার সঙ্গে সঠিক ব্যবসা করতে হবে।,
কেএল/